শিরোনাম

সৈয়দপুর রেলওয়ে কারখানায় কোচ মেরামতের রেকর্ড

সৈয়দপুর রেলওয়ে কারখানায় কোচ মেরামতের রেকর্ড

নিউজ ডেস্ক: আসন্ন কোরবানির ঈদে রেলপথে ঘরমুখো মানুষের চাপ মোকাবিলায় নানা সংকটের মধ্যেও রেকর্ড সংখ্যক কোচ মেরামত করা হয়েছে নীলফামারীর সৈয়দপুর রেলওয়ে কারখানায়। যা কারখানার ইতিহাসে এই প্রথম। এবারের ঈদকে ঘিরে ৮৮টি কোচ মেরামত করা হয়েছে। এর মধ্যে ৭২টি ব্রডগেজ ও ১৬টি মিটার গেজ কোচ ছিল। মেরামত হওয়া এসব কোচ ইতোমধ্যে হস্তান্তর করা হয়েছে রেলওয়ের পাকশী ও লালমনিরহাট ট্রাফিক বিভাগে। প্রয়োজনের তুলনায় মাত্র ২৩ শতাংশ জনবল নিয়ে এই সফলতা দেখিয়েছি কারখানাটি।

কারখানা সূত্র জানায়, সৈয়দপুর রেলওয়ে কারখানাটিয় ২ হাজার ৮৫৯ জনবলের বিপরীতে কর্মরত রয়েছেন মাত্র ৭২৮ জন। যা প্রয়োজনের মাত্র ২৩ শতাংশ। এই ২৩ শতাংশ শ্রমিক নিয়ে উৎপাদন কার্যক্রম চলছে দেশের বৃহত্তম এই কারখানায়। যাত্রীবাহী কোচ, মালবাহী ওয়াগন মেরামত ছাড়াও এখানে তৈরি হচ্ছে ১২ হাজার ধরনের রেলওয়ের যন্ত্রাংশ।

এবার ঈদে ৬৫টি কোচ মেরামতের লক্ষ্যমাত্রা থাকলেও ৮৮টি কোচ মেরামত করে বিভিন্ন রুটে পাঠিয়েছে রেলওয়ে কারখানা। যাত্রীদের সুবিধার কথা বিবেচনা করে এই সেবা দিয়েছে কারখানা সংশ্লিষ্টরা।ঈদ ঘিরে কারখানার ক্যারেজ শপ (উপ-কারখানা), পেইন্ট শপ, হেবি রিপিয়ারিং শপ, জিওএইচসহ ২৯টি শপে ছিল কর্মযজ্ঞ।কারখানার জেনারেল ওভার হোলিং(জিওএইচ) শপের মিস্ত্রি রফিকুল ইসলাম বলেন, যখন আমরা কাজ করি তখন আন্তরিকতার অভাব থাকে না। বিশেষ করে ঈদকে ঘিরে আমরা অত্যন্ত নিবেদিত হয়ে কাজ করি। এই সময়ে সেবার বিষয়টি মাথায় থাকে।

একই বিভাগের আরেক শ্রমিক রাশেদ আলম বলেন, আমরা খুশি আমাদের শ্রমের ফলে ৮৮টি কোচ ব্যবহার উপযোগী করতে পেরেছি। এসব কোচে ঘরে ফিরতে পারবে মানুষজন। পরিবারের সঙ্গে আনন্দ ভাগাভাগি করতে পারবে।

dhakapost

তসু উদ্দিন নামে অপর শ্রমিক বলেন, জনবল দিন দিন কমে যাচ্ছে। সংকটের দিকে যাচ্ছে কারখানাটি। দক্ষ শ্রমিকরা চলে যাচ্ছে। নতুন শ্রমিক আসছে না। একজন শ্রমিককে দক্ষ হতে হলে সময় লাগে। আমি মনে করি আমরা অবসরে যাওয়ার আগে নতুন শ্রমিক নিয়োগ দেওয়া প্রয়োজন, তাহলে কারখানা উপকৃত হবে। সচল থাকবে।জিওএইচ শপের সিনিয়র সহকারী প্রকৌশলী আরিফুর রহমান বলেন, অন্যান্য সময়ের চেয়ে ঈদের সময়ে টার্গেট বেশি থাকে। সে কারণে কঠোর পরিশ্রম করেন এখানকার শ্রমিকরা। ওভারটাইম দিয়ে এই টার্গেট পূরণ করে নেওয়া হয়। যাত্রীদের সেবার কথা ভেবে শ্রমিকরা কাজ করেও আনন্দ পান।

তিনি আরও বলেন, আমার শপে ১৩২ জন শ্রমিকের প্রয়োজন, রয়েছে মাত্র ৩৯ জন। এ দিয়ে যথাযথভাবে উৎপাদন কাজ হয় না। একজন শ্রমিককে অনেক কাজ করতে হচ্ছে। দ্রুত জনবল ঘাটতি পূরণ করা হলে কারখানাটি আরও সফলতা দেখাতে পারবে।সৈয়দপুর রেলওয়ের বিভাগীয় তত্ত্বাবধায়ক (ডিএস) সাদেকুর রহমান বলেন, এই কারখানায় মেরামত হওয়া কোচগুলো চলাচল করবে ঢাকা-খুলনা, ঢাকা-পঞ্চগড় রুটে। এছাড়াও পশ্চিমাঞ্চলের বিভিন্ন রুটে যুক্ত হওয়া ছাড়াও বিশেষ দুটি ট্রেন চালানো হবে এখানকার বগি দিয়ে।

তিনি আরও বলেন, জনবল সংকটের মধ্যেও শ্রমিকদের কর্মযজ্ঞ লক্ষ্যমাত্রা ছাড়ানোর বিষয়ে মুল চালিকা শক্তি হিসেবে কাজ করেছে। তারাই এর নেপথ্যের মূল কারিগর। জনবল সংকট পূরণে আমরা প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণ করেছি।উল্লেখ্য, সৈয়দপুর রেলওয়ে কারখানায় পুরোনো ট্রেনকে নতুন করার কাজ চলে আসছে ব্রিটিশ আমল থেকে। ব্রিটিশ সরকার ১৮৭০ সালে সৈয়দপুর রেলওয়ে কারখানাটি স্থাপন করে। সেই সময় সৈয়দপুর কারখানায় কর্মকর্তা, কর্মচারী ও শ্রমিকের সংখ্যা ছিল প্রায় ১০ হাজারের মতো। ধীরে ধীরে জনবল কমে যাওয়ার পরও এ কারখানায় প্রতিদিন একটি কোচ ও একটি ওয়াগন মেরামত করা হয়। এছাড়া রেলওয়ের নানা ধরনের যন্ত্রাংশ তৈরি করা হয় এখানে।

সূত্র:Dhaka post.com


About the Author

RailNewsBD
রেল নিউজ বিডি (Rail News BD) বাংলাদেশের রেলের উপর একটি তথ্য ও সংবাদ ভিত্তিক ওয়েব পোর্টাল।

Comments are closed.