শিরোনাম

কুড়িগ্রামে ট্রেনের টিকিট কালোবাজারি, আটক ২


।। নিউজ ডেস্ক ।।
পরিবারের সঙ্গে ঈদ করতে কুড়িগ্রামে এসেছিলেন হাজার হাজার মানুষ। এখন কর্মস্থল ঢাকাসহ বিভিন্ন স্থানে ফেরার জন্য ভোগান্তিতে পড়েছেন তারা। সড়ক পথের চেয়ে কম সময়ে, নিরাপদ এবং সাশ্রয়ী যাত্রায় আন্তঃনগর ট্রেন ভরসা হলেও এর টিকিট এখন সোনার হরিণ।

কুড়িগ্রাম থেকে ঢাকাগামী আন্তঃনগর ট্রেন কুড়িগ্রাম এক্সপ্রেস এবং রংপুর থেকে ঢাকাগামী রংপুর এক্সপ্রেসের টিকিট আগামী সোমবার (৯ মে) পর্যন্ত সব বিক্রি হয়ে গেছে। কাউন্টারে এবং অনলাইনে কোনো টিকিট নেই। এ অবস্থায় ভোগান্তিতে পড়েছেন ঢাকাফেরৎ যাত্রীরা। ছুটি শেষে নির্দিষ্ট সময়ে কর্মস্থলে পৌঁছানো নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন তারা।

এই পরিস্থিতিতে ঈদের পরদিন গতকাল বুধবার সাপ্তাহিক বন্ধের পর কুড়িগ্রাম এক্সপ্রেস বৃহস্পতিবার সঠিক সময়ে সকাল সোয়া ৭টায় ঢাকার উদ্দেশে ছেড়ে গেছে। এছাড়া বুধবার রাত পৌনে ৮টার দিকে নির্দিষ্ট ৪০ জন যাত্রী নিয়ে শাটল ট্রেন কাউনিয়ায় গিয়ে রংপুর এক্সপ্রেসে ওঠার জন্য সংযোগ দিয়েছে বলে জানিয়েছেন রেলওয়ের কুড়িগ্রাম স্টেশন মাস্টার শামসুজ্জোহা।

এদিকে টিকিট কালোবাজারির অভিযোগ উঠেছে। কালোবাজারে অতিরিক্ত মূল্যে টিকিট বিক্রির সময় দুইজনকে হাতেনাতে আটক করেছে ডিবি পুলিশ।

আজ বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে কুড়িগ্রাম রেলওয়ে স্টেশনে ৯৭২ টাকা মূল্যের ঢাকা যাওয়ার দুটি এসি চেয়ারের টিকিট ১ হাজার ৩০০ টাকা এবং ১ হাজার ২০০ টাকা মূল্যে বিক্রির সময় স্টেশন লাগোয়া সদর উপজেলার বেলগাছা ইউনিয়নের কালে গ্রামের রফিকুল ইসলামের পুত্র মিলন মিয়াকে (২৫) আটক করা হয়। এছাড়া স্টেশনের সামনে অনলাইনে চড়া মূল্যে টিকিট বিক্রির সময় মাহি ট্রেডার্স নামের কম্পিউটারের দোকানের মালিক আহসান হাবীবকে (২৬) আটক করা হয়েছে। আটককৃত আহসান হাবীব কালে গ্রামের আব্দুল মান্নানের পুত্র বলে নিশ্চিত করেছেন ডিবি পুলিশের অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. আশিকুর রহমান পিপিএম।

তিনি আরও জানান, আটককৃতদের জিজ্ঞাসাবাদসহ তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের প্রক্রিয়া চলছে।

জেলা রেল-নৌ যোগাযোগ ও পরিবেশ উন্নয়ন গণকমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক খন্দকার আরিফ জানান, কুড়িগ্রাম জেলার মানুষের নিরাপদ ও সাশ্রয়ী মূল্যে ঢাকা যাতায়াত নিশ্চিত করার জন্য কুড়িগ্রাম এক্সপ্রেস চালু এবং শাটল ট্রেনের মাধ্যমে রংপুর এক্সপ্রেসে ওঠার ব্যবস্থা করা হয়েছে। কিন্তু চাহিদার চেয়ে টিকিটের বরাদ্দ একেবারে অপ্রতুল। তাছাড়া অধিকাংশ টিকিট অনলাইনে বিক্রির ব্যবস্থা থাকায় সাধারণ মানুষ অজ্ঞতার কারণে এ সুযোগ নিতে পারছেন না। ফলে এখানকার মানুষ এই ট্রেনে যাত্রার সুযোগ পুরোপুরিভাবে গ্রহণ করতে পারছেন না।

কুড়িগ্রাম রেলওয়ে স্টেশনের বুকিং সহকারী মনিরুজ্জামান লিটন জানান, কুড়িগ্রাম এক্সপ্রেসে এসি সিট ৩৩টি, এসি চেয়ার ১১০টি এবং শোভন চেয়ার ৫১০টি, মোট ৬৫৪টি আসন রয়েছে। এরমধ্যে কুড়িগ্রাম থেকে ঢাকা পর্যন্ত এসি সিট ১২টি বরাদ্দ রয়েছে। যার মধ্যে কাউন্টার ৫টি এবং অনলাইনে ৭টি বিক্রি করা হচ্ছে। একইভাবে এসি চেয়ার ২০টির মধ্যে ৭টি কাউন্টারে ও ১৩টি অনলাইনে এবং শোভন চেয়ার ১১০টির মধ্যে ৫০টি কাউন্টারে ও ৬০টি অনলাইনে বিক্রি করা হচ্ছে।

তিনি আরও জানান, ট্রেনটি কুড়িগ্রাম থেকে ঢাকার কমলাপুর স্টেশনে পৌঁছানো পর্যন্ত কাউনিয়া, রংপুর, বদরগঞ্জ, পার্বতীপুর, জয়পুরহাট, সান্তাহার, মাধনগর, নাটোর ও বিমানবন্দর স্টেশনে যাত্রাবিরতি দিয়ে থাকে।

এছাড়া রংপুর এক্সপ্রেসে যাত্রার জন্য কুড়িগ্রামে ৫টি এসি চেয়ার সিটের মধ্যে ৩টি কাউন্টারে ও ২টি অনলাইনে এবং ৩৫টি শোভন চেয়ার সিটের মধ্যে ১৮টি কাউন্টারে ও ১৭টি অনলাইনে বিক্রির ব্যবস্থা রয়েছে।
এ প্রসঙ্গে সদর থানার ওসি খান মো. শাহরিয়ার জানিয়েছেন, এবার এনআইডি কার্ডের ফটোকপি জমা দিয়ে একজন ৪টি পর্যন্ত টিকিট নিতে পারছেন। ফলে কাউন্টারে বিক্রির জন্য প্রতিদিনের বরাদ্দের কুড়িগ্রাম এক্সপ্রেসের বিভিন্ন শ্রেণির ৬২টি এবং রংপুর এক্সপ্রেসের ২১টি টিকিট মুহূর্তে শেষ হয়ে যাচ্ছে। এতে শৃঙ্খলা বিঘ্নিত হচ্ছে। তাই শৃঙ্খলা রক্ষার পাশাপাশি টিকিট কালোবাজারি রুখতে স্টেশনে গত ১ মে থেকে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।

তিনি আরও জানান, বিকেলে পুলিশ সুপার সৈয়দা জান্নাত আরা কুড়িগ্রাম রেলওয়ে স্টেশন পরিদর্শন করেছেন। এ সময় জেলা পুলিশের অন্যান্য কর্মকর্তাগণ উপস্থিত ছিলেন।

সূত্রঃ সমকাল


About the Author

RailNewsBD
রেল নিউজ বিডি (Rail News BD) বাংলাদেশের রেলের উপর একটি তথ্য ও সংবাদ ভিত্তিক ওয়েব পোর্টাল।

Comments are closed.