শিরোনাম

দ্রুতগতিতে চলছে ঢাকা চট্টগ্রাম ৭২ কিমি. ডাবল রেললাইনের কাজ

দ্রুতগতিতে চলছে ঢাকা চট্টগ্রাম ৭২ কিমি. ডাবল রেললাইনের কাজ

শিপন হাবীব: ঢাকা-চট্টগ্রাম রেলপথে ৭২ কিলোমিটার ডাবল লাইন নির্মাণের কাজ দ্রুতগতিতে এগিয়ে চলছে। এ অংশের কাজ দ্রুত সম্পন্ন হলে নির্মিত ১৩৫ কিলোমিটার ডাবল লাইনের সুফল মিলবে। ৭২ কিলোমিটার ডাবল লাইন নির্মাণকাজ সমাপ্ত হলে ঢাকা-চট্টগ্রাম রেলপথের পুরোটাই (৩২৫ কিলোমিটার) ডাবল লাইনে উন্নীত হবে। ফলে ঢাকা-চট্টগ্রাম রেলপথে যাতায়াতে সময় কমবে প্রায় ২ ঘণ্টা। বর্তমানে এ পথে সোয়া ৫ ঘণ্টায় ট্রেনে পৌঁছানো যাচ্ছে। পুরো পথ ডাবল লাইন হলে মাত্র সোয়া ৩ ঘণ্টায় ঢাকা-চট্টগ্রাম ট্রেন ভ্রমণ সম্ভব হবে। একই সঙ্গে একাধিক সরাসরি ট্রেনসহ আন্তঃনগর ট্রেন সার্ভিস চালু করা যাবে। এজন্য প্রকল্প সমাপ্ত হওয়ার সময় ২০২০ সালের জুন পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে। প্রকল্পের বাস্তবায়নকারী ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান হচ্ছে সিটিএম জয়েন্ট ভেঞ্চার গ্রুপ।

এ বিষয়ে রেলপথমন্ত্রী মো. মুজিবুল হক বলেন, বর্তমান সরকারের আমলে রেলওয়েতে ব্যাপক উন্নয়ন হচ্ছে। চলমান সব প্রকল্পের কাজ সমাপ্ত হলে রেলওয়েতে আমূল পরিবর্তন আসবে। আখাউড়া-লাকসাম ৭২ কিলোমিটার ডাবল লাইনের কাজ যথাসময়ে সমাপ্ত হবে। পুরো লাইন ডাবল হলে এ পথে দ্রুতগতির ট্রেনসহ বেশ কয়েকটি আন্তঃনগর ট্রেনও চালানো সম্ভব হবে। একই সঙ্গে এ পথে অত্যাধুনিক বুলেট ট্রেন চালু হবে। বুলেট ট্রেনে ২ ঘণ্টা থেকে সোয়া ২ ঘণ্টার মধ্যে ঢাকা-চট্টগ্রামে চলাচল করা যাবে। দেশের সব রেললাইনকে ডাবল লাইনে উন্নীত করা হবে জানিয়ে তিনি বলেন, সব জেলায় রেলওয়ের নেটওয়ার্কের আওতায় আনা হবে।

রেলপথ মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা যায়, দ্রুতগতির ট্রেন কিংবা বুলেট ট্রেন চালুর উপযুক্ত পথ হচ্ছে ঢাকা-চট্টগ্রাম রেলপথ। বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার পরপরই পুরো এ লাইনকে ডাবল লাইনে উন্নীত করার প্রকল্প গ্রহণ করা হয়। ঢাকা-চট্টগ্রাম রেলপথের ৩২৫ কিলোমিটারের মধ্যে ১১৮ কিলোমিটার ডাবল লাইন ছিল। পরে ২০১১ সালে টঙ্গী-ভৈরববাজার পথে ৬৪ কিলোমিটার ও লাকসাম-টিনকি আস্তানা পর্যন্ত ৭১ কিলোমিটার ডাবল লাইন নির্মাণ করা হয়।

এদিকে আখাউড়া-লাকসাম পর্যন্ত ৭২ কিলোমিটার ডাবল লাইন প্রকল্প সরেজমিন ঘুরে দেখা যায়, দ্রুততার সঙ্গে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে প্রকল্পের কাজ শেষ করতে ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান কাজ করছে। বিদেশ থেকে আমদানি করা অত্যাধুনিক মেশিন ও যন্ত্রাংশের সাহায্যে প্রকল্পের কাজ চলছে। ডাবল লাইন নির্মাণের পাশাপাশি এ পথের বিদ্যমান লাইনেও ডুয়েল গেজে রূপান্তরের কাজ সমান্তরালে চলছে। নতুন ও বিদ্যমান লাইনে ১২টি মেজর ব্রিজ ও ৪৭টি মাইনর ব্রিজ নির্মাণ করা হবে। ১১টি রেলওয়ে স্টেশন ভবন পুনর্নির্মাণ করা হচ্ছে।

‘আখাউড়া থেকে লাকসাম পর্যন্ত ডুয়েল গেজ ডাবল রেললাইন নির্মাণ ও বিদ্যমান রেললাইনকে ডুয়েল গেজে রূপান্তর’ শীর্ষক প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক ডিএন মজুমদার যুগান্তরকে বলেন, এ প্রকল্প যথাসময়ের মধ্যে সমাপ্ত করতে ব্যাপক চাপ রয়েছে। এ প্রকল্পের নির্মাণকাজের চুক্তি ২০১৬ সালের ১৫ জুন সম্পন্ন হলে ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান একই বছরের ১ নভেম্বর বাস্তবায়ন কাজ শুরু করে। ৬ হাজার ৫০৪ কোটি ৫৪ লাখ ৫০ হাজার টাকা ব্যয়ে এ প্রকল্পটির কাজ সমাপ্ত হবে ২০২০ সালের জুনে। তিনি বলেন, এ প্রকল্পটি জয়েন্ট ভেঞ্চার গ্রুপের মাধ্যমে কাজ করছে। দেশীয় ২টি ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান ম্যাক্স ও তমার সঙ্গে চীনের একটি ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান রয়েছে। এরই মধ্যে প্রকল্পের প্রায় ৫২ শতাংশ কাজ সম্পন্ন হয়েছে।

রেলওয়ে মহাপরিচালক মো. আমজাদ হোসেন বলেন, ঢাকা-চট্টগ্রাম রেলপথের মাত্র ৭২ কিলোমিটার পথ ডাবল লাইন করার বাকি রয়েছে। এ প্রকল্পটি সমাপ্ত হলেই এ পথে নতুন ট্রেন চালানোসহ দ্রুতগতির ট্রেন চালানো সম্ভব হবে। এটি আমাদের স্বপ্ন ছিল, এ প্রকল্পটি সমাপ্ত হলে যাত্রীসেবা বাড়ানোর পাশাপাশি প্রায় দ্বিগুণ যাত্রী বহন করা সম্ভব হবে। একই সঙ্গে চলমান মালবাহী ট্রেনের সংখ্যা দ্বিগুণ করা যাবে। আশা করছি, এ প্রকল্প শেষ হতেই রেলওয়ে বহরে নতুন ইঞ্জিন ও যাত্রীবাহী বগি সংযুক্ত হবে। আন্তর্জাতিক রেল নেটওয়ার্ক ট্রান্স এশিয়ান রেলওয়ের (টিএআর) সঙ্গে যুক্ত হতে দোহাজারী-রামু-কক্সবাজার রেলপথ নির্মাণকাজ দ্রুত করা হচ্ছে।

সুত্র:যুগান্তর, ২৭ আগস্ট ২০১৮


About the Author

RailNewsBD
রেল নিউজ বিডি (Rail News BD) বাংলাদেশের রেলের উপর একটি তথ্য ও সংবাদ ভিত্তিক ওয়েব পোর্টাল।

Comments are closed.