।। নিউজ ডেস্ক ।।
রেল উন্নয়ন প্রকল্পের অনিয়ম-দুর্নীতি, অব্যবস্থাপনা, কাজের ধীরগতি ও নিয়ম বহির্ভূতের অভিযোগ উঠেছে। ক্ষোভ ও হতাশা প্রকাশ করে দায়ীদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার সুপারিশ করেছে রেলপথ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটি। পাশাপাশি রেলের উন্নয়ন প্রকল্পের কাজ নিজ নিজ সংসদীয় এলাকার সংসদ সদস্যদের তদারকির প্রস্তাব দেওয়া হয়।
রেলের উন্নয়ন প্রকল্পগুলো বাস্তবায়ন এবং বিভিন্ন সরঞ্জাম সংগ্রহের ক্ষেত্রে নির্দিষ্ট কোনো দেশের ওপর নির্ভর না করে আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতার মাধ্যমে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান নির্বাচন, রেলওয়ে কল্যাণ ট্রাস্টের প্রকল্প গ্রহণের আগে সম্ভাব্যতা যাচাই করে লাভজনক প্রকল্প গ্রহণ, রেলওয়ের স্ক্র্যাপ পরিমাপের ক্ষেত্রে স্কেল ব্যবহার এবং ক্যারেজ (পুরোনো বগি) মেরামতের ক্ষেত্রে মানসম্মত স্টিল ও অন্যান্য সামগ্রী ব্যবহারের পরামর্শ দিয়েছে সংসদীয় কমিটি।
এছাড়াও প্রতিটি রেলস্টেশনে আধুনিক সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করা যেমন- আধুনিক প্রতীক্ষালয়, ব্যাংকিং সেবা, এটিএম বুথ স্থাপন, মানসম্মত ওয়াশরুম ও প্ল্যাটফরমগুলো ট্রেন অনুযায়ী উঁচু করার কথা বলেছে কমিটি। রেলপথ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির এসব প্রস্তাব ও সুপারিশ সময়োচিত, যা বলার অপেক্ষা রাখে না।
দেশবাসীর দীর্ঘদিনের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে আলাদা রেল মন্ত্রণালয় করা হলেও এতে বিশেষ কোনো লাভ হয়েছে বলে মনে হচ্ছে না। সুলভ ও নিরাপদ বাহন হিসাবে মানুষ রেলভ্রমণে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করে। অথচ লাগামহীন চুরি ও দুর্নীতি ছাড়াও নানা ধরনের অব্যবস্থাপনার আবর্তে আকণ্ঠ নিমজ্জিত রেল বিভাগ এ বিষয়টি আমলেই নিচ্ছে না।
বস্তুত তারা গণমানুষের পছন্দ ও চাহিদাকে কাজে লাগাতে পুরোপুরি ব্যর্থ হয়েছে। অতীতে রেল নিয়ে নানা পরিকল্পনা ও উদ্যোগের কথা শোনা গেলেও আজ পর্যন্ত এর সুফল লক্ষ করা যায়নি; বরং প্রতিবছর রেলওয়েকে লোকসান গুনতে হচ্ছে অন্যূন ৮০০ কোটি টাকা। এ ক্ষতি এড়াতে বেহাত হওয়া জমি উদ্ধার ও দুর্নীতি বন্ধের পাশাপাশি জনপ্রত্যাশা ও চাহিদা অনুযায়ী জরুরি ভিত্তিতে রেলের আধুনিকায়ন করতে হবে।
দেশে প্রচলিত যোগাযোগব্যবস্থাগুলোর মধ্যে সবচেয়ে সম্ভাবনাময় ছিল রেলওয়ে খাত। দুর্নীতি, অনিয়ম ও অব্যবস্থাপনার মাধ্যমে এ সম্ভাবনা বিনষ্ট করতে করতে বর্তমানে তা প্রায় শূন্যের কোঠায় নিয়ে আসা হয়েছে। ফলে রেলওয়ের অস্তিত্বই এখন হুমকির সম্মুখীন।
আমরা মনে করি, মেঘে মেঘে অনেক বেলা হয়েছে; তাই এ মুহূর্তে রেলে পরিবর্তন আনা খুবই জরুরি। এ লক্ষ্যে রেলপথ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির প্রস্তাব ও সুপারিশগুলো আমলে নিয়ে ‘প্রায় অচল’ রেলে গতি সঞ্চারে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়া হবে, এটাই প্রত্যাশা।
সূত্রঃ যুগান্তর