শিরোনাম

সেবাবঞ্চিত গেণ্ডারিয়া রেলস্টেশনের যাত্রীরা

সেবাবঞ্চিত গেণ্ডারিয়া রেলস্টেশনের যাত্রীরা

আল ফাতাহ মামুন: যাতায়াতের সুবিধার ফলে যাত্রীর কমতি নেই গেণ্ডারিয়া রেল স্টেশনে। কিন্তু প্রয়োজনীয় অবকাঠামো ও পর্যাপ্ত লোকবলের অভাবে সেবা পাচ্ছেন না রাজধানীর গুরুত্বপূর্ণ এ রেলস্টেশনের যাত্রীরা।

এছাড়া মাদকাসক্ত ব্যক্তিদের অবাধ বিচরণে যাত্রীদের নিরাপত্তাও রয়েছে হুমকির মুখে।প্রতিদিন প্রায় পাঁচ হাজার যাত্রী ঢাকা-নারায়াণগঞ্জে যাতায়াত করেন। গেণ্ডারিয়া থেকে বিপুলসংখ্যক যাত্রী ঢাকা এবং নারায়ণগঞ্জে আসা-যাওয়া করে।

বিশেষ করে ব্যবসায়ী, শিক্ষার্থী এবং কর্মজীবীরা কর্মস্থলে পৌঁছতে এবং বাসায় ফিরতে এ স্টেশন ব্যবহার করে থাকেন। কিন্তু স্টেশনটিতে যাত্রীদের জন্য কোনো বিশ্রামাগার কিংবা ছাউনি নেই।

নেই শৌচাগারের ব্যবস্থা। আর যাত্রীসংখ্যার তুলনায় প্ল্যাটফরমের আয়তনও ছোট। ফলে ভিড়ের সময় দাঁড়ানোরও জায়গা হয় না সব যাত্রীর।কমলাপুর যাওয়ার জন্য স্টেশনের প্ল্যাটফরমে অপেক্ষমাণ যাত্রী মাহবুবুল আলম জানান, গেণ্ডারিয়া থেকে বাসে কমলাপুর, মতিঝিল পর্যন্ত যেতে সময় লাগে কমপক্ষে এক থেকে দেড় ঘণ্টা।

কিন্তু এই স্টেশন থেকে ট্রেনে মাত্র ১০ মিনিটেই কমলাপুর যাওয়া যায়। এছাড়া নারায়ণগঞ্জ, পাগলা, চাষাঢ়ায় যেতেও তুলনামূলক কম সময় লাগে। কিন্তু এখানে যাত্রীদের জন্য ন্যূনতম সুযোগ-সুবিধাটুকুও নেই।গেণ্ডারিয়া রেলস্টেশন সূত্রে জানা গেছে, ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ পথে ট্রেন চলাচল করে তিনটি। এই তিনটি ট্রেন প্রতিদিন ১৬ বার করে মোট ৩২ বার যাওয়া-আসা করে। বর্তমানে স্টেশনটিতে কর্মকর্তা-কর্মচারী আছেন পাঁচজন।

অথচ ১৯৮৯-৯০ সময়েও এখানে ২২ জন কর্মকর্তা-কর্মচারী কর্মরত ছিলেন। এখন আগের তুলনায় যাত্রী ও ট্রেনের সংখ্যা বাড়লেও লোকবল পাঁচ গুণের বেশি কমে গেছে। স্টেশন মাস্টার মো. শাহাদাত হোসেন যুগান্তরকে বলেন, এ স্টেশনে ন্যূনতম সেবা দেয়ার জন্য যে পরিমাণ লোকবল দরকার, আমাদের সে পরিমাণ লোকবল নেই।

ফলে সুষ্ঠু সেবা দিতে আমরা হিমশিম খাচ্ছি। আমাদের মতো করে আমরা চেষ্টা করছি। বর্তমানে স্টেশনটিতে তিনটি পদের বিপরীতে স্টেশন মাস্টার আছেন দু’জন, ছয়জন পয়েন্টম্যান থাকার কথা থাকলেও আছেন তিনজন।

আগে ল্যাবম্যান কর্মরত থাকলেও এখন ওই পদে কেউ নেই। মাদকাসক্ত ব্যক্তিদের অবাধ চলাফেরায় যাত্রীদের নিরাপত্তাও হুমকির মুখে।

যাত্রীদ জসিম উদ্দিন জানান, এ স্টেশনকে মাদক কেনাবেচার বড় প্ল্যাটফর্ম বললেও ভুল হবে না। আগে এখানে প্রকাশ্যে মাদক কেনাবেচা হতো। এখন অবশ্য তা লুকিয়ে আড়ালে আবডালে হয়।

এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে সহকারী স্টেশন মাস্টার জহুরেন্নেসা যুগান্তরকে বলেন, আমাদের স্টেশনের কোনো বাউন্ডারি নেই। ফলে এখানে অপরাধের ঝুঁকি বেশি। যাত্রীরা তো বটেই, এমনকি আমরাও হুমকির মুখে থাকি। আগে এখানে দোকান বসিয়ে গোপনে মাদক কেনাবেচা হতো।

আমরা উচ্ছেদ অভিযান করে ভ্রাম্যমাণ দোকানগুলো সরিয়ে দেয়ার পর মাদকের আনাগোনা এখন আর নেই। তবে এলাকার কিছু প্রভাবশালী ও বখাটে মাদক ব্যবসায়ী হাঁটার ওপর মাদক বেচাকেনা করতে পারে।

পাশেই পুলিশ ফাঁড়ি আছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী আমাদের যথেষ্ট সহযোগিতা করছে। স্টেশনের অবকাঠামোর বিষয়ে স্টেশন মাস্টার এবং সহকারী স্টেশন মাস্টার বলেন, পদ্মা সেতু প্রকল্পের আওতায় এ স্টেশনটিও রয়েছে। এটি পুরোপুরি নতুনভাবে করা হবে। তাই এখন আর কোনো কাজ করছে না।

তারপরও সম্প্রতি স্টেশনের অবকাঠামোগত কিছু কাজ করা হয়েছে। আশা করি, সুন্দর যাত্রীসেবা নিশ্চিত করতে পারব।

সুত্র:যুগান্তর, ০২ নভেম্বর ২০১৯



About the Author

RailNewsBD
রেল নিউজ বিডি (Rail News BD) বাংলাদেশের রেলের উপর একটি তথ্য ও সংবাদ ভিত্তিক ওয়েব পোর্টাল।

Comments are closed.