শিরোনাম

ট্রেনের অনলাইন টিকেট সিস্টেমে বিপাকে নিম্ন-মধ্যবিত্তরা

ট্রেনের অনলাইন টিকেট সিস্টেমে বিপাকে নিম্ন-মধ্যবিত্তরা

সাইদুল ইসলাম:

বর্তমান দেশের করোনা পরিস্থিতির কারণে যাত্রীদের সুরক্ষা ও নিরাপত্তা বজায় রাখতে শুধুমাত্র অনলাইনেই টিকেট কাটার বিষয়টি যেমনি সহজ হয়েছে, ঠিক তেমনি বিভিন্ন রুটের হাজার হাজার নিম্ন-মধ্যবিত্ত যাত্রীদের ট্রেন ভ্রমণ কষ্টের হয়ে পড়েছে। তারা জানেন না অনলাইনে কিভাবে টিকেট কাটতে হবে, জানেন না অ্যাপসটা কি, আর্থিক অবস্থার কারণে বা ব্যবহারও করতে জানেন না দামি বা অ্যাড্রোয়েট মোবাইলও। 

করোনা পরিস্থিতিতে রেলওয়ের অনলাইনে টিকেট কাটার সিস্টেমে নতুন করেই বিড়ম্বনার সৃষ্টি হয়েছে সাধারণ যাত্রীদের। এসবের কারইে অনলাইনেই থেকে যাচ্ছে শত শত অবিক্রিত টিকেট।তবে হাজার হাজার ট্রেনযাত্রী অনলাইনের সিস্টেমও বুঝেন না। একই সাথে সাধারণ যাত্রীদের জন্য কিছু টিকেট কাউন্টারে বিক্রয়ের জন্য দেয়া হলেও যাত্রীশূণ্য হবে ট্রেন। তাছাড়া এ বিষয়ে শত শত রেল কর্মকর্তা-কর্মচারিও ক্ষুব্ধ রয়েছে। শুধুমাত্র উর্ধতন কর্মকর্তাদের সিদ্ধান্তের কারণে চাকরির ভয়ে প্রকাশ্যে কেউই কথা বলছেন না বলে জানান সংশ্লিষ্টরা।

রেলওয়ে ও সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, করোনা পরিস্থিতিতে যাত্রীদের সুরক্ষার বিষয়টি মাথায় রেখে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ প্রতিটি ট্রেনের অর্ধেক টিকিট অনলাইনে বিক্রির উদ্যোগ নিয়েছে। প্রতিটি ট্রেনের অর্ধেক টিকিটের পুরোটাই (শতভাগ) অনলাইনে দিয়ে দেওয়ায় দুর্ভোগে পড়েছেন অসংখ্য যাত্রী। অনেক যাত্রী অনলাইনে টিকিট কেটে স্বাচ্ছন্দ্যে ভ্রমণ করলেও অর্ধেকেরও বেশি আসন খালি যাচ্ছে।

যাত্রীরা এখনো অনলাইন নির্ভর কিংবা অনলাইনে পারদর্শী হয়ে উঠতে পারেননি। যাদের মোবাইল ব্যাংকিং একাউন্ট আছে নিজস্ব মোবাইলে তারা অনলাইনে টিকিট কাটতে পারবেন। অথবা অনলাইনের দোকানে গিয়েও টিকিট কাটতে পারবেন। কিন্তু অনেক যাত্রীর মোবাইলে একাউন্ট নেই; আবার অনেকে রেলওয়ে সেবা অ্যাপসে গিয়ে টিকিটই কাটতে জানেন না। যার কারণে প্রতিটি ট্রেনেই চার ভাগের তিন ভাগ আসন খালি যাচ্ছে প্রতিদিন।

রেলওয়ের উর্ধ্বতন সাবেক ও বর্তমান বেশ কয়েকজন কর্মকর্তা বলেন, ট্রেনে বেশীর ভাগ আসন খালি যাচ্ছে। যাত্রীদের সুবিধার কথা বিবেচনা করে কাউন্টারে টিকিট দেয়া উচিত। কাউন্টারে তিন ফুট অন্তর গোলবৃত্ত করে দিয়ে টিকিট বিক্রি করলে সামাজিক দূরত্ব শতভাগ নিশ্চিত হবে। করোনা পরিস্থিতিতে যে অর্ধেক টিকেট থেকে যাচ্ছে সেগুলোও বিক্রি হয়ে যাবে। 

চট্টগ্রাম রেলওয়ে ষ্টেশনের ম্যানেজার রতন কুমার চৌধুরী বলেন, রেলসেবা অ্যাপস থেকে কীভাবে টিকিট কাটতে হয় তা জানেন না অধিকাংশ মানুষ বা যাত্রী। ষ্টেশনে এসেই অনেক যাত্রী টিকেটের জন্য কান্নাকাটিও শুরু করে। সিষ্টেম বলে দিলেও বুঝে না, বুঝতে চান না যাত্রীরা। 

তিনি বলেন, বিশেষ করে নিম্ন-মধ্যবিত্ত মানুষগুলোর মধ্যেই এসব সমস্যা দেখা গেছে। বুঝে না মোবাইল ব্যাংকিং কি। যার কারণে অনলাইনে টিকিট কাটতে না পেরে প্রতিদিন শত শত যাত্রী চট্টগ্রাম রেলস্টেশন কাউন্টারে গিয়ে ভিড় করছেন। রেলওয়ের দায়িত্বশীলদের মনিটরিং এর মাধ্যমে সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখেই যাত্রীরা ট্রেন ভ্রমণ করছেন।

জানা গেছে, চট্টগ্রাম থেকে সুবর্ণ, সোনার বাংলা, মেঘনা ও উদয়ন এক্সপ্রেসে প্রতিদিন টিকিট বিক্রি হয়েছে। তবে এতে চাহিদা মোতাবেক টিকেট বিক্রয় হচ্ছে না। দেশের বিভিন্ন রুটে চলাচলের জন্য রাখা অনলাইনেই থেকে যাচ্ছে অধিকাংশ টিকেট। গত শনিবার সোনার বাংলায় মোট ৫৮৫ টিকিটের মধ্যে বিক্রি হয়েছে মাত্র ১৫২টি, গত ১২ তারিখ বিক্রি হয়েছে ১১২টি এবং ১১ তারিখ বিক্রি হয়েছে ১৫১টি। মেঘনা এক্সপ্রেসে ৯৩৩ টি সিটের মধ্যে বিক্রি হয়েছে ৩৭১টি, গত ১২ তারিখ বিক্রি হয়েছে ৪৩৯টি এবং ১১ তারিখ বিক্রি হয়েছে ৪৬৪টি টিকিট। গত ১২ তারিখ উদয়নের বিক্রি হয়েছে ২৮০টি টিকিট। গত ১১ তারিখ বিক্রি হয়েছে ৩১৩টি টিকিট।

সূত্র:বাংলাদেশ প্রতিদিন,  ১৫ জুন, ২০২০


About the Author

RailNewsBD
রেল নিউজ বিডি (Rail News BD) বাংলাদেশের রেলের উপর একটি তথ্য ও সংবাদ ভিত্তিক ওয়েব পোর্টাল।

Comments are closed.