শিরোনাম

চীন-নেপাল রেল প্রকল্পে সমর্থন নেই নেপালিদের


।। আন্তর্জাতিক ।।

নেপালে চীনের উচ্চাভিলাসী রেললাইন নির্মাণ প্রকল্পকে স্থলবেষ্টিত দেশটির খুব কম সংখ্যক মানুষই সমর্থন করছেন। যদিও চীন ১৭০ কিলোমিটার ট্রান্স-হিমালয়ান তিব্বত-নেপাল রেলপথের জন্য সম্ভাব্যতা যাচাই শুরুর পরিকল্পনা করেছে, তবে পরিবেশগত এবং কারিগরি প্রশ্নগুলো এখনো রয়ে গেছে। নেপালি বিশেষজ্ঞরা এ নিয়ে উদ্বেগ জানিয়েছেন। আই অব নেপালের এক প্রতিবেদনে এসব তথ্য জানানো হয়েছে।

তাছাড়া নেপাল-চীন রেললাইন নিয়ে বিতর্কের অবসান এখনো হয়নি। ২০১৯ সালে চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং বলেছিলেন, যে প্রস্তাবিত এই প্রকল্পটি নেপালকে বদলে দেবে। কিন্তু তিন বছর পেরিয়ে গেছে এবং এখনও প্রকল্পটি নেপালের নেতৃত্ব, প্রকৌশলী বা পরিবেশবিদদের কাছ থেকে খুব বেশি সমর্থন পায়নি বলে জানিয়েছে আই অব নেপাল।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০১৮ সালের শেষের দিকে নেপালের জন্য একটি রেলওয়ের প্রাক-সম্ভাব্যতা সমীক্ষা পরিচালনা করেছে চীন। যেখানে স্পষ্টভাবে বলা হয়েছে যে ভূখণ্ডের গ্রেডিয়েন্টের কারণে এটি খুব কঠিন একটি প্রকল্প।
আই অব নেপাল আরও জানায়, সমীক্ষায় ৭২.৫ কিলোমিটার লাইনের জন্য ২.৭৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার বিনিয়োগের অনুমান করা হয়েছে। কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত সমীক্ষার প্রতিবেদনটি এখনও প্রকাশ করা হয়নি। ফলে প্রস্তাবিত রেলপথের সম্ভাব্যতা নিয়ে নেপালে সংশয় দেখা দিয়েছে।
নেপাল রেলওয়ের কর্মকর্তা আমান চিত্রকর বলেন, এই প্রকল্পটি তৃতীয় মেরুর মতো কঠিন হবে। তিনি বলেন, বিশ্বের সবচেয়ে চ্যালেঞ্জিং রেলওয়ে ইঞ্জিনিয়ারিং প্রকল্প হলো ৪৫০০ মিটার তিব্বত মালভূমির রুট। যা হিমালয়ের মধ্য দিয়ে কাঠমান্ডুতে পৌঁছায়।
কারিগরি বিশেষজ্ঞরা নেপালের সক্ষমতার অভাব নিয়ে গুরুতর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন বলেও প্রতিবেদনে জানিয়েছে সংবাদমাধ্যমটি।
কারিগরি প্রতিবেদনগুলো পর্যালোচনা করার সময় দেখা গেছে, যে নেপালে কারিগরিভাবে যোগ্য রেলপথ নেই। প্রস্তাবিত রেললাইনের সুবিধা এবং অসুবিধাগুলি মূল্যায়ন করতে পারে এমন প্রকৌশলীরও অভাব রয়েছে।
ভূতাত্ত্বিক চ্যালেঞ্জ ছাড়াও নেপাল-চীন রেলওয়েতে অনেক ভূ-রাজনৈতিক বাধা রয়েছে। এটি স্পষ্ট যে, প্রস্তাবিত প্রকল্পটি পরিবেশের ওপর প্রভাব ফেলবে এবং নেপালে এই লাইন সম্পর্কে যথেষ্ট আলোচনা হয়নি।
আই অব নেপাল জানিয়েছে, নেপাল ২০২১ সালের জুলাই পর্যন্ত চীন থেকে ১.৭ বিলিয়ন ডলারের পণ্য আমদানি করেছে। ২০২২ সালের এপ্রিলের মাঝামাঝি চীনে নেপালের রপ্তানি ছিল মাত্র ৫০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার।
প্রস্তাবিত ১৭০ কিলোমিটার রেলপথ চীনের উচ্চাভিলাষী বেল্ট অ্যান্ড রোড উদ্যোগের অংশ। একবার এটি নির্মিত হলে এটি দক্ষিণ তিব্বতের কেরুং গাইরংকে সংযুক্ত করবে। পরিকল্পনা হল অবশেষে রেলপথ ভারত পর্যন্ত প্রসারিত করা; কাঠমান্ডু হয়ে রাসুওয়া জেলা দিয়ে নেপালে প্রবেশ করা।

সূত্রঃ দৈনিকইনকিলাব