শিরোনাম

পর্যটকদের জন্য বিশেষ ট্রেন


।। নিউজ ডেস্ক ।।
যাত্রাপথে কখনো চোখে পড়বে নদীর সৌন্দর্য। মুগ্ধ করবে টিলা–পাহাড়ি এলাকার প্রাকৃতিক বৈচিত্র্য। যেতে যেতে কখনো দুই ধারে দেখা মিলবে বিস্তীর্ণ ধানখেতের নয়নাভিরাম দৃশ্য।চট্টগ্রাম থেকে কক্সবাজার পর্যন্ত চলতি পথের এই মনোরম পরিবেশ দেখার সুযোগ করে দিতে যাচ্ছে বাংলাদেশ রেলওয়ে। চট্টগ্রামের দোহাজারী থেকে কক্সবাজার পর্যন্ত চলছে রেললাইনের নির্মাণকাজ। কাজ শেষে হলে শুরু হবে ট্রেন চলাচল।

প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ভরপুর কক্সবাজারে যাতায়াতে পর্যটকদের জন্য বিশেষ ট্রেন চালুর উদ্যোগ নিয়েছে রেলওয়ে। এ জন্য প্রাথমিক উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাব (পিডিপিপি) প্রণয়নের প্রক্রিয়া চলছে। এটি অনুমোদন হলে পূর্ণাঙ্গ ডিপিপি তৈরি করা হবে। কোনো প্রতিবন্ধকতা না থাকলে এই ট্রেনে চড়ার সুযোগ পেতে অপেক্ষা করতে হবে অন্তত চার বছর।

রেলওয়ে সূত্র জানায়, কক্সবাজারগামী পর্যটকদের যাতায়াতের জন্য ট্যুরিস্ট ট্রেন পরিচালনার লক্ষ্যে ৫৪টি মিটারগেজ (এমজি) যাত্রীবাহী গাড়ি সংগ্রহ পিডিপিপি নেওয়া হয়েছে। এই পিডিপিপির ওপর ইতিমধ্যে পরিকল্পনা কমিশনে বৈঠকও হয়েছে। এখন তা পুনর্গঠনের প্রক্রিয়া চলছে। এই প্রকল্পের সম্ভাব্য ব্যয় ধরা হয়েছে ৪৯১ কোটি টাকা। বাংলাদেশ সরকার ও বিদেশি প্রকল্প সাহায্যের মাধ্যমে এই প্রকল্প বাস্তবায়ন করার পরিকল্পনা রয়েছে রেলওয়ের।বিজ্ঞাপনবিজ্ঞাপন

দোহাজারী–কক্সবাজার ডুয়েল গেজ রেললাইন প্রকল্পের কাজের অগ্রগতি এখন ৬৯ শতাংশ। সাধারণ ট্রেনের পাশাপাশি ট্যুরিস্ট ট্রেন পরিচালনার জন্য ২০১৯ সালে উদ্যোগ নেয় রেলওয়ে। ওই বছরের ১৬ জুলাই ৫৪টি মিটারগেজ ট্যুরিস্ট কার কেনার জন্য প্রকল্প নেওয়া হয়েছিল। কিন্তু অর্থায়নের ব্যাপারে অনিশ্চয়তা দেখা দেয়। এ ছাড়া মিটারগেজ কোচ কেনার ব্যাপারেও নিরুৎসাহিত করা হয়। এসব কারণে প্রকল্পটি স্থবির হয়ে পড়ে।

সম্প্রতি আবার প্রকল্পটি বাস্তবায়নে তোড়জোড় শুরু হয়েছে। গত বছরের ৬ সেপ্টেম্বর এই প্রকল্পের পিডিপিপি রেলপথ মন্ত্রণালয়ে পাঠায় রেলওয়ে পূর্বাঞ্চল। সরকারি তহবিলের পাশাপাশি বিদেশি অর্থায়নে প্রকল্প বাস্তবায়নের ব্যাপারে প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। এ জন্য ৫৭ দশমিক ১২ মিলিয়ন ডলারের মধ্যে বিদেশি প্রকল্প সাহায্য খাতে অর্থবরাদ্দ ধরা হয়েছে ৪২ দশমিক ৪২ মিলিয়ন ডলার। আর সরকারিতহবিল থেকে পাওয়া যাবে ১৪ দশমিক ৭ মিলিয়ন ডলার।

রেলওয়ের কর্মকর্তারা জানান, ৫৪টি কোচের মধ্যে রয়েছে ৬টি ট্যুরিস্ট কার, ১৩টি শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত স্লিপার কার, ১১টি শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত প্রিমিয়ার চেয়ারকোচ, ১১টি শীতাতপনিয়ন্ত্রিত চেয়ারকোচ, ৭টি পাওয়ার কার এবং ৬টি শীতাতপনিয়ন্ত্রিত ডাইনিং কার। এ ছাড়া থাকবে গার্ড ব্রেক। যাত্রীরা যেকোনো একটি কোচে উঠলেই হলো, এরপর পুরো ট্রেনে যাতায়াত করতে পারবেন।

প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ভরপুর কক্সবাজারে যাতায়াতে পর্যটকদের জন্য বিশেষ ট্রেন চালুর উদ্যোগ নিয়েছে রেলওয়ে। এ জন্য প্রাথমিক উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাব প্রণয়নের প্রক্রিয়া চলছে।

মিটারগেজ না ব্রডগেজ?
রেলওয়ে পূর্বাঞ্চল থেকে পাঠানো কক্সবাজারগামী পর্যটকদের যাতায়াতের জন্য ট্যুরিস্ট ট্রেন পরিচালনায় ৫৪টি মিটারগেজ যাত্রীবাহী গাড়ি সংগ্রহের ব্যাপারে গত বছরের ৭ অক্টোবর বৈঠক হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন রেলসচিব মো. সেলিম রেজা।
সভা সূত্র জানায়, ওই সভায় রেলওয়ের পূর্বাঞ্চলের প্রধান যন্ত্র প্রকৌশলী মো. বোরহান উদ্দিন জানান, রেলওয়ে কক্সবাজারগামী পর্যটকদের যাতায়াতের জন্য ট্যুরিস্ট ট্রেন পরিচালনার লক্ষ্যে ৫৪টি মিটারগেজ যাত্রীবাহী গাড়ি সংগ্রহে পিডিপিপি প্রণয়ন করেছে। প্রকল্পের মেয়াদ ২০২২ সালের ১ জুলাই থেকে ২০২৫ সালের জুন পর্যন্ত।

সভায় জানানো হয়, দোহাজারী থেকে কক্সবাজার পর্যন্ত ডুয়েল গেজ রেললাইন নির্মাণকাজ চলমান রয়েছে। এ ছাড়া আখউড়া থেকে লাকসাম পর্যন্ত ডুয়েল গেজ ডাবল রেললাইন নির্মাণ এবং বিদ্যমান রেললাইনকে ডুয়েল গেজে রূপান্তরের কাজ চলমান আছে।

টঙ্গী থেকে আখাউড়া ও লাকসাম থেকে চট্টগ্রাম হয়ে ষোলোশহর পর্যন্ত মিটারগেজ ডাবল রেললাইন আছে। ষোলোশহর থেকে দোহাজারী পর্যন্ত সিঙ্গেল লাইন বিদ্যমান। এই মিটারগেজ রেললাইনকে ডুয়েল গেজে রূপান্তরের লক্ষ্যে ডিপিপি প্রণয়ন ও অনুমোদনের প্রক্রিয়াকরণের কাজ এখনো শুরু হয়নি।
এ ছাড়া টঙ্গী থেকে আখাউড়া, লাকসাম থেকে চট্টগ্রাম, চট্টগ্রাম থেকে দোহাজারী পর্যন্ত বিদ্যমান মিটারগেজ রেললাইনকে ডুয়েল গেজে রূপান্তর না করা এবং দোহাজারী থেকে কক্সবাজার পর্যন্ত নির্মাণাধীন ডুয়েল গেজ রেললাইন নির্মাণ সমাপ্ত না হওয়া পর্যন্ত এই রুটে ব্রডগেজ যাত্রীবাহী ট্রেন পরিচালনা করা সম্ভব হবে না। অর্থাৎ এই লাইনের সম্পূর্ণ অংশ ব্রডগেজ করতে আরও সময় লাগবে।

সূত্র: প্রথম আলো


About the Author

RailNewsBD
রেল নিউজ বিডি (Rail News BD) বাংলাদেশের রেলের উপর একটি তথ্য ও সংবাদ ভিত্তিক ওয়েব পোর্টাল।

Comments are closed.