নিাুজ ডেস্ক:
ঠাকুরগাঁওয়ে আন্তঃনগর ট্রেন চালু করার দাবি দীর্ঘদিনের। এ বিষয়ে প্রতিশ্রুতি মিললেও এখনো তা বাস্তবায়ন হয়নি। তবে কর্তৃপক্ষ বলছে, শিগগিরই জেলায় আন্তঃনগর ট্রেন চালুর সম্ভাবনা রয়েছে। আর এটি হলেই ঠাকুরগাঁওয়ে রেলসেবার কাঙ্ক্ষিত মান নিশ্চিত করা যাবে।
ঠাকুরগাঁও রেল কর্তৃপক্ষের তথ্যমতে, ৯৮২ কোটি টাকা ব্যয়ে রেলপথ মন্ত্রণালয়ের আওতায় পার্বতীপুর থেকে ঠাকুরগাঁও হয়ে পঞ্চগড় পর্যন্ত ১৫০ কিলোমিটার মিটার গেজ রেলপথকে ডুয়াল গেজে রূপান্তর ও আধুনিকায়নের কাজ শুরু হয় ২০১০ সালে। একাধিকবার মেয়াদ বাড়িয়ে ২০১৬ সালের জুলাইয়ে প্রকল্পের ৯৫ শতাংশ কাজ শেষ করে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান তমা ও ম্যাক্স কনস্ট্রাকশন। পরে শতভাগ কাজ সম্পন্ন হলে পঞ্চগড়ে এসে প্রত্যাশিত আন্তঃনগরের পরিবর্তে শাটল ট্রেন উদ্বোধন করেন রেলমন্ত্রী।
তবে ওইদিন জনগণের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে দ্রুত আন্তঃনগর ট্রেন চালু করা হবে বলে মন্ত্রী আশ্বস্ত করেন। কিন্তু অজ্ঞাত কারণে এখনো ঢাকা-ঠাকুরগাঁও-পঞ্চগড় সরাসরি আন্তঃনগর ট্রেন চালু হয়নি। পরে আন্তঃনগর ট্রেন চালুর দাবিতে বিক্ষোভ ও মানববন্ধনসহ বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করে দুই জেলার মানুষ। এরপর একাধিকবার দায়িত্বশীল কর্তাব্যক্তিরা সরাসরি ট্রেন চালু করার কথা বললেও তা কার্যকর হয়নি। এদিকে প্রধানমন্ত্রীও গত ২৯ মার্চ আন্তঃনগর ট্রেন চালু করা হবে বলে ঘোষণা দিয়েছিলেন। এ ব্যাপারে সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর থেকে রেল মন্ত্রণালয়ে চিঠিও পাঠানো হয়।
এদিকে আধুনিকায়ন হলেও লোকবলের অভাবে ঠাকুরগাঁও ও পঞ্চগড়ের আখানগর, রুহিয়া, কিসমত, নয়নবুরুজ, শীবগঞ্জ, ভোমরাদহ ও বাজনাহার স্টেশনের কার্যক্রম বন্ধ হয়ে আছে। অভিযোগ রয়েছে ঠাকুরগাঁও রেলস্টেশনে কালোবাজারে টিকিট বিক্রির। রয়েছে টিকিটের অপ্রতুলতাও।
এ বিষয়ে কথা হলে জেলার শিক্ষাবিদ মনোতোষ কুমার দে ও সুশাসনের জন্য নাগরিকের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল লতিফ বলেন, ঠাকুরগাঁও রেলস্টেশনের জন্য প্রতিদিন অন্তত ১০০ টিকিট প্রয়োজন। অথচ এর বিপরীতে বর্তমানে বরাদ্দ আছে ৩২টি টিকিট। তাও সবসময় পাওয়া যায় না। বেশির ভাগ সময় টিকিট কাটতে হয় দিনাজপুর থেকে দালালের মাধ্যমে। যে কারণে টিকিটপ্রতি ২০০-৩০০ টাকা বেশি গুনতে হয়।
অভিযোগের বিষয়ে কথা হলে ঠাকুরগাঁও রোড রেলস্টেশনের স্টেশনমাস্টার আখতারুল ইসলাম জানান, নয়দিন আগেই আগাম টিকিট ছাড়া হয়। নির্দিষ্ট তারিখের তিন-চারদিন আগেই সব টিকিট বিক্রি হয়ে যায়। কেউ যদি যাত্রী সেজে আগাম টিকিট কেটে রেখে পরে সেটা বেশি দামে বিক্রি করে, তবে তা ঠেকানো সম্ভব নয়।
তিনি আরো বলেন, জনবল সংকটের কারণে দুই জেলার কয়েকটি স্টেশনের কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। তাছাড়া এখানে রেলওয়ের কোনো পরিচ্ছন্নতা কর্মী নেই। এ পদের জন্য কোনো বরাদ্দও নেই। আর আন্তঃনগর ট্রেন চালুর বিষয়ে এখনো কোনো নির্দেশনা পাওয়া যায়নি। তবে আশা করা হচ্ছে, অল্প সময়ের মধ্যেই সরাসরি ট্রেন চলাচল শুরু হবে।
সুত্র:বণিক বার্তা, অক্টোবর ২৭, ২০১৮