শিরোনাম

২০২৩ সালের জুনেই শেষ হবে চট্টগ্রাম- কক্সবাজার রেললাইন নির্মাণকাজ

নির্মাণাধীন চট্টগ্রাম- কক্সবাজার রেললাইন।নির্মাণাধীন চট্টগ্রাম- কক্সবাজার রেললাইন

সৈয়দ আবদুল ওয়াজেদ:বহুল প্রত্যাশিত চট্টগ্রাম-কক্সবাজার সিঙ্গেল লাইন ডুয়েলগেজ রেললাইন নির্মাণকাজ আগামী বছরের অর্থাৎ ২০২৩ সালের জুন মাসেই শেষ হবে। বিশ্ব জুড়ে মহামারি কোভিড-১৯ সংক্রমণের সংকট, মূল পরিকল্পনার প্রতিকূলে নানা সমস্যা সত্ত্বেও চট্টগ্রাম থেকে কক্সবাজার পর্যন্ত এই রেলসংযোগের নির্মাণকাজ বর্তমানে ৬৫ শতাংশ থেকে ৬৬ শতাংশ শেষ হয়ে গেছে। এই রেল যোগাযোগের আওতায় চট্টগ্রাম-কক্সবাজার রেল চলাচলের জন্য কালুরঘাট পুরোনো মাল্টিপারপাস সেতুর পাশাপাশি নতুন আরেকটি সেতু নির্মাণ করা হবে। তবে পুরোনো সেতুটিকেও চালু রাখা হবে। প্রকল্প পরিচালক মফিজুর রহমান এ তথ্য জানান।

মফিজুর রহমান বলেন, ‘এই প্রকল্পে ভূমি অধিগ্রহণ সংক্রান্ত জটিলতা একটি বড় বাধা ছিল। এই বাধা এখন আর নেই। পাশাপাশি প্রকল্পের কাজ সম্পাদনে প্রকল্পের অর্থায়নকারী আন্তর্জাতিক সংস্থা এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক (এডিবি) যথাসময়েই অর্থ ছাড় করছে। এডিবি ঠিকাদারদের কাজ সম্পাদনের ইনভয়েস নিজেরাই পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে যথানিয়মে যথাসময়ে অর্থ ছাড় করে দিচ্ছে। এই প্রকল্পে এডিবি অর্থায়ন করছে প্রায় সোয়া ৮ হাজার কোটি টাকারও বেশি। প্রকল্পের জন্য ভূমি অধিগ্রহণে ভূমির যে মূল্য পরিশোধ করতে হয়েছে—তা দিয়েছে বাংলাদেশ সরকার। ট্রান্স এশিয়ান রেলওয়ে করিডোর প্রকল্পের আওতায় দেশের অভ্যন্তরীণ এবং আন্তর্জাতিক কানেক্টিভিটি স্থাপনের উদ্দেশ্যকে সামনে রেখে প্রকল্পটি যথানিয়মে অগ্রসর হচ্ছে।’

সংশ্লিষ্ট অপর একটি সূত্র জানায়, ১৯৯২ সালে ‘এশিয়ান ল্যান্ড ট্রান্সপোর্ট ইনফ্রাস্ট্রাকচার ডেভেলপমেন্ট (অলটিড)’ প্রকল্পের আওতায় ট্রান্স এশিয়ান রেলওয়ে নেটওয়ার্কের (টিএআর) তিনটি ইউরো-এশিয়া সংযোগ সড়কের মধ্যে সাউদার্ন করিডোর-১ অন্যতম প্রকল্প হিসেবে গৃহীত হয়। যার আওতায় দোহাজারি হতে রামু হয়ে কক্সবাজার পর্যন্ত ১০০ দশমিক ৮৩১ কিলোমিটার এবং রামু থেকে মিয়ানমারের কাছে গুনদুম পর্যন্ত ২৮ দশমিক ৭৫২ কিলোমিটার সিঙ্গেল লাইন ডুয়েলগেজ রেললাইন নির্মাণ প্রকল্প সরকার অনুমোদন দেয়। নানা প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে ২০১৭ সালে প্রকল্পটির দরপত্র চূড়ান্ত হয়। ২০১৮ সাল থেকে নির্মাণকাজ পুরোদমে শুরু হয়ে যায়। তবে মিয়ানমারের পক্ষ থেকে তাদের অংশের রেঙ্গুন থেকে গুনদুম পর্যন্ত ৩০০ কিলোমিটার রেললাইন স্থাপনে এখনো পর্যন্ত কোনো উদ্যোগ দেখা যায়নি। ফলে ট্রান্স এশিয়ান করিডোরের এই অংশের কাজের কোনো অগ্রগতি নেই।

একটি সূত্র ইত্তেফাককে জানায়, দোহাজারি থেকে মিয়ানমার সীমান্তের নিকটবর্তী গুনদুম পর্যন্ত ১১৫ কিলোমিটার সংযোগের মধ্যে রামু পর্যন্ত বাংলাদেশ অংশের রেললাইন নির্মাণ হয়ে যাওয়াটা একটি উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি। মিয়ানমার তাদের অংশে রেললাইন নির্মাণের উদ্যোগ নিলে বাংলাদেশ অংশে রামু থেকে গুনদুম পর্যন্ত ২৮ কিলোমিটার সিঙ্গেল লাইন ডুয়েলগেজ রেল ট্র্যাক দ্রুত তৈরি করে দেওয়া যাবে। এদিকে মিয়ানমারের আরাকান রাজ্যের আকিয়াব সংলগ্ন সিটোয়েতে বাংলাদেশ মিশনের সাবেক হেড অব দ্য মিশন অবসরপ্রাপ্ত মেজর মো. এমদাদুল ইসলাম ইত্তেফাককে বলেন, ট্রান্স এশিয়ান রেল সংযোগের রামু থেকে গুনদুম হয়ে মিয়ানমার অভিমুখী সাউদার্ন করিডোর-১-এর এই অংশটির কাজের অগ্রগতি স্থবির হয়ে আছে। এর পিছনে ভূ-রাজনৈতিক কোনো কারণ আছে কি না তা অনুসন্ধান করে দেখা যেতে পারে।

সূত্র:ইত্তেফাক, ২২ জানুয়ারি ২০২২


About the Author

RailNewsBD
রেল নিউজ বিডি (Rail News BD) বাংলাদেশের রেলের উপর একটি তথ্য ও সংবাদ ভিত্তিক ওয়েব পোর্টাল।

Comments are closed.