।।নিউজ ডেস্ক।।
শাওন আলীর গন্তব্য চাঁপাইনবাবগঞ্জ। সকালে নরসিংদী থেকে কমলাপুর এসেছিলেন বলে জানান। তিনি বলেন, নরসিংদী থেকে চাঁপাইনবাবগঞ্জে সরাসরি ট্রেনে যাওয়ার ব্যবস্থা নেই। তাই কমলাপুরে আসতে বাধ্য হয়েছেন। প্রায় দুই ঘণ্টা লাইনে অপেক্ষার পর যখন কাউন্টারের কাছে গেলেন, তখন তাঁকে জানানো হয়েছে, টিকিট শেষ হয়ে গেছে। গণপরিবহন বন্ধ থাকায় শাওন আলীর মতো কয়েক শ মানুষ কমলাপুর রেলস্টেশনে এসে টিকিট পাননি।
স্টেশনে দায়িত্বরত এক আনসার সদস্য প্রথম আলোকে বলেন, সকাল থেকেই কমলাপুরে মানুষের উপচে পড়া ভিড় ছিল। বাস বন্ধ থাকায় সব মানুষ ট্রেনে করে গন্তব্যে যাওয়ার চেষ্টা করছে। তবে টিকিটের সীমাবদ্ধতা থাকায় অনেকেই অপেক্ষার পর ফিরে গেছে।
বেশি দুর্ভোগ শিক্ষার্থীদের
পরিসংখ্যান ব্যুরোতে চাকরির পরীক্ষা দিতে আজ সকালে ঢাকায় এসেছিলেন ইন্টারন্যাশনাল ইসলামিক ইউনিভার্সিটি অব চিটাগাং (আইআইইউসি) শিক্ষার্থী মাইনুল হক। স্টেশনে প্রায় দেড় ঘণ্টা লাইনে দাঁড়িয়ে এই শিক্ষার্থী টিকিট পাননি।
কীভাবে ঢাকায় এলেন, জানতে চাইলে তিনি বলেন, গতকাল রাতে বাসে করে রওনা দিয়েছিলেন। আজ সকাল সাতটায় ঢাকায় এসে পৌঁছেছেন। ঢাকায় এসে জানতে পারলেন, আজ গণপরিবহন বন্ধ থাকবে। পরে পরীক্ষা শেষে কমলাপুরে এসে দেখেন, টিকিট পাওয়া যাচ্ছে না। ঢাকায় পৌঁছে মিরপুরের একটি পরীক্ষাকেন্দ্রে যেতেও বেশ দুর্ভোগে পড়তে হয়েছে বলে জানান এই শিক্ষার্থী।
মাইনুল হকের মতো শত শত শিক্ষার্থী নিজ গন্তব্যে ফিরতে কমলাপুর রেলস্টেশনে ভিড় করছেন। তাঁদের মধ্যে বেশির ভাগই টিকিট পাচ্ছেন না।
দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষার পর যাঁরা ঘরে ফেরার টিকিট পেয়েছেন, তাঁদের বেশ উচ্ছ্বসিত দেখা গেছে। টিকিট পাওয়া ব্যক্তিদের মধ্যে শিক্ষার্থীরাও ছিলেন। আবার বিশেষ ব্যবস্থায় কয়েকজন শিক্ষার্থী অপেক্ষার পর টিকিট পেয়েছেন।
এমন একজন শিক্ষার্থী আনোয়ার হোসেন। চাকরির পরীক্ষা দিতে রাজশাহী থেকে ঢাকায় এসেছেন তিনি। আনোয়ার প্রথম আলোকে বলেন, জরুরি প্রয়োজনে স্টেশন কর্তৃপক্ষ টিকিট বিক্রি করে। নির্ধারিত ভাড়ার চেয়ে ওই টিকিট কিছুটা বেশি দামে নিতে হয়। সেখানেও অনেক ভিড় ছিল।
হাস্যোজ্জ্বল ভঙ্গিতে এই চাকরিপ্রার্থী বলেন, ৪০ মিনিট চেষ্টার পর তিনি রাজশাহী যাওয়ার টিকিট পেয়েছেন। রাজশাহী যেতে নিয়মিত ভাড়া ৩৪০ টাকা।
যা বলছে কর্তৃপক্ষ
অন্য ছুটির দিনের তুলনায় আজ যাত্রীদের বেশি চাপ ছিল বলে জানিয়েছেন কমলাপুর রেলস্টেশনের স্টেশন ম্যানেজার আনোয়ার হোসেন। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, গণপরিবহন বন্ধ থাকার কারণে রেলের ওপর চাপ পড়েছে। অন্য শুক্রবারে এত যাত্রী দেখা যায়নি। তিনি আরও বলেন, মহামারির কারণে দাঁড়িয়ে যাওয়া যাত্রীদের টিকিট বিক্রি করা হচ্ছে না। এ জন্য মানুষ সমস্যায় পড়েছে। তবে যেসব যাত্রীর ঘরে ফেরা খুবই জরুরি, তাঁদের জন্য বিকল্প ব্যবস্থায় টিকিট বিক্রি করা হয়। ওই পদ্ধতিতে সকাল থেকেই টিকিট বিক্রি হচ্ছে।