।। নিউজ ডেস্ক ।।
বাংলাদেশের মংলা পোর্ট হয়ে ভারতের উত্তরপূর্ব অংশ নেপাল এবং ভুটানের মধ্যে আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম পরিচালনার জন্য যোগাযোগ অবকাঠামো মনোন্নয়নের মাধ্যমে নীলফামারীর চিলাহাটি ও ভারতের হলদিবাড়ি সীমান্তকে গুরুত্ব দেয়া হয়েছে। বিশেষ করে বাণিজ্যিক সুবিধা জোরদারের লক্ষে ২০১৯ সালের ২৭ জুন চিলাহাটি রেলওয়ের কাজ শুরু করা হয়।
চিলাহাটি-হলদিবাড়ি ব্রডগেজ রেলপথ সংযোগের পর ২০২০ সালের ১৭ ডিসেম্বর পন্যবাহী ও ২০২১ সালের ২৭ মার্চ আন্তঃদেশীয় যাত্রীবাহী মিতালি এক্সপ্রেস যাত্রীবাহী ট্রেনের রেলগাড়ী চলাচলের উদ্বোধন করেছিলেন দুই দেশের সরকার প্রধান শেখ হাসিনা ও নরেন্দ্রমোদী। পণ্যবাহী ট্রেন চলতি বছরের ১ আগষ্ট থেকে নিয়মিত চলাচল করলেও করোনা ভাইরাসের কারনে যাত্রীবাহী ট্রেন মিতালি এক্সপ্রেস এখনও চালু হয়নি।
তবে চিলাহাটি এলাকায় প্রকল্প ব্যয় বৃদ্ধি হলেও বরাদ্দের অভাবে নীলফামারীর সীমান্তের চিলাহাটি আন্তর্জাতিক রেলষ্টেশনের মূল ভবনের নির্মাণ কাজ থমকে গেছে। গত ৯ মাস আগে মাটি খুড়ে পাইল ক্যাপের উপর ৯২টি পিলারের রড স্থাপনের পর আর কোন কাজের অগ্রগতি হয়নি। এমন কি চিলাহাটি রেলষ্টেশন ঘিরে যে ২.৪৬ কিলোমিটার বিস্তৃত চারটি লুপ লাইনের নির্মাণ কাজও অসম্পূর্ণ থেকে গেছে বলে এলাকাবাসী অভিযোগ করেছে।
০৫ নভেম্বর (শুক্রবার) সরেজমিনে দেখা যায়, চিলাহাটি আন্তর্জাতিক রেলষ্টেশন নির্মানে মূল ভবনের পিলারের রডগুলোতে মরিচা ধরে জরাজীর্ণ হয়ে পড়েছে। ইতোমধ্যে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান তাদের সিংহভাগ শ্রমিক চিলাহাটি থেকে প্রত্যাহার করে অন্যত্র পাঠিয়ে দিয়েছে। তবে কবে নাগাদ কাজ শুরু হবে তা সঠিকভাবে কেউ বলতে পারেনি।
তবে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ম্যাক্স ইনফ্রাসট্রাকচারের প্রকল্প ব্যবস্থাপক রোকনুজ্জামান সিয়াব বলেন, প্রায় ২০ কোটি টাকার অতিরিক্ত কাজ করা হয়েছে। বাড়তি প্রকল্পর কাজগুলো ডিপিপি থেকে আরডিপি না হওয়ায় নতুন করে অর্থ সংস্থান হচ্ছে না তাই কাজ বন্ধ রাখা হয়েছে। এ ছাড়া জমি অধিগ্রহণ না হওয়ায় লুপ লাইন বসানোর কাজও শুরু করা যাচ্ছে না।
বাংলাদেশ রেলওয়ের পশ্চিম জোনের প্রকল্প পরিচালক ও বিভাগীয় প্রকৌশলী (পাকশী-২) আবদুর রহিম স্বীকার করেছেন যে নির্মাণে এই বিলম্ব অবিলম্বে সমাধান করা উচিত।
“চিলাহাটি রেলস্টেশনে লুপ লাইনের দৈর্ঘ্য বাড়ানো এবং অন্যান্য অতিরিক্ত কাজের মাধ্যমে আমরা আরও আমদানি পেতে পারি,” বলে তিনি উল্লেখ করেন।
নীলফামারীর শুল্ক, অনুশীলন ও ভ্যাট বিভাগের উপ-কমিশনার বাবুল ইকবাল বলেন,বিষয়টি নিয়ে আমরা কর্তৃপক্ষকে চিঠি দিয়েছি। তিনি আরও বলেন, “আমরা সীমিত জনবল, সরঞ্জাম এবং অতিরিক্ত প্রচেষ্টার মাধ্যমে পরিস্থিতি সামলেছি। চলতি বছরের ১ আগস্ট থেকে ভারত থেকে চিলাহাটি হয়ে আমদানি থেকে ৩ কোটি টাকার বেশি শুল্ক আদায় হয়েছে।
নীলফামারী চেম্বার অফ কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সহ-সভাপতি ফারহানুল হক বলেন, “আমরা সরকারকে চিলাহাটি রেলস্টেশনকে সুসজ্জিত করার পরামর্শ দিই যাতে আন্তর্জাতিক ব্যবসা-বাণিজ্য সহজতর হয়।।
নীলফামারীর জেলা প্রশাসক হাফিজুর রহমান চৌধুরী বলেন, “অগ্রাধিকার ভিত্তিতে চিলাহাটি আন্তর্জাতিক রেলষ্টেশন ভবন ও লুপ লাইন নির্মাণের জন্য আমরা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে অর্থ বরাদ্দ ও জমি অধিগ্রহণের প্রস্তাব মঞ্জুর করতে বলেছি”।
সূত্রঃ দৈনিক জনকণ্ঠ