শিরোনাম

বঙ্গবন্ধু রেল সেতুর নির্মাণ কাজ চলেছে দ্রুত গতিতে

BSMRB Rail bridge

।। নিউজ ডেস্ক ।।
করোনাকালেও থেমে নেই বঙ্গবন্ধু রেল সেতুর নির্মাণকাজ। যমুনার বুকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব রেলওয়ে সেতু নির্মাণকাজ দ্রুত এগিয়ে চলেছে। ইতিমধ্যে কয়েকটি পিয়ারের পাইলিং কাজ শেষ হয়েছে।

দিনরাত সমান তালে চলছে এই সেতু নির্মাণের কাজ। যমুনার ওপর এই রেলসেতুটি নির্মাণ হলে একদিকে যেমন উত্তরবঙ্গের যোগাযোগ খাতে নবদিগন্তের সূচনা হবে, অন্যদিকে খুলবে অপার অর্থনৈতিক সম্ভাবনার দ্বার।

দেশের মেগা প্রকল্পগুলোর মধ্যে অন্যতম বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব রেলওয়ে সেতু। বঙ্গবন্ধু যমুনা সেতুর ৩০০ মিটার উজানে সিরাজগঞ্জ ও টাঙ্গাইলে সেতুর দুই প্রান্তেই দিনরাত চলছে এই সেতুর নির্মাণকাজ।

৪.৮০ কিলোমিটার দীর্ঘ ডুয়েল গেজ ডাবল ট্র্যাকসহ এ রেল সেতুর মোট ৫০টি পিয়ারের মধ্যে ইতিমধ্যে আটটির পাইলিংয়ের কাজ শেষ হয়েছে। আরো কয়েকটি পিয়ারের পাইলিংয়ের কাজ সমাপ্তের পথে। জাপানের অর্থায়ন ও তাদের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান এ সেতু নির্মাণে কাজ করছে।

রেল সেতুটি বাস্তবায়িত হলে বিদেশ থেকে দেশে আসা মালবাহী ট্রেন রাজধানীর সঙ্গে সরাসরি চলাচল করতে পারবে। এতে আমদানি-রপ্তানি খরচ কমে যাওয়াসহ বঙ্গবন্ধু সেতু ও মহাসড়কের ওপর চাপ কমবে।

বর্তমানে বঙ্গবন্ধু সেতুর ওপর দিয়ে সমান্তরালভাবে গাড়ি ও রেল চলছে, যা অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ। রেল সেতুটি নির্মিত হলে বঙ্গবন্ধু সেতুর ঝুঁকিও হ্রাস পাবে। একই সঙ্গে উত্তরবঙ্গ থেকে পণ্য পরিবহন ব্যবস্থা সহজ হবে, কমবে পরিবহন খরচ যা এই অঞ্চলের অর্থনৈতিক পরিস্থিতি ও সামাজিক জীবনযাত্রায় ইতিবাচক পরিবর্তন আনবে।

দেশের সামগ্রিক অর্থনীতিতেও এই রেল সেতুটি গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখবে বলে মনে করছেন সচেতন মহল। রেল বিভাগের তথ্য মতে, ডুয়েল গেজ ডাবল-ট্র্যাকের এ সেতুটি হবে দেশের সবচেয়ে বড় রেল সেতু। এটি রাজধানীর সঙ্গে দেশের উত্তর ও পশ্চিমাঞ্চলের রেল যোগাযোগ ব্যবস্থা আরো সহজ ও উন্নত করবে। এছাড়া ট্রেন শিডিউল বিপর্যয় কমাতেও এ সেতু সহায়তা করবে বলে রেল বিভাগ কর্তৃপক্ষ মনে করছে।

বঙ্গবন্ধু সেতু ও রেল সেতুর পশ্চিমেই গড়ে উঠছে সিরাজগঞ্জ ইকোনমিক জোন ও বিসিক শিল্প পার্ক। এখানে উত্তর জনপদের ৭ লাখ মানুষের কর্মসংস্থান হবে। ইতিমধ্যে এসব অঞ্চলে শিল্প কারখানা স্থাপনে আগ্রহ দেখিয়েছে দেশি-বিদেশি শিল্প উদ্যোক্তারা।

বঙ্গবন্ধু রেল সেতু নির্মাণ হলে এই শিল্পাঞ্চল থেকে রেলপথ, সড়কপথ, স্থলপথ ব্যবহার করে বিশ্বের যে কোনো দেশে পণ্য পরিবহন সহজ হবে। একই সঙ্গে উত্তরবঙ্গে উৎপাদিত কৃষিপণ্যসহ বিভিন্ন পণ্যসামগ্রী পরিবহনও সহজ হবে বলে মনে করছেন ব্যবসায়ী মহল। এতে এই জনপদের মানুষের ভাগ্য পরিবর্তনের অপার সম্ভাবনা দেখছেন তারা।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব রেলওয়ে সেতুর প্রকল্প পরিচালক আল ফাত্তাহ মো. মাসুদুর রহমান বলেন, বর্তমানে বঙ্গবন্ধু সেতু দিয়ে ৩৮টি ট্রেন চলাচল করে। নতুন রেল সেতু নির্মাণ হলে ডাবল লাইনে দ্রুত গতিতে মালবাহীসহ ৬৮টি ট্রেন চলাচল করার পাশাপাশি বিভিন্ন দেশের সঙ্গে ট্রেন চলাচলের আন্তঃসংযোগ সৃষ্টি হবে। তিনি জানান, ইতিমধ্যে এ রেল সেতুর ৩৩ শতাংশ কাজ বাস্তবায়িত হয়েছে। আমরা দ্রুত গতিতে কাজ চালিয়ে যাচ্ছি।

২০২০ সালের ২৯ নভেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ১৬ হাজার ৭৮০ কোটি টাকা ব্যয়ে এ সেতুটির নির্মাণকাজের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। ২০২৪ সালের মধ্যে এ সেতুর নির্মাণকাজ শেষ হবে বলে আশা করা হচ্ছে।

প্রবীণ সাংবাদিক আব্দুল কুদ্দুস বলেন, আমাদের অনেক আন্দোলনের ফলে শহর থেকে একটি ট্রেন চালু হয় রাজধানীর সঙ্গে। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব রেল সেতুটি চালু হলে সিরাজগঞ্জের সাথে বগুড়া, রংপুর, দিনাজপুর রেল সংযোগ শুরু হবে। আর এতে উত্তরবঙ্গের অর্থনীতিতে নতুন দিগন্ত উন্মোচিত হবে।

সেই সঙ্গে তিনি বলেন, সিরাজগঞ্জ রায়পুর স্টেশনকে জংশন করা হলে ট্রেন চলাচলসহ যাত্রীদের যাতায়াত আরো সহজ হবে।

সূত্রঃ ইত্তেফাক


1 Trackbacks & Pingbacks

  1. have a peek at this website

Comments are closed.