শিরোনাম

পুরোনো ইঞ্জিন নতুন করে উদ্বোধন করল রেল!

পুরোনো ইঞ্জিন নতুন করে উদ্বোধন করল রেল!

নিউজ ডেস্ক: গত দুই বছরে রেলের বহরে যুক্ত হয়েছে ৪৬টি ইঞ্জিন। এর মধ্যে ব্রডগেজ ইঞ্জিন রয়েছে ১৬টি ও মিটারগেজ ৩০টি। এগুলোর মধ্যে ২৮টি ইঞ্জিন বিভিন্ন রুটে আগেই চালানো শুরু করেছে রেলওয়ে। এর মধ্যে ১০টি মিটারগেজ ইঞ্জিন নিন্মমানের। বাকি ২০টি নিয়েও রয়েছে অভিযোগ। কয়েক মাস চালানোর পর পুরোনো সেই ইঞ্জিনগুলো নতুন করে উদ্বোধন করল রেলওয়ে। গতকাল আনুষ্ঠানিকভাবে ইঞ্জিনগুলো উদ্বোধন করা হয়।

তথ্যমতে, ২০১৯ সালের ১৪ জানুয়ারি ৪০টি ব্রডগেজ ইঞ্জিন কেনায় চুক্তি করা হয়। এতে ব্যয় হচ্ছে এক হাজার ১১৬ কোটি ২২ লাখ টাকা। যুক্তরাষ্ট্রের প্রগ্রেস রেল লোকোমোটিভ ইনকরপোরেশন আটটি করে পাঁচ ধাপে ইঞ্জিনগুলো সরবরাহ করবে। প্রথম ধাপে আটটি ইঞ্জিন আসে গত বছর মার্চে। আর দ্বিতীয় ধাপের আরও আটটি ইঞ্জিন আসে গত ডিসেম্বরে। এর মধ্যে মার্চে আসা ইঞ্জিনগুলো ট্রায়াল রানশেষে পশ্চিমাঞ্চলে যুক্ত হয়েছে। বিভিন্ন ট্রেনে এসব ইঞ্জিন সংযোজন করা হয়েছে।

ডিজেল ইলেকট্রিক (ডিই) এ ইঞ্জিনগুলোর সক্ষমতা ৩ হাজার ২৫০ বিএইচপি হর্সপাওয়ার। এগুলো ঘণ্টায় ১৩০ কিলোমিটার গতিতে চলতে সক্ষম। যদিও লাইনের সীমাবদ্ধতার কারণে ইঞ্জিনগুলো ৬০-৭০ কিলোমিটারের বেশি গতিতে চালানো যাবে না। আর প্রতিটি ইঞ্জিনের এক্সেল লোড ১৮ দশমিক ৮ টন।

এদিকে মিটারগেজ ৩০টি ইঞ্জিন কেনা হয়েছে দক্ষিণ কোরিয়ার হুন্দাই রোটেম কোম্পানি থেকে। এর মধ্যে ১০ ইঞ্জিন কেনায় হুন্দাই রোটেমের সঙ্গে রেলওয়ের চুক্তি সই হয় ২০১৮ সালের ১৭ মে। এর চুক্তিমূল্য ছিল ২৯৭ কোটি ৬৩ লাখ টাকা। এ প্রকল্পে ঋণ দিয়েছে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি)। ২০২০ বছর আগস্টে ইঞ্জিনগুলো দেশে এলেও নিম্ন মানের কারণে সেগুলো বসিয়ে রাখা হয়। প্রায় ১৪ মাস পর গত বছর অক্টোবরে ইঞ্জিনগুলো চালু করা হয়। তবে পরীক্ষামূলক পরিচালনার সময় এসব ইঞ্জিন বেশ কয়েকবার চলতি পথে বিকল হয়ে পড়ে।

এসব ইঞ্জিনে (লোকোমোটিভ) মূল ইঞ্জিন, অলটারনেটর, কম্প্রেসার ও ট্রাকশন মোটর চুক্তি অনুযায়ী সংযোজন করা হয়নি। এজন্য তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছিল। গত বছর ফেব্রুয়ারি মাসে এ-সংক্রান্ত প্রতিবেদন জমা দেয় কমিটি। চুক্তির শর্ত লঙ্ঘনের কারণে হুন্দাই রোটেমের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের সুপারিশ করে কমিটি। যদিও তাদের মধ্যে কোনো ধরনের শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়া হয়নি।

অপর ২০টি মিটারগেজ ইঞ্জিন কেনায় ২০১৯ সালের ১৮ মার্চ চুক্তি করা হয়। এর চুক্তিমূল্য ছিল ৬৭৪ কোটি ১০ লাখ টাকা। এ প্রকল্পে ঋণ দিয়েছে কোরিয়ার ইকোনমিক ডেভেলপমেন্ট ফান্ড (ইডিসিএফ)। এগুলোরও মূল ইঞ্জিনের মডেল পরিবর্তন করে হুন্দাই রোটেম। এগুলোর মধ্যে ২০২০ সালের জুনে প্রথম চালানে ১০টি ইঞ্জিন দেশে আসে। বাকি ১০টি আসে গত বছর নভেম্বরে। ২০২০ সালের জুনে আসা ইঞ্জিনগুলো পূর্বাঞ্চলে বিভিন্ন ট্রেনে কয়েক মাস আগেই সংযোজন করা হয়েছে। এর মধ্যে একটি ইঞ্জিন দুর্ঘটনায় বেশ খানিকটা ক্ষতিগ্রস্থও হয়।

পুরোনো ইঞ্জিন নতুন করে উদ্বোধনের বিষয়ে জানতে চাইলে রেলওয়ে ও রেলপথ মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।

উল্লেখ্য, বাঁশি বাজিয়ে ও পতাকা তুলে ইঞ্জিনগুলো উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। গতকাল গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে শেখ মুজিব ভ্রাম্যমাণ রেল জাদুঘর এবং এসব রেল ইঞ্জিন উদ্বোধন করেন তিনি। রেলপথমন্ত্রী মো. নুরুল ইসলাম সুজন, রেলপথ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি এবিএম ফজলে করিম চৌধুরী, রেলপথ সচিব মো. হুমায়ুন কবীরসহ সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা এ সময় কমলাপুর স্টেশনে উপস্থিত ছিলেন।

সূত্র:শেয়ার বিজ


About the Author

RailNewsBD
রেল নিউজ বিডি (Rail News BD) বাংলাদেশের রেলের উপর একটি তথ্য ও সংবাদ ভিত্তিক ওয়েব পোর্টাল।