শিরোনাম

জয়দেবপুর জংশনে যাত্রী ভোগান্তি চরমে

জয়দেবপুর জংশনে যাত্রী ভোগান্তি চরমে

আবিদহোসেনবুলবুল:নানা সমস্যায় জর্জরিত গাজীপুর শহরের প্রাণকেন্দ্রে অবস্থিত জয়দেবপুর রেল জংশন। এখানে যাত্রীদের জন্য নেই তেমন কোনো সুযোগসুবিধা। আন্তঃনগর ট্রেনের যাত্রাবিরতি না থাকায় এখানকার যাত্রীদের বিমানবন্দর স্টেশনে গিয়ে ট্রেনে উঠতে হয়। কিছু অসাধু কর্মকর্তা অতিরিক্ত টাকায় টিকিট বিক্রি করেন বলে অভিযোগ রয়েছে।

১০ বছর আগে এ স্টেশনটি তৃতীয় শ্রেণির স্টেশন ছিল। বর্তমানে এ স্টেশনটি প্রথম শ্রেণির অন্তর্ভুক্ত। প্রায় ১৬ বছর আগে এ স্টেশনকে জংশনে উন্নীত করা হয়। ১৩টি প্রথম শ্রেণির রেলস্টেশনের মধ্যে এ স্টেশনের রাজস্ব আয় তৃতীয় পর্যায়ে, কিন্তু জনবলের দিক থেকে যাত্রীদের সুযোগসুবিধা এখনও তৃতীয় পর্যায়ে রয়েছে। বর্তমানে এ জেলার মোট জনসংখ্যা প্রায় ৮০ লাখ। এ জংশন দিয়ে আন্তঃনগর ট্রেনসহ দেশের উত্তর-দক্ষিণাঞ্চলের ৭২টি ট্রেন চলাচলের মধ্য দিয়ে প্রতিদিন কমপক্ষে ৫০ হাজার যাত্রী দেশের বিভিন্ন গন্তব্যে যাতায়াত করেন।

জয়দেবপুর রেল জংশনের প্ল্যাটফরমে সীমিত কিছু আসন থাকলেও শ্রেণি অনুযায়ী যাত্রী বিশ্রামাগার না থাকায় মহিলা, শিশু ও বৃদ্ধাসহ শত শত যাত্রীকে ট্রেনের অপেক্ষায় ঘণ্টার পর ঘণ্টা দাঁড়িয়ে থাকতে হয়। এখানে নেই কোনো বিশুদ্ধ পানি ও শৌচাগারের ব্যবস্থা। প্ল্যাটফরমে নেই ইলেকট্রনিক টাইমিং মনিটর। প্ল্যাটফরমসহ স্টেশন এলাকায় সব সময়ই থাকে নোংরা পরিবেশ।

রেল জংশনটিতে বর্তমানে ক্ষুদ্র পরিসরে একটি কক্ষ থেকে দুটি মাত্র কাউন্টারে টিকিট বিক্রি করা হয়। এর ফলে টিকিট কিনতে যাত্রীদের চরম ভোগান্তি পোহাতে হয়। কাউন্টারের সামনে পর্যাপ্ত জায়গা না থাকায় টিকিট কাটতেও দুর্ভোগ পোহাতে হয়। এ সুযোগে কিছু অসাধু কর্মকর্তা অতিরিক্ত টাকার বিনিময়ে টিকিট বিক্রি করেন বলে অভিযোগ রয়েছে। তাছাড়া আন্তঃনগর বুকিং কাউন্টারের সামনেই রয়েছে টিনের বাক্সের একটি বেসরকারি মেইল কাউন্টার।

সরেজমিনে দেখা যায়, স্টেশনে ট্রেন থামার পর যাত্রীদের ওঠানামায় নেই কোনো শৃঙ্খলা। এ সময় ছিনতাইকারীর কবলে পড়েন অনেক যাত্রী। এ স্টেশনটি জংশনে উন্নীত হওয়ার পর শুধু একটি প্ল্যাটফরম নির্মাণ ছাড়া অবকাঠামোগত আর কোনো উন্নয়ন হয়নি। বর্তমানে যে দুটি প্ল্যাটফরম রয়েছে, সেগুলো প্রয়োজনের তুলনায় খুবই ছোট। জংশনের দ্বিতীয় কিংবা মধ্যবর্তী লাইনটিতে প্ল্যাটফরম সুবিধা না থাকায় ট্রেনে যাত্রীদের ঝুঁকি নিয়ে ওঠানামা করতে হয়।

তাছাড়া আন্তঃনগর ট্রেনগুলোতে এই জংশন দিয়ে প্রতিদিন ১০ হাজারেরও বেশি যাত্রী যাতায়াত করেন। তার বিপরীতে এই জংশনের যাত্রীদের জন্য আসন বরাদ্দ আছে মাত্র ৫৪৩টি। এ স্টেশন হয়ে হাজার হাজার যাত্রী দেশের বিভিন্ন গন্তব্যে যাতায়াত করে, অথচ এই জংশনটিতে আটটি আন্তঃনগর ট্রেনের যাত্রাবিরতি নেই। এসব ট্রেন হচ্ছে তিস্তা, মোহনগঞ্জ, অগ্নিবীণা, বনলতা, ব্রহ্মপুত্র, রংপুর, পঞ্চগড় ও বেনাপোল এক্সপ্রেস। এলাকাবাসীর পক্ষ থেকে দীর্ঘদিন ধরে এ আটটি ট্রেনের যাত্রাবিরতির জন্য জোরালো দাবি জানানো হলেও রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ তা আমলে নিচ্ছে না। এতে ভোগান্তির শিকার হতে হচ্ছে হাজার হাজার যাত্রীকে।

আন্তঃনগর তিস্তা ট্রেনটিতে জয়দেবপুর জংশনে যাত্রীদের জন্য প্রথম শ্রেণি ও এসিতে একটি আসনও বরাদ্দ নেই, কিন্তু গফরগাঁও ছোট একটি স্টেশনের জন্য এসিতে আসনসংখ্যা বরাদ্দ ১৬টি এবং প্রথম শ্রেণিতে আসনসংখ্যা পাঁচটি।

সুত্র:শেয়ার বিজ, নভেম্বর ১৯, ২০১৯



About the Author

RailNewsBD
রেল নিউজ বিডি (Rail News BD) বাংলাদেশের রেলের উপর একটি তথ্য ও সংবাদ ভিত্তিক ওয়েব পোর্টাল।

Comments are closed.