শিরোনাম

সৈয়দপুর রেলপথে বাঁশের হাট ট্রেন চলাচলে ঝুঁকি

সৈয়দপুর রেলপথে বাঁশের হাট ট্রেন চলাচলে ঝুঁকি

নিউজ ডেস্ক:
  সৈয়দপুর শহরের ব্যস্ততম এলাকায় রেললাইনের ওপর গড়ে ওঠেছে বাঁশ বাজার। চলছে বেচাকেনা। এতে ট্রেন চলাচলে ঝুঁকি বাড়ছে। গত এক বছরে ওই এলাকায় ট্রেনে কাটা পড়ে কমপক্ষে আট ব্যক্তি নিহত হয়। তবুও রেলওয়ে ও স্থানীয় প্রশাসনের টনক নড়েনি।
রেলওয়ে সূত্র জানায়, রেলপথের উভয় পাশের সন্নিবেশিত ২০ ফুট এলাকায় কোনো প্রকার স্থাপনা নির্মাণ, দোকানপাট স্থাপন ও হাট-বাজার গড়ে তোলা এমনকি রেলপথে অবাধে মানুষ চলাচলের সুযোগ নেই। রেলওয়ে বিধি অনুযায়ী ট্রেন চলাচল নির্বিঘ্ন রাখতে রেলপথ এলাকায় সার্বক্ষণিক ১৪৪ ধারা জারি থাকে। সৈয়দপুর শহরের শহীদ ডা. সামসুল হক সড়ক ও শেরেবাংলা সড়কের মাঝ দিয়ে চলে গেছে সৈয়দপুর-খুলনা ও রাজশাহী রেলপথ। সৈয়দপুর রেলওয়ে স্টেশন এলাকা থেকে বানিয়াপাড়া আউটার সিগন্যাল পর্যন্ত তিন কিলোমিটার রেলপথ এলাকা ক্রমাগত দখল হয়ে যাচ্ছে। এর উপর তৈরি হচ্ছে ভবন, দোকানপাট, হাট-বাজার ইত্যাদি। এছাড়া রেললাইনের সাথে হোটেল, রেস্তোরাঁ গড়ে ওঠায় লোকজন রেললাইনে বসে চা পান করতে দেখা যায় ও লাইনের ওপর খুচরা দোকানিরা পণ্যের পসরা নিয়ে বসে পড়েন।

 

এদিকে মড়ার ওপর খাঁড়ার ঘা হয়ে যোগ হয়েছে নিত্যদিনের বাঁশ বাজার। সরজমিনে দেখা যায়, লম্বা লম্বা বাঁশ রেললাইনের দু’ধারে ও কোনো কোনো সময় রেললাইনের ওপর রেখে বেচাকেনা চলছে। হঠাত্ ট্রেন চলে আসলে দৌড়ঝাঁপ শুরু হয় ক্রেতা-বিক্রেতাদের। এতে করে ভয়াবহ দুর্ঘটনার আশঙ্কা থাকছে।
 সৈয়দপুর রেলওয়ে থানা সূত্র জানায়, গত বছর ফেব্রুয়ারি থেকে চলতি বছরের জানুয়ারি পর্যন্ত ওই তিন কিলোমিটার রেলপথে আট জনের প্রাণহানির ঘটনা ঘটেছে।
দি সৈয়দপুর বণিক সমিতির সভাপতি মো. ইদ্রিস আলী জানান, কার অনুমতি নিয়ে বাঁশ বাজার গড়ে উঠেছে, তা জানা নেই। ঝুঁকিপূর্ণ এলাকায় এ ধরনের বাজার হওয়া ঠিক নয়। এসব দ্রুত সরিয়ে নেওয়ার জন্য পৌর পরিষদের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন তিনি।

 

বাঁশ ব্যবসায়ী আকরাম আলী জানান, পৌরসভাকে টোল ও অন্যান্য খাজনা দিয়ে বাঁশের ব্যবসা করছি আমরা। আমাদের কেউ বাঁধা দেইনি। সরিয়ে দেওয়া হলে অন্যত্র চলে যাবো। তার মতো অনেকেই এভাবে রেলপথের ওপর বাঁশ বেচাকেনা করছেন। তাদের সাথে কথা বলতে চাইলে কোনো সদুত্তর মিলেনি।
সৈয়দপুর রেলওয়ে স্টেশন মাস্টার আলমগীর হোসেন জানান, ব্যস্ত ওই রেলপথে প্রতিদিন ১২টি ট্রেন উভয়পথে চলাচল করে। ট্রেনের চালকরা রেলপথ নিরাপদ রাখার জন্য বার বার তাগিদ দিচ্ছেন। রেলপথের উভয় পাশের স্থাপনা, দোকানপাট ও হাট-বাজার উচ্ছেদের জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। ইতিপূর্বে কয়েকবার রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করলেও পূর্বের অবস্থায় ফিরে এসেছে।

 

এ প্রসঙ্গে সৈয়দপুর পৌরসভার মেয়র মো. আমজাদ হোসেন সরকার জানান, রেলপথে যারা দোকানপাট ও হাট-বাজার বসান তারা নিজ দায়িত্বে করেন। পৌরসভা এক্ষেত্রে কেন অনুমতি দেবে? রেলপথে ট্রেন চলাচল ঝুঁকিমুক্ত হোক এটা আমরাও চাই।

 

সৈয়দপুর রেলওয়ে জেলা পুলিশ সুপার সিদ্দিকী তাঞ্জিলুর রহমান জানান, আমরা বার বার রেলপথ এলাকা থেকে দখলদারদের উচ্ছেদ করেছি। কিন্তু কাজের কাজ কিছুই হচ্ছে না। রেলওয়ের জায়গা চিহ্নিত করে সীমানা প্রাচীর দিতে পারলে ওই সমস্যা আর থাকবে না বলে মন্তব্য করেন তিনি।
সুত্র:ইত্তেফাক, ০২ মার্চ, ২০১৮

About the Author

RailNewsBD
রেল নিউজ বিডি (Rail News BD) বাংলাদেশের রেলের উপর একটি তথ্য ও সংবাদ ভিত্তিক ওয়েব পোর্টাল।

Comments are closed.