শিরোনাম

বাংলাদেশ রেলওয়ের উন্নয়ন

বাংলাদেশ রেলওয়ের উন্নয়ন

নিউজ ডেস্ক:

আধুনিক বিশ্বে গণপরিবহনের ক্ষেত্রে রেলপথই জনপ্রিয়তা পাচ্ছে। এর প্রধান কারণ, যাত্রী অনুপাতে রেলগাড়ির পরিবেশদূষণ কম হওয়া এবং তুলনামূলক বিচারে সর্বাধিক নিরাপদ হওয়া। তা সত্ত্বেও বাংলাদেশে নিকট-অতীতে রেলওয়েকে প্রায় ধ্বংস করে ফেলা হয়েছিল। অনেক রেলপথ বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। মানুষ রেললাইনের পাত, স্লিপার খুলে নিয়েছিল। ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন সরকার ক্ষমতায় এসে রেলপথের উন্নয়নে গুরুত্ব আরোপ করে। বন্ধ হয়ে যাওয়া অনেক রেলপথ আবার চালু করা হয়। নতুন অনেক ইঞ্জিন ও বগি আমদানি করা হয়। এতে প্রতিবছরই রেলপথ খাতে বিপুল বরাদ্দ রাখা হয়। এর ফলও পাওয়া যাচ্ছে। লোকসানি খাত থেকে রেলওয়ে আবার লাভজনক খাতে পরিণত হয়েছে। কিন্তু বাংলাদেশ রেলওয়ের ব্যবস্থাপনাগত দুর্বলতা দূর করার উদ্যোগ খুব একটা দেখা যায় না। সে কারণে রেলওয়ের বিশাল সম্পত্তি রক্ষা করা যাচ্ছে না। গতকাল কালের কণ্ঠে প্রকাশিত প্রতিবেদনে দেখা যায়, সৈয়দপুরে রেলওয়ের এক হাজার ২৩৯টি বাসা বহিরাগতদের দখলে চলে গেছে। একইভাবে রেলওয়ের অনেক জমি বেদখল হয়ে গেছে। সেগুলোতে অবৈধভাবে তৈরি হয়েছে বহুতল ভবন। অভিযোগ আছে, রেলওয়েরই এক শ্রেণির কর্মকর্তার যোগসাজশ রয়েছে এই অবৈধ প্রক্রিয়ায়। ফলে জিডি করা ছাড়া রেলওয়ে আর কোনো ব্যবস্থাই নিতে পারছে না।

বাংলাদেশ রেলওয়ের ভূসম্পত্তি বেদখল হওয়ার এই প্রক্রিয়া শুধু সৈয়দপুরে নয়, সারা দেশে একই রকম। খোদ রাজধানীতেও বহু সম্পত্তি বেদখল হয়ে গেছে। আর শুধু ভূসম্পত্তিই নয়, অন্যান্য সম্পত্তি রক্ষার চিত্রও অত্যন্ত করুণ। অভিযোগ আছে, যেসব বগি মেরামত করে চালানো সম্ভব ছিল সেগুলোও খোলা আকাশের নিচে পড়ে থেকে ব্যবহার অনুপযোগী হয়ে যায়। স্ক্র্যাপ হিসেবে বিক্রি করারও উপযুক্ত থাকে না। গণমাধ্যমে এমন বহু চিত্রই আমরা দেখেছি, যেগুলো উদাসীনতা ছাড়া আর কিছুই নয়। সৈয়দপুর ওয়ার্কশপে একসময় ওয়াগন তৈরি হলেও এখন আর তৈরি হয় না। অথচ প্রয়োজনীয় সংস্কার করে এখানে ওয়াগন তৈরি করা গেলে প্রচুর বৈদেশিক মুদ্রার সাশ্রয় হতো। ছাতকের স্লিপার কারখানারও একই অবস্থা। সেখানে স্লিপার তৈরি হয় উৎপাদনক্ষমতার চেয়ে অনেক কম। অথচ প্রায় প্রতিবছরই অনেক স্লিপার আমদানি করতে হয়।

বাংলাদেশ রেলওয়ের উন্নয়নে বর্তমান সরকারের আন্তরিকতা ও উদ্যোগ প্রশংসনীয়। কিন্তু একই সঙ্গে রেলওয়ের ব্যবস্থাপনাগত দুর্বলতা দূর করারও উদ্যোগ নিতে হবে। রেলওয়ের সম্পত্তি রক্ষার ক্ষেত্রে কঠোর হতে হবে। বেদখল হওয়া জমি ও বাড়ি পুনরুদ্ধার করতে হবে। কারখানাগুলো সংস্কারের মাধ্যমে রেলওয়ের নিজস্ব উৎপাদনক্ষমতা বাড়াতে হবে।

সুত্র:কালের কন্ঠ, ২ জুলাই, ২০১৮


About the Author

RailNewsBD
রেল নিউজ বিডি (Rail News BD) বাংলাদেশের রেলের উপর একটি তথ্য ও সংবাদ ভিত্তিক ওয়েব পোর্টাল।

Comments are closed.