শিরোনাম

রেলের উন্নয়নে দেশে অর্থনৈতিক বিপ্লবের অপার সম্ভাবনা

রেলের উন্নয়নে দেশে অর্থনৈতিক বিপ্লবের অপার সম্ভাবনা

দেলওয়ার হোসেন, সুইডেন :
আর নয় মহাসড়ক এবার রেল ও নৌপথে নজর দিতে হবে। বলেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। দেশের একজন কল্যাণকামী ও দূরদর্শী শাসকের মুখ থেকে এমন পরিকল্পনা ও প্রত্যয়ের কথা শোনার জন্য যেন আমি মুখিয়ে ছিলাম সেই কিশোর বয়স থেকেই। রেল পরিবারের একজন সদস্য এবং এর সঙ্গে আমার নাড়ির টানের কারণেই দেশে একটি অত্যাধুনিক রেল ব্যবস্থা চালুর স্বপ্নটা আমাকে পেয়ে বসেছিল স্বাধীনতা-উত্তরকাল থেকে, এর পীড়াদায়ক দুরবস্থার কারণে।

১৯৬৮ সালে প্রাইমারীর ছাত্রাবস্থায় বাবা-মার সঙ্গে প্রথম শ্রেণীর আরামদায়ক রিজার্ভেশন সেলুনে সৈয়দপুর থেকে চট্টগ্রাম পাহাড়তলী প্রথম ট্রেন যাত্রার যে মনোমুগ্ধকর স্মৃতিটি আজও আমার স্নায়ুতে সুখের দ্যোতনা জাগায় তা আর কখনও ঘটেনি জীবনে, স্বাধীনতা-উত্তরকাল থেকে আজ পর্যন্ত।

আশির দশকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সময় সৈয়দপুর থেকে ঢাকায় ট্রেনে যাওয়া-আসার সময় বাহাদুরাবাদ-ফুলছুরি ঘাট পারাপারের যে বিড়ম্বনা পোহাতে হয়েছে, তার প্রেক্ষিতে আমি তখন থেকেই স্বপ্ন দেখতাম একটি অত্যাধুনিক রেল ব্যবস্থার। আমার এই স্বপ্নের কথা আমি তখন থেকেই বারবার লিখেছি গণমাধ্যমে। আশা ছিল জনবান্ধব উন্নয়নকামী সরকার বা একজন দূরদর্শী শাসক ক্ষমতায় এলে– আমার এ স্বপ্ন একদিন বাস্তবায়ন হবেই। সেই মাহেন্দ্রক্ষণ এলো এতদিনে। বাংলার আপামর জনগণের অকৃত্রিম ভালবাসায় সিক্ত নেত্রী শেখের বেটির মুখ দিয়ে যখন এ প্রত্যয় ব্যক্ত হয়েছে, তা দ্রুতই বাস্তবায়ন হবে বলে আমি বিশ্বাস করি।

বাংলাদেশে অতি সম্ভাবনাময় ও টেকসই যত লাভজনক খাত রয়েছে, তার মধ্যে রেল একটি। এর আগে কোন সরকারই বিষয়টিকে তেমনভাবে প্রাধান্য দেয়নি বললেই চলে। তাই এ পর্যন্ত এটি লোকসানের ভারে জর্জরিত হয়ে জাতির দুর্বহ বোঝায় পরিণত হয়েছে অথচ মনোযোগ দিলে এই একটি খাতই বাংলাদেশের ভাগ্য পরিবর্তন করে দিতে পারে।

১৭/১৮ কোটি মানুষের বাংলাদেশ- এই খাতটির জন্য একটি বিশাল বাজার। এর অর্ধেক ভোক্তা বা যাত্রী যা উত্তরোত্তর বৃদ্ধিপ্রাপ্ত হয়ে এর বাণিজ্যিক (যাত্রী, সেবা ও পণ্য পরিবহন) সম্ভাবনা একটি স্বর্ণ দুয়ার খুলে দিতে পারে।

এককালে আমাদের বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনকারী রফতানি পণ্য সোনালি আঁশ পাটের বৈদেশিক বাজার হাতছাড়া হয়েছে। পাটচাষ, পাটচাষী ও পাটকলগুলোর করুণ পরিণতির কথাও কারও অজানা নয়।

বর্তমানে বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম গার্মেন্টস রফতানিকারক দেশ হিসেবে আমরা নির্ভর করে বসে আছি এই গার্মেন্টস সেক্টরের ওপর। কিন্তু এই বৈদেশিক বাজারের স্থায়িত্ব কতকাল? কখনও যে তা পাটের পরিণতির দিকে যেতে পারে, সে আশঙ্কাও অমূলক নয় মোটেও।

দেশের বিদ্যমান চাহিদা, অফুরন্ত সম্ভাবনা, প্রয়োজন ও সঙ্কট মোকাবেলার লক্ষ্য মাথায় রেখে দেশীয় স্থায়ী ও টেকসই বাণিজ্যের বিশাল এবং তৈরি বাজারের কথা আমাদের ভাবতে হবে।

এর সঙ্গে কি শুধুই দেশের ভোক্তা চাহিদা পূরণ ও বাণিজ্য জড়িত? এর সেবা এবং আন্তর্জাতিকমানের প্রসারতা, ইমেজ ও আকর্ষণের বিষয়টিও কি বাদ দেয়া যায়, যখন নিকট প্রতিবেশী দেশগুলোর সঙ্গে রেল যোগাযোগ ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে বহির্বিশ্বের অবারিত দিগন্ত উন্মোচিত হতে যাচ্ছে কানেকটিভিটির থিওরিতে, তখন এর মানদন্ড নির্ধারণের জায়গাটিও উঠে আসবে তুঙ্গে। হবে বিশ্বমানের ট্রেন সার্ভিস। দেশের উন্নয়ন ও আধুনিকতায় যোগ হবে একটি স্বর্ণ পালক।

প্রথমেই আসা যাক যাত্রী সেবার কথায় ॥ ঘন জনবসতি ও বিপুল জনসংখ্যার বাংলাদেশে সড়ক ও মহাসড়ক যেমন অপ্রতুল, তেমনি পরিবহনের সংখ্যাও সীমিত পর্যায়ে। যদিও খালি চোখে এর সংখ্যা মনে হয় বেশুমার কিন্তু পরিসংখ্যান তা বলে না। নিরাপত্তার দিক থেকে এটিকে বলা হয়ে থাকে বাংলাদেশের সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ, বিপজ্জনক ও অনিরাপদ একটি সেক্টর- যার কবলে গোটা দেশে দৈনন্দিন জীবন্ত মানুষের প্রাণ হচ্ছে নিষ্পেষিত অথচ এর বিপরীতেই রয়েছে গোটা বিশ্বে সবচেয়ে নিরাপদ পরিবহন হিসেবে স্বীকৃত রেল ভ্রমণ। এই রেল ভ্রমণ আরামদায়ক ও নিরাপদ বলে যাত্রী সাধারণের কাছে এর অগ্রাধিকার সবার আগে বিবেচিত।

বাংলাদেশে যদি রেল ভ্রমণকে সুলভ, নির্ভরযোগ্য, আরাম ও স্বাচ্ছন্দ্যদায়ক এবং নিরাপদ ও দ্রুতগামী করা যায় তাহলে এর কোন বিকল্প নেই। ফলে বহু মানুষের প্রাণ রক্ষা এবং নিরাপদ ও স্বাচ্ছন্দ্যে ভ্রমণের স্বস্তিতে কৌতূহলী শখের যাত্রীও বাড়তে পারে বহুগুণ তার সঙ্গে। এর ফলে সড়ক পরিবহনের ওপর বিড়ম্বনাকর অসহনীয় চাপ এমনিতেই কমে আসবে। সড়ক দুর্ঘটনার হার অস্বাভাবিকভাবে কমবে। সড়ক কম ক্ষতিগ্রস্ত হবে। সিন্ডিকেট অপশক্তির অবাধ দৌরাত্ম্যের লাগাম টেনে ধরা সহজ হবে।

পরিবহন শ্রমিক ও মালিকদের সিন্ডিকেটের হাতে জিম্মি মানুষ তাদের স্বেচ্ছাচারিতা ও নৈরাজ্যকর অবস্থা সৃষ্টির সুযোগ থেকে বহুলাংশে রক্ষা পাবে। সাধারণ মানুষ ও যাত্রী ব্যাপকভাবে ট্রেন নির্ভরশীল হয়ে পড়বে। ভ্রমণ নির্বিঘ্ন ও স্বাচ্ছন্দ্যময় হলে মানুষ পরিবার-পরিজন বা প্রিয়জন নিয়ে ভ্রমণে আগ্রহী হবে। সংখ্যায় নতুন যাত্রী যোগ হবে। আরামে ভ্রমণেচিত্তের স্বস্তি বা অবসর বিনোদনের সুযোগ পেলেই মানুষ শখে ট্রেনভ্রমণ করবে, এতে কোন সন্দেহ নেই। রেলের আয় বাড়বে বহুগুণ। যুগ যুগ ধরে লোকসান ও চুরি-বদনামের খাতা থেকে কেটে যাবে রেলের নাম যদি সুব্যবস্থাপনা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা যায়।

এর জন্য চাই খোল-নলচে পরিবর্তনের মতো আমূল সংস্কার ও মেগা পরিকল্পনা ॥ কাক্সিক্ষত লক্ষ্য অর্জনের জন্য সবার আগে নিতে হবে সংস্কারের পদক্ষেপ। প্রথমেই দেশব্যাপী ঘণ্টায় দেড় শ’ থেকে দুই শ’ কিলোমিটার বেগেচালিত আধুনিক কার্বনমুক্ত ও পরিবেশবান্ধব বৈদ্যুতিক ট্রেন চলাচলের উপযোগী রেলসড়কের অত্যাধুনিক নেটওয়ার্ক ও সিগন্যাল সিস্টেম নির্মাণ করতে হবে। সেই সঙ্গে বিশ্বযোগাযোগ ও সুবিধার কথা মাথায় রেখে উপযোগিতা বিবেচনা করে দেশব্যাপী মিটার ও ব্রডগেজের যে কোন একটি পদ্ধতির রেলপথ নির্মাণের বিষয়টি চিন্তা করা উচিত। তা না হলে দুই ধরনের রেল কোচের ব্যবহার অন্য লাইনের গন্তব্যে পৌঁছুতে অযথা সময়ক্ষেপণ ও জটিলতার সৃষ্টি করে।

পর্যাপ্ত যাত্রী পরিবহনের জন্য সাধারণ উচ্চতার দোতলা ট্রেন যা ইউরোপে প্রচলিত, তা আমদানি করা যেতে পারে। এর ব্যবহার ঈদ এবং নানান সময় বাড়তি যাত্রীর চাপ সামলাতে কার্যকর ভূমিকা রাখবে।

বিদেশ থেকে বিপুল অর্থ ব্যয়ে আমদানিকৃত তাবত কোচ, ইঞ্জিন ও অন্যান্য সরঞ্জামের ব্যবহৃত মডেল পরবর্তীতে সৈয়দপুর ও চট্টগ্রাম রেল কারখানায় উৎপাদন করার সক্রিয় উদ্যোগ নিতে হবে। দেশের চাহিদা মিটিয়ে বিদেশে রফতানির লক্ষ্য নিয়ে অত্যাধুনিক রেলকোচ ও লোকোমোটিভ ব্যারেল ইঞ্জিন ও প্রয়োজনীয় যন্ত্রাংশ এবং সরঞ্জাম তৈরির কোন প্রতিবন্ধকতাই নেই এই দুই বৃহৎ কারখানায়।

স্বাধীনতা পূর্বকালে কেবল সৈয়দপুর রেল কারখানায় ডে-নাইট দুই শিফটে ৭ হাজার কর্মচারীর নিরলস কর্মযজ্ঞে এখানেই তৈরি ও মেরামত হয়েছে অত্যাধুনিক রেলকোচ, বিলাসবহুল সেলুন কার ও ইঞ্জিন।

কোন এক সময়ে এই কারখানায় উৎপাদিত রেলকোচ রফতানি হয়েছে প্রতিবেশী দেশে। তাহলে তা এখন সম্ভব নয় কেন? এর সঙ্গে ব্যাপক কর্মসংস্থানের বিষয়টিকে কোনভাবেই অগ্রাহ্য করার সুযোগ নেই। সেই সুবিধা ও অবকাঠামো সেখানে রীতিমতো বিদ্যমান। প্রয়োজন শুধু আধুনিকায়ন ও প্রয়োজনীয় উন্নত প্রশিক্ষণ।

বর্তমানে দেশে তৈরি বিশ্বমানের বিশাল নৌজাহাজ তৈরি ও ইউরোপের বাজারে রফতানি সম্ভব হলে রেলকে কেন হাজার হাজার কোটি ঋণের টাকা নিয়ে সবকিছু আমদানি করতে হবে? খোদ প্রধানমন্ত্রী আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন, একদিন আমদানির পরিবর্তে এই বাংলাদেশেই যুদ্ধজাহাজ, সাবমেরিন তৈরি করা হবে।

রেলনির্ভর জনজীবন ॥ নানা প্রয়োজনে গোটা দেশের মানুষের রাজধানী ঢাকামুখী হওয়ার ব্যাপক প্রবণতা এখন এই নগরটিকে সবদিক দিয়েই বসবাসের অযোগ্য করে তুলেছে। বাড়ছে মানুষ, বাড়ছে বাসস্থান সঙ্কট ও বাসা ভাড়া, বাড়ছে জীবনযাত্রার অসহনীয় ব্যয়ভার ও নানান সঙ্কট। বাড়ছে হাজারো সমস্যা– পরিবহন সঙ্কট ও বিড়ম্বনা, যানজট, অপরাধ ইত্যাদি। তারপরেও সরকারের নেই রাজধানীকেন্দ্রিক সকল মন্ত্রণালয় ও গুরুত্বপূর্ণ সরকারী অফিস-আদালত বিকেন্দ্রীকরণের কোন সুদূরপ্রসারী সুপরিকল্পনা। ফলে রাজধানীতে কেন্দ্রীভূত হওয়া সকল দুর্বিষহ সমস্যার কোন হাল করা যাচ্ছে না। উপরন্তু তা দিনে দিনে জটিল অবস্থার রূপ নিচ্ছে। এক্ষেত্রে সুইডেনের বিকেন্দ্রীকরণ ব্যবস্থার মডেলটি অনুসরণ করা যেতে পারে, তা করা না হলে গণপরিবহন হিসেবে ট্রেননির্ভর যোগাযোগ ব্যবস্থা এনে দিতে পারে এর অনেকটা সহজ সমাধান। রাজধানী ঢাকার সঙ্গে এর চতুর্পার্শ্বের নিকটবর্তী শহরগুলোর সঙ্গে যেমন নারায়ণগঞ্জ, কুমিল্লা, ময়মনসিংহ, মানিকগঞ্জের মতো শহরগুলোর সঙ্গে ঘন ঘন দ্রুতগামী ট্রেন সার্ভিস চালু করা যায় তাহলে মানুষ সর্বোচ্চ একঘণ্টার মধ্যেই ঢাকা যাওয়া-আসার সুবিধা নিয়ে দিনের কাজ দিনে সেরে সন্ধ্যায় ঘরের মানুষ ঘরে ফিরে স্বল্প ব্যয়ে আপন গৃহে শান্তি ও স্বাচ্ছন্দ্যে জীবন নির্বাহ করতে পারে।

সরকারের দেয়া আশ্বাস অনুযায়ী দেশের মানুষ এখন অধীর আগ্রহে স্বপ্ন দেখছে মাত্র ৫৭ মিনিটে ঢাকা-চট্টগ্রাম ভ্রমণের সুযোগটি কবে বাস্তবায়ন হবে! তাহলে ঢাকার সঙ্গে নিকট ও দূরবর্তী জেলা, শহর ও উপশহরের সঙ্গে দ্রুতগামী ট্রেন যোগাযোগের নেটওয়ার্ক তৈরি হলে দেশ ও দেশের মানুষকে তা কতটা উচ্চতায় নিয়ে যেতে পারে, বিষয়টি অনুমান করা মোটেও কষ্টকর নয়।

এই মেগা পরিকল্পনাটি বাস্তবায়ন ও কার্যকর করা গেলে রাজধানী ঢাকায় অবস্থানে বাধ্য দূরের নিরুপায় ছাত্রছাত্রী, ব্যবসায়ী, সরকারী-বেসরকারী চাকরিজীবী বা অন্য যে কোন পেশার মানুষের আর ঢাকায় বসবাসের প্রয়োজন হবে না। ফলে ঢাকা শহরে দিনে দিনে বৃদ্ধি পাওয়া আকাশচুম্বী বাসা ভাড়া, ব্যয়বহুল জীবন ও বাসস্থানের সঙ্কট এবং দুর্বিষহ যানজটের আর অবকাশ থাকবে না।

ট্রেন থেকে ঢাকায় পদার্পণ করা মানুষগুলোর উদ্দীষ্ট গন্তব্যে পৌঁছানোর জন্য রাজধানীতে গড়ে তোলা প্রয়োজন ট্রাম লাইনের নেটওয়ার্ক যা হবে সহজলভ্য, স্বল্প খরচি ও অসহনীয় অতিরিক্ত গণপরিবহনের উৎপাতের মোক্ষম বিকল্প। ট্রাম লাইনের জন্য প্রশস্ত জায়গার প্রয়োজন হয় না। পার্শ্ববর্তী দেশের কলকাতা শহরের ব্যস্ততম বাণিজ্যিক এলাকার অপ্রশস্ত রাস্তায় চলাচলকারী ট্রাম সার্ভিসের বিষয়টি চোখের সামনে একটি অনুসরণযোগ্য উদাহরণ হতে পারে। এই ব্যবস্থা আমি তুরস্কে, ইস্তানবুলের ডাউন টাউনের অপ্রশস্ত রাস্তায়ও দেখেছি।

ঢাকা-চট্টগ্রামের মতো দেশের অন্য জেলা শহরগুলোতে যদি ঢাকা শহর থেকে বা বিপরীত গন্তব্য থেকে দ্রুতগামী ট্রেনে সর্বোচ্চ দুই থেকে তিন ঘণ্টা সময়ে যাওয়া-আসার সুবিধা থাকে তাহলে কোন জরুরী কাজে কাউকে আর ঢাকা শহরে এসে অহেতুক পড়ে থাকা লাগে না।

যদি সাশ্রয়ীমূল্যে মাসিক, ত্রৈমাসিক, ষাণ¥াসিক বা বাৎসরিক রেলকার্ড যা সুইডেনে বাসেও প্রযোজ্য, কেনার ব্যবস্থা করা যায় তাহলে তা হয়ে উঠবে বেশ জনপ্রিয়। ইউরোপের দেশগুলোতে এই ব্যবস্থা রয়েছে। ফলে বহু কর্মজীবী মানুষ, মন্ত্রী, আমলা, সংসদ সদস্য রাজধানী শহরে বাসা নিয়ে পড়ে না থেকে বহু দূর হতে ট্রেন বা নন-স্টপ বাসে চেপে নিজ বাড়ি থেকেই কর্মস্থলে যাওয়া-আসা করেন। এ জন্য তারা নিয়োগকর্তার কাছ থেকে বিশেষ আর্থিক সুবিধা বা ইনসেনটিভ যেমন পেয়ে থাকেন তেমনি সরকারকে প্রদেয় করের ওপর কর রেয়াতও পান। এই সুবিধা সুইডেনে দেয়া হয়।

আমি ইউরোপ ছাড়াও কলকাতায় দেখেছি, সেখানকার বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার দূর অঞ্চলের মানুষ সুলভ ও সুবিধাজনক ট্রেন সার্ভিসের সুবিধা নিয়ে সকালে কলকাতা শহরে পৌঁছে দিনের সকল কাজকর্ম সেরে সন্ধ্যায় ঘরের মানুষ ঘরে ফিরে যাচ্ছে। এতে কাউকে আর রাজধানী বা ব্যস্ততম ব্যয়বহুল শহরে পড়ে থাকা লাগছে না। ফলে শহর থাকছে এই বাড়তি মানুষের চাপ ও সমস্যা থেকে মুক্ত।

সুত্র:জনকন্ঠ, ৯মার্চ ২০১৯


About the Author

RailNewsBD
রেল নিউজ বিডি (Rail News BD) বাংলাদেশের রেলের উপর একটি তথ্য ও সংবাদ ভিত্তিক ওয়েব পোর্টাল।

Comments are closed.