শিরোনাম

রেলের শীর্ষস্থানীয়দের দুর্নীতি

রেলের শীর্ষস্থানীয়দের দুর্নীতিরেলের শীর্ষস্থানীয়দের দুর্নীতি

নিউজ ডেস্ক: এবার রেলের ডিজি-এডিজির (মহাপরিচালক-অতিরিক্ত মহাপরিচালক) বিরুদ্ধে উঠেছে দুর্নীতির অভিযোগ। রেল ইঞ্জিন (লোকোমোটিভ) ক্রয় ও সরবরাহের ক্ষেত্রে উঠেছে এই অভিযোগ। এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের অর্থায়নে ৩২২ কোটি টাকায় কোরিয়ার হুন্দাই রোটেন কোম্পানি ১০টি মিটারগেজ ইঞ্জিন সরবরাহ করে রেলকে।

এসব ইঞ্জিনে দরপত্রের শর্তানুযায়ী যন্ত্রাংশ যুক্ত করা হয়নি, এগুলো তৈরি হয়েছে নিম্নমানের যন্ত্রাংশ দিয়ে। চুক্তি অনুযায়ী ইঞ্জিনগুলো সরবরাহ না করায় প্রকল্প পরিচালক তা গ্রহণ করেননি। তিনি এসব ইঞ্জিন ক্রয়-গ্রহণে রেলওয়ের মহাপরিচালক মো. শামসুজ্জামান ও অতিরিক্ত মহাপরিচালক মঞ্জুর-উল-আলম চৌধুরীর বিরুদ্ধে সরাসরি অভিযোগ তুলেছেন। এ অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে ২৪ নভেম্বর একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে ১৫ কার্যদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দেয়ার নির্দেশ দেয়া হলেও এখন পর্যন্ত তা জমা পড়েনি।

রেলের ডিজি ও এডিজির বিরুদ্ধে দুর্নীতির যে অভিযোগ উঠেছে, তার তদন্তকাজ এখনও কেন শেষ হচ্ছে না, তা এক প্রশ্ন বটে। বলাবাহুল্য, দুর্নীতির ক্ষেত্রে দায়ী ব্যক্তিদের শাস্তি না হলে দুর্নীতি না কমে বরং উৎসাহিত হয়। বস্তুত, রেল এখন দুর্নীতিতে আকণ্ঠ নিমজ্জিত। এর যে জায়গাতেই হাত দেয়া হোক না কেন, দেখা যাবে সেখানে কিছু না কিছু দুর্নীতি হয়েছেই। এমনকি দুর্নীতি হচ্ছে রেল দুর্ঘটনায় নিহতদের পরিবারের জন্য বরাদ্দ ক্ষতিপূরণের টাকা নিয়েও। জানা যায়, রেল দুর্ঘটনায় নিহত একজনের পরিবারকে ক্ষতিপূরণ দেয়া হয় মাত্র ১০ হাজার টাকা। এ টাকা পেতে দৌড়ঝাঁপে খরচ হয়ে যায় ৬-৭ হাজার টাকা। ভোগান্তি তো আছেই। ফলে অনেকেই এ টাকা নিতে আর আগ্রহী হন না। না নেয়া এই টাকাও নাকি রেলের অসাধু কর্মকর্তারা অনেক সময় ভাগবাটোয়ারা করে নেন। অর্থাৎ বলা যায়, দুর্নীতি রেলকে আষ্টেপৃষ্ঠে বেঁধে রেখেছে।

উদ্বেগের আরও কারণ রয়েছে। রেলকে তুলনামূলক নিরাপদ বাহন হিসেবে ধরা হয়। কিন্তু দেখা যাচ্ছে, ঘন ঘন ঘটছে রেল দুর্ঘটনা। আর এসব দুর্ঘটনার বড় কারণ হল দুর্নীতি। লাইনে পাথর না থাকা, সিগন্যাল ব্যবস্থায় ত্রুটি, লাইন ক্ষয়ে যাওয়া, স্লিপার নষ্ট হওয়া, লাইন ও স্লিপার সংযোগস্থলে হুক না থাকা ইত্যাদি যেসব কারণে দুর্ঘটনা ঘটতে পারে, সেগুলোর ক্ষেত্রেও দুর্নীতি হয়ে থাকে। নামমাত্র যন্ত্রাংশ লাগিয়ে অবৈধভাবে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নেয়া হয়।

রেলের ডিজি-এডিজির বিরুদ্ধে দুর্নীতির যে অভিযোগ উঠেছে, তদন্ত প্রতিবেদনে তার সত্যতা মিললে তাদেরকে অবশ্যই আইনের আওতায় আনতে হবে। কারণ ডিজি-এডিজি রেলের দুটি শীর্ষস্থানীয় পদ। শীর্ষস্থানীয়দের দুর্নীতির বিচার না হলে নিম্ন পর্যায়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা যে দুর্নীতিতে উৎসাহিত হবে, তা বলাই বাহুল্য।

সূত্র : দৈনিক যুগান্তর তারিখ: ২৭ ডিসেম্বর ২০২০


About the Author

RailNewsBD
রেল নিউজ বিডি (Rail News BD) বাংলাদেশের রেলের উপর একটি তথ্য ও সংবাদ ভিত্তিক ওয়েব পোর্টাল।

2 Trackbacks & Pingbacks

  1. Product information
  2. Anya Belcampo scandal

Comments are closed.