সুজিত সাহা: ঈদ উপলক্ষে বিশেষ ট্রেন সার্ভিসের জন্য পূর্বাঞ্চল রেলওয়েতে অতিরিক্ত ৭৫টি কোচ সরবরাহের ঘোষণা দিয়েছে রেল মন্ত্রণালয়। যাত্রীর চাপ বৃদ্ধি পাওয়ায় ঘোষিত সংখ্যার চেয়ে বাড়তি ১০টি কোচ মেরামতের চেষ্টা করছে রেলওয়ে ওয়ার্কশপ। কোচ সমস্যা মিটতে চললেও ইঞ্জিন সংকটের কারণে চট্টগ্রাম-ময়মনসিংহ-চট্টগ্রাম রুটে পরিকল্পিত বিশেষ ট্রেন সার্ভিস চালানো সম্ভব হবে না। একই কারণে ঈদের সময় মালবাহী কয়েকটি ট্রেনের যাত্রাও বাতিল করা হয়েছে।
রেলওয়ের বিশেষ ট্রেন-সংক্রান্ত বৈঠকের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, আগের মতোই এবার ঈদ উপলক্ষে পূর্বাঞ্চলে পাঁচ জোড়া বিশেষ ট্রেন চলাচল করবে। এর মধ্যে চট্টগ্রাম-চাঁদপুর-চট্টগ্রাম রুটে দুই জোড়া, ঢাকা-চট্টগ্রাম-ঢাকা রুটে এক জোড়া এবং ভৈরব-কিশোরগঞ্জ-ভৈরব ও ময়মনসিংহ-কিশোরগঞ্জ-ময়মনসিংহ রুটে দুই জোড়া যাত্রীবাহী ট্রেন চালানো হবে। ১৮ আগস্ট থেকে এসব ট্রেন সার্ভিস চলবে। এ বছর নতুন করে চট্টগ্রাম-ময়মনসিংহ-চট্টগ্রাম রুটে এক জোড়া অতিরিক্ত বিশেষ ট্রেন সার্ভিস চালানোর পরিকল্পনা নেয়া হলেও ইঞ্জিন সংকটের কারণে প্রস্তাবটি ফেরত পাঠায় প্রকৌশল দপ্তর।
জানা গেছে, আসন্ন ঈদে প্রথমবারের মতো চট্টগ্রাম-ময়মনসিংহ-চট্টগ্রাম রুটে এক জোড়া বিশেষ ট্রেন সার্ভিসের পরিকল্পনা নিয়েছিল রেলওয়ে। তবে এ বিষয়ে রেলওয়ের পরিবহন বিভাগের প্রস্তাবটি ফেরত দিয়েছে সংস্থার প্রকৌশল দপ্তর। ইঞ্জিন সংকটের কারণে নতুন করে ওই রুটে বিশেষ ট্রেন চালুর অনুমতি দেয়নি রেলের যান্ত্রিক প্রকৌশল বিভাগ।
সূত্র জানায়, ইঞ্জিন সংকটের কারণে ঈদের সময়ে বেশকিছু মালবাহী ট্রেনের যাত্রা বাতিল করা হয়েছে। সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, ১৯ আগস্ট রোববার রাত ১২টার পর থেকে ২২ আগস্ট বুধবার সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত হাটহাজারী ও দোহাজারীগামী জ্বালানিবাহী দুটি ট্রেন ছাড়া অন্য কোনো পণ্যবাহী ট্রেন চলাচল করবে না। ঈদে যাত্রী পরিবহন স্বাভাবিক রাখতে মালবাহী ট্রেনের ইঞ্জিনগুলো লোকাল, এক্সপ্রেস ও মেইল ট্রেনে সংযোগের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।
রেলের পরিবহন বিভাগের কর্মকর্তারা জানান, মালবাহী ট্রেনের (কনটেইনার, গুডস, তেল) জন্য নিয়মিত ১৬টি ইঞ্জিনের চাহিদা থাকলেও পাওয়া যায় ১০-১১টি ইঞ্জিন। বিভিন্ন ট্রেন সার্ভিসের জন্য মোট ১৪০টি ইঞ্জিন চাহিদার বিপরীতে পাওয়া যায় ১০০ থেকে ১০৫টি। এ কারণে ঈদের আগে ও পরে যাত্রী পরিবহন সেবা স্বাভাবিক রাখতে অতিরিক্ত ইঞ্জিন সংগ্রহ করা হয় বলে তারা উল্লেখ করেন।
এদিকে যাত্রী পরিবহন নির্বিঘ্ন করতে বিভিন্ন ট্রেনের স্ট্যান্ডার্ড কম্পোজিশনের ঘাটতি কোচগুলো পূরণের সিদ্ধান্ত নিয়েছে রেলওয়ে। এক্ষেত্রে আন্তঃনগর ট্রেনগুলোয় কোচ ঘাটতি পূরণেই বেশি জোর দেয়া হচ্ছে। যাত্রীর চাপ মাথায় রেখে ২০ ও ২১ আগস্টের ট্রেনগুলোতে কম্পোজিশনের অতিরিক্ত কোচও সংযোজন হতে পারে। বিশেষ ট্রেন সার্ভিস শুরুর দিন থেকে বিভিন্ন ট্রেনে সর্বমোট ৩২টি অতিরিক্ত কোচ সরবরাহ করা হবে।
জানতে চাইলে রেলওয়ের কর্মব্যবস্থাপক (ক্যারেজ অ্যান্ড ওয়াগন) মো. সাইফুল ইসলাম বণিক বার্তাকে বলেন, রেলের পরিকল্পনা অনুযায়ী ৭৫টি কোচ মেরামত করা হচ্ছে। এক মাস ধরে ঘোষণার অর্ধেকেরও বেশি কোচ বিভিন্ন ট্রেনে পাঠানো হয়েছে। বাকি কোচগুলো ঈদের আগে সরবরাহ করা হবে। তবে ঘোষিত সংখ্যার চেয়ে বেশি কোচ সরবরাহ করতে ওয়ার্কশপে দিন-রাত শ্রমিকরা কাজ করছেন বলে জানিয়েছেন তিনি।
সুত্র:বণিক বার্তা, আগস্ট ১৪, ২০১৮