শিরোনাম

ভারতের প্রথম আন্ডারওয়াটার মেট্রো টানেল কলকাতায়, ২০২৩ এর মধ্যে চালু


।। আন্তর্জাতিক ।।

ভারতের প্রথম আন্ডার ওয়াটার মেট্রো টানেল ২০২৩ এর মধ্যে তৈরি হতে চলেছে কলকাতায়। প্রায় ১৬.৬ কিমি দীর্ঘ রাস্তা অতিক্রম করে কলকাতা ও হাওড়ার মাঝে হুগলি নদীর তলা দিয়ে সংযোগ স্থাপন করবে।


এই টানেলটি নদীর ৩৩ মিটার গভীরে গিয়ে রয়েছে। ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রো এবার জুড়তে চলেছে কলকাতা-হাওড়াকে। এই মেট্রো লাইনটি হুগলি নদীর নীচে একটি অংশ দিয়ে কলকাতা হয়ে হাওড়া থেকে সল্টলেককে সংযুক্ত করবে। এটি বর্তমানে সেক্টর ফাইভ এবং শিয়ালদহ স্টেশনগুলির মধ্যে চালু রয়েছে। এবং সবচেয়ে অবাক করা বিষয়টি হল এটি ভারতের প্রথম আন্ডার ওয়াটার মেট্রো টানেল। জানা গিয়েছে ২০২৩ সালের জুনের মধ্যে এর কাজ সম্পন্ন হবে।

ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রোর প্রান্তিক স্টেশন হাওড়া মেট্রো স্টেশনের কাজ শেষ পর্যায়ে চলছে। হাওড়া স্টেশনের মধ্যে এই স্টেশনের দৈর্ঘ্য ১১০ মিটার, চওড়া ৬৫ মিটার এবং গভীরতা ৩৩ মিটার। এটাই এশিয়ার গভীরতম মেট্রো স্টেশন হিসেবে তৈরি করা হয়েছে। এই স্টেশন থেকে দুটি টানেল রচনা এবং প্রেরণা গঙ্গার তলা দিয়ে বড় বাজার এলাকায় উঠেছে।


সাইট সুপারভাইজার সুনীল ঘোষ বলেছেন, জরুরী পরিস্থিতিতে যাত্রীদের সরিয়ে নেওয়ার জন্য ওই টানেলে হেঁটে যাওয়ার রাস্তাও থাকবে। ওই ওয়াটার টানেল এলাকার ভিতরে আচমকা যদি কোনও যান্ত্রিক ত্রুটি দেখা দেয়, সেই কথাটা মাথায় রেখেই ওই গুরুত্বপূর্ণ প্যাসেজের ব্যবস্থা করা হয়েছে। ইস্ট-ওয়েস্টের হাওড়া স্টেশনে এখন অবধি ৮০ ভাগ কাজ শেষ হয়েছে। আশা করা যাচ্ছে ২০২৩ এর মধ্যেই ভারতের প্রথম আন্ডারওয়াটার মেট্রো পরিষেবা শুরু হয়ে যাবে।

ভারতের প্রথম আন্ডার ওয়াটার মেট্রো টানেলের কাজ প্রায় শেষের দিকে

সিনিয়র ইঞ্জিনিয়ার তুষার আচার্য্য জানিয়েছেন, গঙ্গায় নিচ দিয়ে যাওয়া দুটি টানেলের প্রত্যেকটির দৈর্ঘ্য প্রায় ৫৫০ মিটার। এই দুটি টানেলের কাজ টানেল বোরিং মেশিন দিয়ে ২০১৬ সালে শুরু হয়। ২০১৯ সালে এই কাজ শেষ হয়। এরপর স্টেশন তৈরীর কাজে হাত দেয় কেএমআরসিএল। স্টেশনের কাজ দ্রুত গতিতে চলছে। যাত্রীসংখ্যার কথা বিবেচনা করে হাওড়া মেট্রো স্টেশনে চারটি প্ল্যাটফর্ম তৈরি করা হয়েছে। ট্রেন প্লাটফর্মে ঢুকলে দুই দিক দিয়েই যাত্রীরা ওঠানামা করতে পারবেন।

মেট্রো স্টেশনে আত্মহত্যা রুখতে প্লাটফর্ম স্ক্রীনিং ডোর বসানো হয়েছে। ট্রেন স্টেশনে ঢোকার পর তবেই এই স্লাইডিং ডোর খুলবে। তখনই যাত্রীরা ওঠানামা করতে পারবেন। পুরোটাই সেন্সর সিস্টেমের দ্বারা নিয়ন্ত্রণ করা হবে। যাত্রীরা ৩৩ টি এস্কেলেটর এবং সাতটি লিফট দিয়ে ওঠানামা করতে পারবেন। যাত্রীদের নিরাপত্তার কথা ভেবে ১২ টি ফায়ার এক্সিট পয়েন্ট তৈরি করা হয়েছে।

এছাড়াও ২০০ টি সিড়ি দিয়ে ওঠানামা করা যাবে। স্টেশনের কাজ পুরোপুরি শেষ হলে মেট্রো রেল দিয়ে ট্রায়াল রান শুরু হবে। ট্রায়াল রান সফল হলে ২০২৩ সাল থেকেই চালু হতে পারে কলকাতা ও হাওড়ার মধ্যে সংযোগকারী মেট্রো পরিষেবা।

উল্লেখ্য, প্রকল্পটি আগে ২০২১ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে শেষ হওয়ার কথা ছিল, কিন্তু মধ্য কলকাতার বোবাজারে টানেলের কাজ চলাকালীন দুর্ঘটনার কারণে বিলম্বিত হয়েছে। একইরকম ঘটনার প্রায় তিন বছর পর মে মাসে ভূগর্ভস্থ কাজের সময় বেশ কয়েকটি বাড়িতে ফাটল দেখা দেয়। এই কারণেই প্রকল্পটি বিলম্বিত হচ্ছে। এর পাশাপাশি, ২০১৯ সালের ৩১শে আগস্ট একটি টানেল খনন মেশিন একটি অ্যাকুয়াফায়ারে আঘাত করেছিল, যা মাটিকে গ্রাস করেছিল এবং এলাকার বেশ কয়েকটি ভবন ধসে পড়েছিল।

সূত্রঃ এশিয়ানেট নিউজ বাংলা


Comments are closed.