শিরোনাম

কর্মচারী নিয়োগ দেন স্টেশন মাস্টার

কর্মচারী নিয়োগ দেন স্টেশন মাস্টার

সাগর খান:
জনবল সংকটের অজুহাত দেখিয়ে কর্মচারী নিয়োগ দিয়েছেন বগুড়ার আদমদীঘি উপজেলার সান্তাহার জংশনের স্টেশন মাস্টার রেজাউল করিম ডালিম। এসব ভুয়া কর্মচারী স্টেশনে বছরের পর বছর চাকরি করছেন। তাঁরা কাউন্টারে বসে টিকিট বিক্রি, অবৈধ দোকান থেকে দৈনিক টাকা তোলা, মাইকে ট্রেনের সময় ঘোষণাসহ নানা কাজ করে থাকেন।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, সান্তাহার স্টেশনে আব্দুল করিম, শান্ত প্রামাণিক, মিলন হোসেন, আব্দুল আজিজ, বাবু হোসেনসহ কয়েকজন দীর্ঘদিন ধরে নানা দায়িত্ব পালন করে আসছেন। তাঁদের মধ্যে শান্ত কাউন্টারে থেকে টিকিট বিক্রি করেন। তাঁর মাধ্যমে কাউন্টার থেকে টিকিট বের হয়ে কালোবাজারিদের হাতে চলে যায়। ফলে কাউন্টারে এসে টিকিট পায় না সাধারণ যাত্রীরা। পরে যাত্রীরা নির্ধারিত মূল্যের চেয়ে অনেক বেশি টাকা দিয়ে টিকিট কিনে থাকে।

সান্তাহার পৌর শহরের বাসিন্দা এমরান হোসেন বলেন, ‘রেলওয়ের কর্মচারী না হয়েও কাউন্টারের চেয়ারে বসে টিকিট বিক্রি করে। কাউন্টারে টিকিট না পাওয়া গেলে এদের কাছ থেকে বেশি দাম দিয়ে টিকিট পাওয়া যায়। এ বিষয়টি স্টেশন মাস্টারসহ স্থানীয় রেল কর্মচারীদের জানিয়েও কোনো প্রতিকার পাওয়া যায়নি।’ তিনি অভিযোগ করেন, অবৈধ কর্মচারীরা প্ল্যাটফর্ম ও এর আশপাশের দোকান থেকে প্রতিদিন টাকা তুলে স্টেশন মাস্টারকে দিয়ে থাকেন। একই সঙ্গে তাঁরা যাত্রীদের কাছ থেকে টিকিট আদায় করেন।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে কয়েকজন দোকানি জানান, প্রতিদিন প্রতিটি দোকানের জন্য ২০ টাকা দিতে হয়। আব্দুল করিমসহ কয়েকজন এ টাকা তুলে থাকেন।
এ বিষয়ে শান্ত ও আব্দুল করিম রেলের কোনো কর্মচারী নয় স্বীকার করে বলেন, ‘আমরা প্রায় ১০-১২ বছর ধরে স্টেশনে রয়েছি। বিষয়টি স্টেশন মাস্টারসহ রেলওয়ের অনেক কর্মকর্তা জানেন।’ তবে তাঁরা অবৈধভাবে টিকিট বিক্রি ও দোকান থেকে টাকা তোলার বিষয়টি অস্বীকার করেন। তাঁরা জানান, স্টেশনের নানা কাজে মাস্টার ও বুকিং ক্লার্কদের সহায়তা দিয়ে থাকেন।

এদিকে স্টেশনে অবস্থানরত লাইসেন্সধারী কয়েকজন স্টল মালিক জানান, তাঁরা প্রতি মাসে রেলওয়েকে নিয়মিত ভাড়া দেন। কিন্তু প্ল্যাটফর্মের আশপাশে প্রায় ৫০টি অবৈধ দোকান থাকায় তাঁদের কেনাবেচা মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে। রেলওয়ের কোনো কর্মকর্তা এলে এসব দোকান উঠে যায়, আবার তারা চলে গেলে আগের মতো সব দোকান বসে।

এ বিষয়ে পাকশী বিভাগীয় পরিবহন কর্মকর্তা মামুনুর রশিদের (ডিটিও) সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগ করলে তিনি রিসিভ করেননি। স্টেশন মাস্টার রেজাউল করিম ডালিম বলেন, ‘স্টেশনে ৪৮ জন কর্মচারীর মধ্যে রয়েছে মাত্র ২২ জন। লোকবল সংকটের কারণে কিছু লোক রাখা হয়েছে।’ তাঁরা বেতন পান কোথা থেকে? জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘স্টেশনে বিভিন্ন কালেকশন করে তাঁরা চলেন।’ তিনি কোনো দোকান থেকে টাকা নেওয়ার কথা অস্বীকার করে বলেন, ‘এসব দোকান বছরের পর বছর ধরে রয়েছে। সে কারণে তাদের উচ্ছেদ করা সম্ভব হয় না।’

সুত্র:কালের কন্ঠ, ২ নভেম্বর, ২০১৮


About the Author

RailNewsBD
রেল নিউজ বিডি (Rail News BD) বাংলাদেশের রেলের উপর একটি তথ্য ও সংবাদ ভিত্তিক ওয়েব পোর্টাল।

1 Trackbacks & Pingbacks

  1. buy botox online 50 units

Comments are closed.