রফিকুল ইসলাম:
চীনা ভাষায় রেলকে বলে হোয়া ঠ্রোয়া। আর মেট্রো রেলকে বলে তি থিয়ে। প্রত্যন্ত গ্রাম থেকে শহর। চীনের সবখানে পৌঁছে গেছে রেল পরিষেবা। আর এই রেল পরিষেবা চীনাদের জীবনকে করে তুলেছে সহজ। সব বয়সী চীনারাই ঝুঁকছে এই রেল পরিষেবার দিকে। ফলে চীনে বিমান এবং দ্রুতগতির রেলের ভাড়া প্রায় কাছাকাছি। তবে অনেক কম ভাড়াতেও চীনের এক প্রান্ত থেকে আরেক প্রান্তে ভ্রমণ করা যায়। তবে এতে সময় লাগে প্রায় তিন গুণ বেশি। দূরপাল্লার রেলের পাশাপাশি চীনের প্রায় প্রতিটি শহরে রয়েছে মেট্রো রেল। প্রতিটি রুটে এই মেট্রো রেল এক থেকে পাঁচ মিনিটের ব্যবধানে চলাচল করে। তবু রেলের প্রতিটি কামরা ভরা থাকে যাত্রীতে। চীনাদের জীবনে চলার অন্যতম সঙ্গী হলো রেল।
বহু বছর ধরে চীনের লক্ষ্য ছিল দেশজুড়ে দ্রুতগতির রেল প্রতিষ্ঠা করা। বর্তমানে তারা পুরো দেশে সেই দ্রুতগতির রেল চালুর ব্যবস্থা করেছে। সাম্প্রতিক সময়ে রেল খাতে তারা ব্যয় করেছে বিপুল পরিমাণ অর্থ; যার পরিমাণ ২ দশমিক ৪ ট্রিলিয়ন ইউয়ান, প্রায় ৩৬০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। চীনজুড়ে ২৭ হাজার কিলোমিটার রেললাইন রয়েছে।
রেল খাতে বিপুল পরিমাণ অর্থ বিনিয়োগের ফলে চীন অর্থনৈতিকভাবেও উন্নত হয়েছে। কারণ দ্রুত চলাচল করতে পারার কারণে চীনের প্রতিটি শহরের মধ্যে যোগাযোগব্যবস্থার উন্নতি হয়েছে।
আগে চীনের কয়েকটি অঞ্চলকে কেন্দ্র করে ব্যাবসায়িক কর্মকাণ্ড পরিচালিত হলেও বর্তমানে পুরো চীনে এর বিস্তার লাভ করেছে। এতে সময়ের অপচয় রোধ যেমন হয়েছে, তেমনি কমেছে বেকারত্ব। বাড়ছে কাজের সুযোগ, অর্থনীতি হচ্ছে আরো শক্তিশালী।
চীনের রেল বিভাগ সূত্র মতে, ২০১১ সালে দেশটিতে দ্রুতগতির রেল যোগাযোগের শুরু। দ্রুতগতির এই রেলব্যবস্থার কারণে আগে বেইজিং থেকে কুনমিং পৌঁছতে যেখানে সময় লাগত ৩৫ ঘণ্টা, বর্তমানে সময় লাগছে সাড়ে ১০ ঘণ্টা। এটি ননস্টপ রেল। আর দ্রুতগতির যেসব রেল স্টপেজ ধরে, সেগুলোর পৌঁছতে সময় লাগছে সাড়ে ১২ ঘণ্টা ও ১৫ ঘণ্টা।
দেশটিতে দ্রুতগতির রেল চলে ১৬০ থেকে ২৯৯ কিলোমিটার বেগে। ফলে গোয়াংঝু থেকে এক হাজার ৩০০ কিলোমিটার পথ অতিক্রম করে কুনমিংয়ে পৌঁছতে সময় লাগছে সর্বোচ্চ সাড়ে ছয় ঘণ্টা।
ওয়াং লি নামে এক ছাত্রী গতকাল শনিবার কুনমিং থেকে যাচ্ছিলেন সাউথকোচ এলাকায়। জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘মেট্রো রেলে চড়ি, ভালো লাগে। প্রয়োজনটা সহজে মেটাতে পারি।’
সুত্র:কালের কন্ঠ, ১০ জুন, ২০১৯