শিরোনাম

ট্রেনে বাড়ছে যাত্রীর চাপ, টিকিট সংকটে অর্থ হারাচ্ছে বাংলাদেশ রেলওয়ে

ছবিঃ সংগৃহীত

।। নিউজ ডেস্ক ।।
রাজধানীর কমলাপুরে দেশের কেন্দ্রীয় রেলওয়ে স্টেশন থেকে প্রতিদিন ৫২টি ট্রেন চলাচল করে। প্রতি ট্রেনে রয়েছে গড়ে ৮০০টি সিট। সব মিলিয়ে সিট সংখ্যা দাঁড়ায় ৪১ হাজার ৬০০ এর মতো। অথচ সম্প্রতি বাসভাড়া বৃদ্ধিসহ করোনা পরিস্থিতি অনেকটা নিয়ন্ত্রণে আসায় উল্লেখযোগ্য হারে বেড়েছে যাত্রীর চাপ। এতে প্রতিদিন আন্তঃনগর ও কমিউটার মিলে লক্ষাধিক যাত্রী আসা-যাওয়া করছেন রেলপথে। রেলপথ মন্ত্রণালয় স্ট্যান্ডিং টিকিট বিক্রি না করলেও যাত্রীর ভিড় কমছে না কোনো ট্রেনেই। এতে অর্থ হারাচ্ছে রেলপথ।

সোমবার (১৫ নভেম্বর) সকালে কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশনে দেখা যায়, ঢাকার কমলাপুর থেকে নেত্রকোনার মোহনগঞ্জ রুটে চলাচলকারী মহুয়া কমিউটার ট্রেনের টিকিট কাটতে দীর্ঘ লাইন। ঢাকা থেকে চট্টগ্রামসহ অন্যান্য রুটের আন্তঃনগর ট্রেনেরও একই অবস্থা। টিকিট কেটে ট্রেনে উঠছে মানুষ। কোনো ট্রেনে নেই সিট ফাঁকা। কোনোটায় আবার দাঁড়িয়েও আছে মানুষ। কয়েকদিন ধরে তা বেড়েছে বলে জানান কর্তব্যরত এক টিটিই (ট্রেন টিকিট এক্সামিনার)।

আন্তঃনগর ট্রেনে গাজীপুরের জয়দেবপুর থেকে কমলাপুর আসেন মোক্তার। আলাপকালে তিনি বলেন, ‘জয়দেবপুর থেকে এলাম কোনো টিকিট পাইনি। কাউন্টারে গিয়ে টিকিট চাইলাম বলে নেই।’ অগত্যা দাঁড়িয়েই আসতে হয় তাকে।

এদিকে কমলাপুর থেকে গাজীপুরের জয়দেবপুর যাওয়ার সময় মহুয়া কমিউটার ট্রেনে দেখা যায় যাত্রীদের ভিড়। সিট ভর্তি হয়ে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায় অনেককে। এসময় কথা হয় বাবুল মোল্লা নামের এক যাত্রীর বলেন, গুলিস্তান থেকে শ্রীপুরের বাসভাড়া ১২০ টাকা। ৩০ টাকা ট্রেনের ভাড়া। খরচ কম, সময়ও কম। কোনো ঝামেলা নেই। তাই ট্রেনেই যাই।

কমলাপুর থেকে জয়দেবপুর যাবেন আবুল কালাম আজাদ বাবুল। কিন্তু তিনি টিকিট পাননি। ফলে টিকিট ছাড়াই উঠে পড়েন ট্রেনে।

কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশনে আন্তঃনগর কাউন্টারের টিকিট বুকিং সহকারী আনোয়ারুল হক বলেন, যত সিট ততগুলোই টিকিট দিতে পারছি আমরা। মাসিক বা স্ট্যান্ডিং টিকিট নেই। করোনার কারণে সিট ছাড়া কোনো টিকিট না দেওয়ার যে নিয়ম ছিল সেটা এখনো রয়েছে। স্ট্যান্ডিং টিকিট না ছাড়লে কিছুই করার নেই আমাদের।

জয়দেবপুর রেলওয়ে স্টেশনে গিয়ে দেখা যায়, টিকিট কাটতে সেখানেও লাইনে দাঁড়িয়ে আছেন যাত্রীরা। এর মধ্যে প্রায় ৩০-৪০ জন ঢাকাগামী যাত্রী স্টেশনমাস্টারের কাছে টিকিটের বিষয়ে জানতে চাইছেন। আবার অনেকেই কোনো টিকিট না পাওয়ায় প্লাটফর্মে এসে অপেক্ষা করছেন ট্রেনের জন্য।

এসময় কথা হয় ঢাকাগামী ট্রেনের জন্য অপেক্ষমাণ মোহাম্মদ আলীর সঙ্গে। টিকিট না পেলে কীভাবে যাবেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, টিকিট ছাড়াই যেতে হবে। টিকিট তো চাইলাম। কাউন্টারে না পেলে কী করবো।

এ বিষয়ে গাজীপুরের জয়দেবপুর স্টেশনমাস্টার সোহরাব হোসেন বলেন, টিকিট আছে ৫-১০টা। লোক ২০০-৩০০ জন। সব টিকিট অগ্রিম বিক্রি হয়ে যায়। অনলাইনেও বিক্রি হয় টিকিট। সিট ছাড়া কোনো টিকিট আমাদের দেওয়ার নিয়ম নেই। তাই অনেক মানুষ টিকিট ছাড়াই চলে যান।

স্টেশনটির কাউন্টারের টিকিট বুকিং সহকারী রাহাত খান জানান, অনেকেই কাউন্টার থেকে ফিরে যান। দাঁড়িয়ে যাওয়ার কোনো টিকিট নেই। দাঁড়ানোর টিকিট চালু হলে দিতে পারতাম।

যাত্রীরা বলছেন, সিট ছাড়া টিকিট বিক্রি না করার যে নিয়ম তা পরিবর্তন করা উচিত। প্রচুর যাত্রী প্রতিদিন ট্রেনে আসছেন। এতে স্ট্যান্ডিং টিকিট কাটার ইচ্ছা থাকলেও কাটতে পারছেন না।

কমলাপুর রেলওয়ের স্টেশনমাস্টার মোহাম্মদ আনোয়ার, যাত্রীদের চাহিদা রয়েছে। তাই আমরাও চিন্তা করছি কী করা যায়। এগুলো নিয়ে আলোচনা হচ্ছে। শিগগির সিদ্ধান্ত আসবে বলে আশা করি।

সূত্রঃ জাগোনিউজ২৪ 


About the Author

RailNewsBD
রেল নিউজ বিডি (Rail News BD) বাংলাদেশের রেলের উপর একটি তথ্য ও সংবাদ ভিত্তিক ওয়েব পোর্টাল।

Comments are closed.