শিরোনাম

কক্সবাজারে ২০২২ সালের মধ্যে ট্রেন

কক্সবাজারে ২০২২ সালের মধ্যে ট্রেন

একরামুল হক:
দীর্ঘ প্রতীক্ষার অবসান ঘটিয়ে চট্টগ্রাম (দোহাজারী)-কক্সবাজার রেললাইন নির্মাণকাজ শুরু হয়েছে। গত ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত এই প্রকল্পের প্রায় ২০ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে। নির্দিষ্ট মেয়াদের মধ্যে কাজ শেষ করতে দিন–রাত কাজ চালিয়ে যাচ্ছে প্রকল্পকাজে নিয়োজিত ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। তবে জমি অধিগ্রহণপ্রক্রিয়া দেরি হওয়ায় নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে প্রকল্পের কাজ শেষ করা নিয়ে সংশয় আছে।

সম্প্রতি সরেজমিন দেখা গেছে, দক্ষিণ চট্টগ্রামের চন্দনাইশ, সাতকানিয়া ও লোহাগাড়ায় রেললাইনের স্থান চিহ্নিত করে রেলপথ তৈরির জন্য মাটি ভরাটের কাজ বেশ এগিয়েছে। রাত–দিন ২৪ ঘণ্টা কাজ করে যাচ্ছেন শ্রমিকেরা। মাটি ভরাটের কাজ শেষ হলে মূল রেললাইন স্থাপনের কাজ শুরু হবে।

রেলের প্রকৌশলীরা জানান, প্রকল্পের আওতাধীন চারটি বড় সেতুসহ ২৫টি সেতুর নির্মাণকাজও শুরু হয়েছে। বড় সেতুগুলো নির্মিত হচ্ছে মাতামুহুরী নদী, মাতামুহুরী শাখানদী, খরস্রোতা শঙ্খ এবং বাঁকখালী নদীর ওপর।

প্রকল্প কার্যালয় সূত্র জানায়, গত বছরের জুলাই থেকে ভৌত কাজ শুরু হয়। যদিও দুটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে চুক্তি হয় ২০১৭ সালের সেপ্টেম্বরে। কিন্তু স্থানীয় জেলা প্রশাসন জমি বুঝিয়ে পেতে দেরি করার কারণে চুক্তির প্রায় ১০ মাস পর ভৌত অবকাঠামোগত কাজ শুরু হয়।

রেলওয়ে সূত্র জানায়, এই প্রকল্পকে পৃথক দুটি লটে ভাগ করা হয়েছে। একটি হচ্ছে চট্টগ্রামের দোহাজারী থেকে কক্সবাজারের চকরিয়া পর্যন্ত ৫০ কিলোমিটার এবং দ্বিতীয় লট হচ্ছে চকরিয়া থেকে কক্সবাজার সদর পর্যন্ত। চীনের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান চায়না রেলওয়ে ইঞ্জিনিয়ারিং করপোরেশন (সিআরইসি) ও দেশীয় তমা কনস্ট্রাকশন কোম্পানি এবং চায়না সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং কনস্ট্রাকশন করপোরেশন (সিসিইসিসি) ও দেশীয় ম্যাক্স ইনফ্রাস্ট্রাকচার লিমিটেড পৃথক দুই লটের কার্যাদেশ পায়। কাজ শুরুর তিন বছরের মধ্যে এই প্রকল্পের কাজ শেষ করার কথা। কিন্তু বাস্তবায়নকাজ দেরিতে শুরু হওয়ায় ২০২২ সালের আগে নতুন লাইনের ওপর রেলের চাকা ঘোরার সম্ভাবনা কম বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট প্রকৌশলীরা। জানতে চাইলে রেলের প্রকল্প পরিচালক মফিজুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, ২০১৭ সালে দুটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে রেলের চুক্তি হয়। কিন্তু জমি পেতে দেরি হওয়ায় প্রকল্প বাস্তবায়নকাজও দেরিতে শুরু হয়। তিনি জানান, প্রকল্পের ৩৯টি সেতুর মধ্যে ২৫ টির নির্মাণকাজ শুরু হয়েছে। রেললাইন বসানোর জন্য রাস্তা ভরাটের কাজও শুরু হয়েছে। এ মুহূর্তে ২০ শতাংশের মতো কাজ শেষ হয়েছে। ২০২২ সালেই সারা দেশের রেলওয়ে নেটওয়ার্কের সঙ্গে কক্সবাজার যুক্ত হবে, এটা নিশ্চিত করে বলা যায়।

রেলওয়ে সূত্র জানায়, প্রকল্পটি বাস্তবায়নে ব্যয় হচ্ছে ১৮ হাজার ৩৪ কোটি টাকা। ভূমির মালিকদের ক্ষতিপূরণ দিতে ২ হাজার ৩৫০ কোটি টাকা দেওয়া হয়েছে চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার জেলা প্রশাসনকে। নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে বাস্তবায়ন সম্ভব না হলে প্রকল্প ব্যয় বাড়তে পারে। এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি) এ প্রকল্পে অর্থের জোগান দিচ্ছে।

রেলপথ মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, এই প্রকল্পের আওতায় চট্টগ্রামের দোহাজারী থেকে রামু পর্যন্ত ৮৮ কিলোমিটার, রামু থেকে কক্সবাজার পর্যন্ত ১২ কিলোমিটার এবং রামু থেকে ঘুমধুম পর্যন্ত ২৮ কিলোমিটার রেলপথ নির্মিত হবে। ১২৮ কিলোমিটার রেলপথের মধ্যে চট্টগ্রামের সাতকানিয়া ও লোহাগাড়া; কক্সবাজারের চকরিয়া, ডুলাহাজারা, ঈদগাহ, রামু, সদর ও উখিয়া এবং নাইক্ষ্যংছড়ির ঘুমধুম স্টেশন নির্মাণকাজও শুরু হচ্ছে। কিন্তু রামুতে নতুন সেনানিবাস হওয়ায় রামু-ঘুমধুম রেলপথ নির্মাণকাজ আপাতত থেমে গেছে।

সুত্র:প্রথম আলো, ১০ জানুয়ারি ২০১৯


About the Author

RailNewsBD
রেল নিউজ বিডি (Rail News BD) বাংলাদেশের রেলের উপর একটি তথ্য ও সংবাদ ভিত্তিক ওয়েব পোর্টাল।

3 Trackbacks & Pingbacks

  1. top casino uk
  2. browning auto 5
  3. Visit Website

Comments are closed.