সমুদ্র হক :প্রতিক্ষার আর শেষ হয় না। কোথায় জট পেকেছে তাও জানা যায় না। এক বছর ধরে বলা হচ্ছে ‘শীঘ্রই’ শুরু হচ্ছে উত্তরবঙ্গের সঙ্গে রাজধানীর দ্রুত যোগাযোগের বগুড়া-সিরাজগঞ্জ ডুয়েল গেজ রেললাইন নির্মাণ কাজ। গত বছর ২৯ অক্টোবর জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় প্রকল্পটি অনুমোদিত হয়। ব্যয়ের প্রাক্কলন ৫ হাজার ৫শ’ ৮০ কোটি টাকা। ভারতীয় লেটার অব ক্রেডিটের (এলওসি) আওতায় প্রকল্পটি বাস্তবায়ন হওয়ার কথা, জানিয়েছে রেলপথ বিভাগের উর্ধতন সূত্র। আশা করা হয়েছে পরামর্শক নিয়োগের পর নির্মাণ শুরু হয়ে ২০২১ সালের মধ্যে নতুন রেলপথে উত্তরবঙ্গ থেকে খুব কম সময়ে রাজধানী পৌঁছা যাবে।
বর্তমানে উত্তরঙ্গের সঙ্গে রাজধানী ঢাকার যোগাযোগের আন্তঃনগর ট্রেনগুলো সান্তাহার, নাটোর, ঈশ্বরদী হয়ে চলাচল করে। দূরত্ব ৪শ’ থেকে ৪শ’ ৫০ কিলোমটার। যার প্রায় দেড়শ’ কিলোমিটারই ঘুরপথ। সময় লাগে ১২ থেকে ১৪ ঘণ্টা (কখনও আরও বেশি)। বগুড়া-সিরাজগঞ্জ নতুন রেলপথে দূরত্ব ও সময় প্রায় অর্থেকে নেমে আসবে।
সূত্র জানায়, একনেক অনুমোদিত ৮৬ দশমিক ৫১ কিলোমিটার সরাসরি এবং ১৬ কিলোমিটার লুপসহ মোট ১শ’ ২ দশমিক ৮১ কিলোমিটার মিশ্র গেজ (ডুয়েল গেজ) রেলপথ নির্মিত হবে। মূল রেললাইন হবে বিদ্যমান বগুড়া রেল স্টেশনের পশ্চিমে ছোট বেলাইল থেকে সিরাজগঞ্জের এম মনসুর আলী রেল স্টেশন পর্যন্ত ৮৬ দশমিক ৫১ কিলোমিটার। এই পথে বগুড়া,নওগাঁ, রংপুর, লালমনিরহাট জেলার যাত্রীরা আন্তঃনগর ট্রেনে ঢাকা পৌঁছবে। তার সঙ্গে বগুড়ার কাহালু রেল স্টেশন থেকে রানীরহাট পর্যন্ত ১৬ দশমিক ৩০ কিলোমিটার কানেকটিভিটি লুপ রেলপথ হবে। লুপ লাইনের যৌক্তিকতা হলো : সান্তাহার থেকে ঢাকাগামী এবং ঢাকা থেকে ছেড়ে যাওয়া সান্তাহার ও পার্বতীপুর হয়ে দিনাজপুর, নীলফামারী, কুড়িগ্রাম, চিলাহাটিগামী আন্তঃনগর ট্রেনগুলো বগুড়া স্টেশন এড়িয়ে সরাসরি চলাচল করবে। এই দুই রেলপথ মিলিত হওয়ার কারণে বগুড়া নগরী থেকে প্রায় ৮ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে রানীরহাটে রেল জংশন স্টেশন নির্মিত হবে। নতুন আধুনিকায়ন প্রকল্পে দশটি নতুন রেলস্টেশন নির্মিত হবে।
প্রকল্পে বগুড়া সীমানায় ৫৪ কিলোমিটার রেল লাইনের জন্য ৫শ’৬০ একর ভূমি এবং সিরাজগঞ্জ সীমানায় ৩২ কিলোমিটার রেলপথের জন্য ৪শ’ একর সহ মোট ৯৬০ একর ভূমি অধিগ্রহণের প্রস্তাব করা হয়েছে। একনেক বৈঠকে প্রকল্প অনুমোদিত হওয়ার পরই বলা হয়েছিল জেলা প্রশাসকগণের কাছে রেল লাইনের জন্য ভূমি অধিগ্রহণের নির্দেশ দেয়া হবে। ভূমি অধিগ্রহণের নোটিস এখনও আসেনি। প্রকল্পে রেলসেতু, রেলক্রসিং, সর্বাধুনিক সিগনালিং, কম্পিউটার হটলাইন ও কন্ট্রোল অনলাইন টিকেটিং সিস্টেমসহ বগুড়া থেকে সিরাজগঞ্জ পর্যন্ত দশটি নতুন রেলস্টেশন নির্মিত হবে। যার মধ্যে আছে : শেরপুর, চান্দাইকোনা, রায়গঞ্জ, কিষানদিয়া, সদানন্দপুর প্রভৃতি।
সুত্র:জনকন্ঠ, ২১ অক্টোবর ২০১৯