শিরোনাম

প্রসঙ্গ :রেলভাড়া বৃদ্ধি

প্রসঙ্গ :রেলভাড়া বৃদ্ধি

গ্রামে একটি কথা প্রচলিত আছে—বাঁধ না দিয়ে নদী সেচা। সারা জীবন সেচলেও নদীকে পানিমুক্ত করা যায় না যদি নির্দিষ্ট বাঁধ দেওয়া না হয়, সেই অর্থে কথাটি প্রচলিত। বাংলাদেশ রেলওয়ের একটি অসাধারণ দর্শন প্রচলিত আছে—‘রেল সেবা খাত লস হবেই’। কোনো প্রতিষ্ঠানকে যদি আগ বাড়িয়ে লস প্রতিষ্ঠান দর্শন চালু করলে চুরি করতে সহজ। রেলের ভাগ্যে তাই ঘটেছে। রেলের ভেতর ঘাপটি মেরে বসে থাকা চোরদের অপসারণ না করলে, যতোই ভাড়া বৃদ্ধি করে যাত্রীর পকেট কাটা হোক না কেন, রেল লাভবান হবে না কোনোদিনও। গ্রামের সেই কথা—বাঁধ না দিয়ে নদী সেচার মতো।

রেল বিভাগ নতুন করে রেলভাড়া বৃদ্ধির জন্য আগ্রহী হয়ে উঠেছে। ২৫ শতাংশ ভাড়া বৃদ্ধি করতে চাচ্ছে। এই সিদ্ধান্ত হলে এসিচেয়ারে ভাড়া বাড়বে রুটভেদে ৩৯ থেকে ৬৪ শতাংশ। দেশের ৯৫ শতাংশ মানুষ রেল ভ্রমণে আগ্রহী নিঃসন্দেহে। রেলকে যাত্রীবান্ধব করা গেলে রেলই হতে পারে বাংলাদেশের একমাত্র যাত্রীবাহী যোগাযোগ মাধ্যম। রেলের ভাড়া বৃদ্ধি করা হয় ধাপে ধাপে। বর্তমানে দেশে মাত্র ৫ শতাংশ রেলযাত্রী পাওয়া যেতে পারে বিনাটিকেটের, অন্য সবাই লাইনে দাঁড়িয়ে টিকেট সংগ্রহ করেই রেল ভ্রমণ করেন। তারপরও যদি রেল রাষ্ট্রীয় কোষাগারে লস প্রতিষ্ঠান খেতাবধারী হয়, তাহলে একজন রেলপ্রেমী হিসেবে নিতান্তই লজ্জাবোধ করি।

আরামদায়ক, নিরাপদ ও স্বল্প খরচে ভ্রমণের একমাত্র বাহন রেল। সেবার মান নিশ্চিত করা গেলে যাত্রীর অভাব হবে না এই সরকারি যোগাযোগ মাধ্যমটির। যেখানে রেলের সেবা নিয়ে যাত্রীরা হতাশ, যেখানে রেলের অনিয়ম চরম পর্যায়ে, সেখানে রেলভাড়া বৃদ্ধি যাত্রীদের রেলবিমুখ করারই প্রয়াস কি না তা ভাবার বিষয় বৈকি।

মির্জা আবু হেনা কায়সার টিপু

উত্তরা, ঢাকা
সুত্র:ইত্তেফাক,১৭ এপ্রিল, ২০১৯


About the Author

RailNewsBD
রেল নিউজ বিডি (Rail News BD) বাংলাদেশের রেলের উপর একটি তথ্য ও সংবাদ ভিত্তিক ওয়েব পোর্টাল।

Comments are closed.