শিরোনাম

ভোগান্তিতে পাহাড়িকা উদয়ন এক্সপ্রেসের যাত্রীরা

ভোগান্তিতে পাহাড়িকা উদয়ন এক্সপ্রেসের যাত্রীরা

সালাহউদ্দিন মোঃ রেজা:
রেল যোগাযোগের ক্ষেত্রে চট্টগ্রাম-সিলেট রুটের যাত্রীরা চরম অবহেলার শিকার। দীর্ঘদিন ধরে এ রুটে চলাচলকারী পাহাড়িকা ও উদয়ন এক্সপ্রেস ট্রেনে চলাচলকারী যাত্রীদের অভিযোগ প্রদেয় ভাড়ার বিপরীতে ন্যূনতম সুযোগ সুবিধা তারা পাচ্ছেন না। পুরনো লক্কড়-ঝক্কড় কোচ দিয়ে চলছে পাহাড়িকা ও উদয়ন। চট্টগ্রাম থেকে সকালে ছেড়ে যাওয়া পাহাড়িকা ট্রেনটি আবার সিলেট থেকে উদয়ন নামে চট্টগ্রামে আসা, উভয় দিকে ব্যবহূত কোচ, পাওয়ার কার সবকিছুই দীর্ঘদিনের পুরনো। এগুলোর সক্ষমতা ও ব্যবহার উপযোগিতা নিয়েও প্রশ্ন রয়েছে।

চট্টগ্রাম-সিলেট রুটে চলাচলকারী এ ট্রেন দুটিতে শতভাগ যাত্রী থাকে। উক্ত রুটে চলাচলকারী যাত্রীদের অধিকাংশই আর্থিকভাবে সচ্ছল হওয়ায় অনেকের অভিমত ভাড়া বাড়িয়ে হলেও আরো আরামদায়ক ও ভালো কোচ দেওয়া হোক। ট্রেনটিতে একটি মাত্র শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত চেয়ার কোচ রয়েছে। ১৯৯৭ সালে ইরান থেকে আনা উক্ত কোচটির এসি ঠিকমতো কাজ করে না, চেয়ারগুলোও জরাজীর্ণ। এ ছাড়া টয়লেটের অবস্থা যাচ্ছেতাই। এটি এসি চেয়ার কোচ হলেও দুই পাশের দরজায় প্রায়ই টিকিট ছাড়া কিংবা স্ট্যান্ডিং টিকেটধারী যাত্রীদের দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায়। কোচের এটেনডেন্টরা অনেক সময় তাদের নিয়ে বেশি ব্যস্ত থাকেন। প্রথম শ্রেণিতে দুটি কোচ থাকে। এর মধ্যে দিনে পাহাড়িকা নামে চলাচলকারী ট্রেনে একক বাথে তিনটি বসার সিট থাকে। রাতে উদয়ন নামে চলাকালে সিঙ্গেল বাথ স্লিপিং বাথ হিসেবে ব্যবহূত হয়। সে ক্ষেত্রে উপরে নিচে দুটি সিট থাকে। রাতে স্লিপিং যাত্রী হিসেবে ভ্রমণ করলে অনুধাবন করা যায় ট্রেনগুলোর প্রকৃত অবস্থা। কারণ ঝাকুনি, শব্দ, থেকে থেকে ধাক্কা সব মিলিয়ে কোচগুলোর প্রতিটি অংশের নড়বড়ে অবস্থা সহজে অনুমান করা যায়। তা ছাড়া প্রতিটি বাথের সিট এবং ভেঙে পড়া কিংবা কোনো প্রকার জোড়াতালি দিয়ে আটকে রাখা টি-টেবিল, দরজা, জানালায় অবহেলার ছাপ স্পষ্ট। এতে দুটি শোভন চেয়ার, ছয়টি শোভন কোচ, ১টি খাবার গাড়ি, দুটি গার্ড রেক এবং দুটি পাওয়ার কার রয়েছে। তা ছাড়া এটিই একমাত্র ট্রেন যাতে দুটি পাওয়ার কার ব্যবহার করা হয়। পুরনো হওয়ায় বিপদ এড়াতে দুটি পাওয়ার কার ব্যবহার করতে হয় বলে জানান রেলওয়ের কর্মকর্তারা।

কর্মকর্তারা বলেছেন, এ রুটের যাত্রীদের চাহিদা এবং রেলের আর্থিকভাবে লাভবান হওয়ার যে সুযোগ আছে তা কাজে লাগানো হচ্ছে না। ঢাকা-চট্টগ্রাম এবং ঢাকা-সিলেট রুটে ভালো কোচসহ যাত্রীদের সুবিধা অসুবিধার প্রতি যে ধরনের নজর রয়েছে তার কিয়দাংশও চট্টগ্রাম-সিলেট রুটের যাত্রীদের প্রতি নেই। পূর্বাঞ্চল রেলের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান, দেশের অনেক রুটে আছে যেখানে পর্যাপ্ত যাত্রী নেই কিংবা রুটটি আর্থিকভাবে লাভজনক নয়। তারপরও সেখানে উন্নতমানের কোচসহ সুযোগ-সুবিধা দেওয়া হয়ে থাকে।

জানা যায়, ২০১৬ সালে ইন্দোনেশিয়া হতে আনা ১শটি কোচ রেলের পূর্বাঞ্চল জোনের বিভিন্ন রুটে দেওয়ার প্রাথমিক সিদ্ধান্ত হয়। কিন্তু শেষ পর্যায়ে দেখা গেছে অনেক কম গুরুত্বপূর্ণ রুটে চলাচলকারী ট্রেনে নতুন কোচ দেওয়া হলেও চট্টগ্রাম-সিলেট রুটে একটি নতুন কোচও দেওয়া হয়নি। ফলে পুরনো কোচ দিয়ে পাহাড়িকা ও উদয়ন ট্রেন চলাচল করছে। চট্টগ্রাম থেকে সিলেটগামী এবং সিলেট থেকে চট্টগ্রাম অভিমুখী যাত্রীদের দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। কারণ চট্টগ্রাম-সিলেট যোগাযোগের ক্ষেত্রে সড়ক পথের অবস্থা খুবই করুণ। বিশেষ করে চট্টগ্রাম-সিলেট সড়কের কুমিল্লা থেকে বি-বাড়িয়া পর্যন্ত খুবই নাজুক।

রেলের এডিজি (অপারেশন) মোঃ মিয়া জাহান জানান, নতুন কোচ আসার পর সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার ভিত্তিতে উদয়ন ও পাহাড়িকা ট্রেনে নতুন কোচ দেওয়া হবে। এর জন্য আরো ৬/৭ মাস অপেক্ষা করতে হবে।

সুত্র:ইত্তেফাক, ২৬ মার্চ, ২০১৯


About the Author

RailNewsBD
রেল নিউজ বিডি (Rail News BD) বাংলাদেশের রেলের উপর একটি তথ্য ও সংবাদ ভিত্তিক ওয়েব পোর্টাল।

2 Trackbacks & Pingbacks

  1. Taurus Revolvers
  2. Your Domain Name

Comments are closed.