বাংলাদেশে যাত্রাপথের সাধারণ জনগণের প্রথম পছন্দ ট্রেনযাত্রা। ট্রেনে সারা বছর যাত্রীর আধিক্য থাকলেও প্রতি বছরই লোকসান করছে রেল মন্ত্রণালয়। ট্রেনের সেবা নিশ্চিত করতে সরকারের চেষ্টা অব্যাহত আছে। তবে কিছু আমলাতান্ত্রিক জটিলতায় সরকার জনগণের কাছে ট্রেনের কাক্সিক্ষত সেবা পৌঁছে দিতে পারছে না।
যাত্রীদের দুর্ভোগ কমাতে অনলাইনে কোনো ঝামেলা ছাড়াই টিকিট সরবরাহ সেবা চালু করেছে কর্তৃপক্ষ। অনলাইনে টিকিটের সেবা অল্পসংখ্যক মানুষ পেলেও একটি বড় অংশ রেলস্টেশনে কাউন্টারে টিকিট সংগ্রহ করে। সাধারণত যারা সশরীরে স্টেশনে কাউন্টারে টিকিট সংগ্রহ করে তারা প্রায়ই নানা বিড়ম্বনায় পড়ে। টিকিট কাউন্টারে কর্মকর্তাদের স্বেচ্ছাচারিতা ও টিকিট থাকার পরও টিকিট বিক্রি না করার অভিযোগ প্রায়ই পাওয়া যায়। অবশ্য টিকিটের মূল্যের চেয়ে বেশি টাকা পরিশোধ করলে খুব সহজেই টিকিট পাওয়া যায়।
বিনা টিকিটে ভ্রমণের ইচ্ছা না থাকলেও স্টেশন কর্মকর্তাদের দায়িত্বহীনতায় অনেক সময় বাধ্য হয়ে বিনা টিকিটে ট্রেনে উঠতে হয় যাত্রীদের। এ কারণে ট্রেনে অনেক যাত্রীকে বিব্রতকর অবস্থায় পড়তে হয়। এই সুযোগে যাত্রীর কাছ থেকে দ্বিগুণ ভাড়া আদায় করা হয়। যাত্রাপথে ট্রেনের ভেতরে যাত্রীদের খাবারের জন্য রেল কর্তৃপক্ষ রেস্তোরাঁর ব্যবস্থা রেখেছে। তবে সেই খাবার এক দিন যে যাত্রী খাবে, সে আর কখনও সেই খাবার কিনবে না। কারণ খাবারের মূল্য অস্বাভাবিকভাবে বেশি নেওয়া হয়। খাবার পরিবেশন করার সময় অল্প মূল্য বলা হলেও খাবারের দাম অনেক বেশি নেওয়া হয়।
লোকাল ট্রেনগুলোতে হিজড়াদের উৎপাত চলছেই। কিছু ক্ষেত্রে অনেক ভদ্রলোককে বিব্রতকর অবস্থায় পড়তে হয়। এত বিড়ম্বনা থাকার পরেও স্বল্প আয়ের মানুষগুলোর পছন্দ ট্রেনযাত্রা। সরকার আন্তরিকতার সঙ্গে নির্বিঘেœ রেলসেবা জনগণের কাছে পৌঁছে দেওয়ার জন্য কাজ করে যাচ্ছে। ট্রেনের সেবা নির্বিঘেœ জনগণের কাছে পৌঁছাতে সরকারের পাশাপাশি সাধারণ মানুষদের সচেতন হতে হবে। যাদের বিনা টিকিটে ভ্রমণের প্রবণতা আছে, সেই অভ্যাস বাদ দিতে হবে। রেলকে শুধু রাষ্ট্রের সম্পদ না ভেবে জনগণের সম্পদ ভাবতে হবে। সম্মিলিত প্রচেষ্টায় রেলভ্রমণ হোক সব ধরনের বিড়ম্বনামুক্ত।
আব্দুর রউফ
শিক্ষার্থী, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়
সূত্র:শেয়ার বিজ, নভেম্বর ১৬, ২০২০