শিরোনাম

পার্বতীপুর-রংপুর রুটে বাণিজ্যিকভাবে আবারও ছুটছে ডেমু ট্রেন


।। রেল নিউজ ।।
দিনাজপুরে বাণিজ্যিকভাবে বহুল প্রত্যাশিত ডেমু ট্রেন চলাচল শুরু হয়েছে। দেশীয় প্রযুক্তিতে সচল করা ডেমু ট্রেনটি গতকাল (রোববার, ৯ অক্টোবর) থেকে পার্বতীপুর-রংপুর রুটে চলাচল করছে। ৩৫০ যাত্রী নিয়ে প্রতিদিন ২ ট্রিপ দিচ্ছে ট্রেনটি।

এর আগে শনিবার (৮ অক্টোবর) ট্রেনটি আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করেন রেলমন্ত্রী নূরুল ইসলাম সুজন। এতে খুশি যাত্রী ও রেল কর্মকর্তারা।

২০১৩ সালে চীন থেকে আনা ২০ সেট ডেমু ট্রেন বাংলাদেশ রেলে যুক্ত হয়। তবে চার বছরের মাথায় ২০১৭ সালে যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে ট্রেনগুলো অচল হয়ে যায়।

চীনা প্রযুক্তিতে কম্পিউটার সফটওয়্যারের মাধ্যমে ট্রেনগুলো নিয়ন্ত্রণ করা হতো; যা জটিল ও রক্ষণাবেক্ষণ ব্যয়বহুল ছিল। তবে দেশের প্রকৌশলীরা নিজেদের প্রযুক্তি ব্যবহার করে দিনাজপুরের পার্বতীপুর ডিজেল ওয়ার্কশপে সচল করেছেন একটি ডেমু ট্রেন, জানান বাংলাদেশ আণবিক শক্তি কমিশনের সাবেক কর্মকর্তা প্রকৌশলী আসাদুজ্জামান।

তিনি বলেন, এটি অনেক সাশ্রয়ী। কোটি টাকার কাজ লাখ টাকায় হয়েছে। এই ট্রেনে ঘণ্টায় মাত্র ২০ লিটার তেল খরচ হয়। এরপর যত ট্রেন কেনা হচ্ছে সব কটি ডেমু ট্রেনের মতোই।

পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ে রাজশাহীর মহাব্যবস্থাপক অসীম কুমার তালুকদার বলেন, ‘২০১৩ সালে ২০ সেট ডেমু ক্রয় করা হয়। বর্তমানে এ ধরনের ট্রেন সকালে কর্মজীবী নারী ও পুরুষকে আনা-নেয়ার জন্য ব্যবহার হয়। তবে বাংলাদেশে এ ধরনের ট্রেন স্যুট করে না। এ ছাড়া বৃষ্টির কারণে সমস্যাও দেখা দিচ্ছিল। সম্প্রতি বুয়েটের কয়েকজন প্রকৌশলী এটা দেখে চেষ্টা করেন সমাধানের। পরে দেশীয় প্রযুক্তির মাধ্যমে তারা এটা সচল করেন। আগামী ১৫ দিন এটি বাণিজ্যিকভাবে রংপুর পর্যন্ত চলবে। এটা আমরা পর্যবেক্ষণ করব। সফল হলে ট্রেনটি স্বল্প দূরত্বে চলাচল করবে।’

রেলকে আধুনিকায়ন করতে নানা উন্নয়নমুখী প্রকল্প হাতে নেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন রেলমন্ত্রী নূরুল ইসলাম সুজন।

তিনি বলেন, ‘ডেমু ট্রেনটি সচল আছে। আমাদের প্রকৌশলীরা মডিউল পরিবর্তন করে পার্বতীপুরের রেলওয়ে প্রকৌশলী ও বাইরের প্রকৌশলীদের সহযোগিতায় আরও একটি ট্রেন সচল করেছেন। ট্রেনটির দুটি ইঞ্জিন আছে; এটি দুদিকে চলাচল করতে পারে।’

রেলমন্ত্রী বলেন, দ্রুত মানুষকে সার্ভিস দিতে এই ট্রেনগুলো আমদানি করা হয়। ২০১৩ সালে ৬৩০ কোটি টাকা ব্যয়ে রেলে যুক্ত হয় চীন থেকে আনা ২০ সেট ডেমু ট্রেন।
তিনি আরও বলেন, ২০টি ডেমু ট্রেনের মধ্যে পার্বতীপুরের কোলোকায় মেরামত করা দুটিসহ আপাতত ৬টি চলাচল করছে। বাকি ১৪টি মেরামতের ট্রায়াল অব্যাহত রয়েছে। ডেমু হচ্ছে একটি স্বল্প দূরত্বের ট্রেন। চায়না থেকে এই ট্রেনগুলো আমদানি করা হয়। কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য ট্রেনগুলো তারা হস্তান্তর করলেও প্রযুক্তি ও পাসওয়ার্ডগুলো রেখে দেয় তাদের মুখাপেক্ষী করতে। আমাদের বিশেষজ্ঞ প্রকৌশলীগণ অনেক গবেষণার মাধ্যমে ট্রায়াল ট্রিটমেন্ট সম্পন্ন করে অচল ডেমুকে সচল করার সক্ষমতা অর্জন করেছে।

জানা গেছে, প্রতিদিন ডেমু ট্রেনটি পার্বতীপুর-রংপুর রুটে চলাচলের সময় বিকাল ৫টা ১৫ মিনিটে পার্বতীপুর থেকে ছেড়ে যাবে এবং বিকাল ৬টা ১০ মিনিটে রংপুরে পৌঁছবে। একই রুটে বিকাল ৬টা ২০ মিনিটে রংপুর ছেড়ে সন্ধ্যা ৭টা ২০ মিনিটে পার্বতীপুরে ফিরে আসবে। পরবর্তী কর্মদক্ষতা সন্তোষজনক হলে দিনাজপুর-পার্বতীপুর রেল রুটে ডেমু ট্রেন চালানো হবে।


Comments are closed.