শিরোনাম

পদ্মা রেল সেতুর জরুরি সিঁড়ি নিয়ে জটিলতা

পদ্মা রেল সেতুর জরুরি সিঁড়ি নিয়ে জটিলতা

।। সজিব ঘোষ ।।
দুর্ঘটনা বা অনিবার্য প্রয়োজনে পদ্মা রেল সেতুর ওপর থেকে যাত্রীদের নিচে নেমে আসার জন্য সিঁড়ি তৈরির চলমান কাজ বন্ধ করতে চিঠি দিয়েছেন পদ্মা বহুমুখী সেতু প্রকল্পের পরিচালক। রেল সংযোগ প্রকল্পের পরিচালককে দেওয়া চিঠিতে বলা হয়েছে, পদ্মা সেতুর দুই কিলোমিটারের মধ্যে কোনো ধরনের স্থাপনা নির্মাণ করা যাবে না। এতে পদ্মা সেতু ঝুঁকিতে পড়বে।

পদ্মা সেতুর রেল সংযোগ প্রকল্পের পরিচালককে গত মঙ্গলবার এই চিঠি দেওয়া হয়।

রেল সংযোগ প্রকল্প সূত্র জানায়, রেল সেতুর জাজিরা প্রান্তে দুটি এবং মাওয়া প্রান্তে একটি জরুরি নির্গমন সিঁড়ি তৈরি করা হচ্ছে। অর্থাৎ প্রতি দুই কিলোমিটার পর একটি সিঁড়ি থাকবে রেল সেতুতে। এর অর্ধেকের বেশি কাজ শেষ হয়েছে। পদ্মা সড়ক সেতুর মূল অংশেও দুটি জরুরি নির্গমন সিঁড়ি আছে।

পদ্মা বহুমুখী সেতু নির্মাণ প্রকল্পের পরিচালক মো. শফিকুল ইসলাম চিঠিতে জানিয়েছেন, পদ্মা সেতুর জাজিরা প্রান্তে মূল সেতুর ৪২ নম্বর খুঁটির কাছে রেলের উড়ালপথের জরুরি নির্গমনের জন্য স্থাপনা নির্মাণ করা হচ্ছে বলে লক্ষ করা যাচ্ছে। এ ধরনের স্থাপনা মূল সেতুর অন্তত দুই কিলোমিটারের বাইরে করতে হবে। মূল সেতুতে রেল ও সড়কপথের জন্য নির্দিষ্ট জরুরি নির্গমনের ব্যবস্থা রয়েছে।

পদ্মা সেতু রেল সংযোগ প্রকল্প সূত্র জানায়, এখন রেলপথের যে অংশটুকুতে সিঁড়ি নির্মাণ বন্ধ করতে বলা হচ্ছে, তা রেলের মূল নকশায় ছিল। ২০১৭ সালে এই নকশা অনুমোদন করা হয়। এরই মধ্যে জরুরি অবতরণের পথের নির্মাণকাজ অর্ধেকের বেশি হয়ে গেছে।

সিঁড়ি নির্মাণকাজ বন্ধের নির্দশনা এত দেরিতে জানানো হলো কেন—জানতে চাইলে পদ্মা বহুমুখী সেতু নির্মাণ প্রকল্পের পরিচালক মো. শফিকুল ইসলাম কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘আমি আপনার এ প্রশ্নের উত্তর দেব না। যা বলার চিঠিতে বলেছি। চিঠির কথাই আমার বক্তব্য। ’

পদ্মা সেতু রেল সংযোগ প্রকল্প সূত্র বলছে, সেতু কর্তৃপক্ষ চাচ্ছে রেল যেন সিঁড়িটি ভেঙে দেয়। আর রেল কর্তৃপক্ষ আশঙ্কা করছে, এতে রেলের কাজের আরো দেরি হবে। সিঁড়ির কাজ চলমান রেখেছে রেল সংযোগ প্রকল্প কর্তৃপক্ষ।

জানতে চাইলে পদ্মা সেতু রেল সংযোগ প্রকল্পের পরিচালক মো. আফজাল হোসেন কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘আমরা তাদের চিঠির জবাব দিয়েছি। অন্তত দুই কিলোমিটার পর পর একটি ইমার্জেন্সি এক্সিট (জরুরি নির্গমন) থাকতেই হবে। এটা আমাদের মূল নকশায়ও ছিল। ’

এক প্রশ্নের জবাবে আফজাল হোসেন বলেন, ‘এত দেরিতে কেন কাজ বন্ধের কথা এলো তা আমি জানি না। এই স্থাপনা তো ভাঙা যাবে না। রেল সেতুর সঙ্গে এটি থাকতেই হবে। কারণ সেতুতে কোনো দুর্ঘটনা ঘটলে ট্রেনের মানুষগুলো কোথায় যাবে? তাদের জন্য তো সেতু থেকে নামার পথ লাগবে। ’

এ বিষয়ে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের পরিচালক (অপারেশন ও মেইনটেন্যান্স) লেফটেন্যান্ট কর্নেল জিল্লুর রহমান কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘সেতুর উড়ালপথ থেকে জরুরি নির্গমনপথ থাকা দরকার। মেট্রো রেলের ক্ষেত্রেও ইমার্জেন্সি এক্সিটের (জরুরি নির্গমন) পথ আছে। ’

জানতে চাইলে পদ্মা সেতু প্রকল্পের বিশেষজ্ঞ প্যানেলের প্রধানের দায়িত্বে থাকা শামীম জেড বসুনিয়া বলেন, ‘বহির্গমনের জন্য করা স্থাপনা মূল সেতুর জন্য ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ার কথা নয়। সেতু কর্তৃপক্ষের নির্দেশনা আমার জানা নেই। এটি নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করে দেখব। ’

উল্লেখ্য, পদ্মা সেতু আগামী জুনে যানবাহন চলাচলের জন্য খুলে দেওয়ার কথা আছে। আর পদ্মা রেল সেতু চালু হতে পারে আগামী ডিসেম্বরে। সর্বশেষ ৩১ জানুয়ারি পর্যন্ত পুরো রেলপথের সার্বিক কাজের অগ্রগতি হয়েছে ৫২ শতাংশ। এর মধ্যে ঢাকা-মাওয়া অংশের অগ্রগতি ৪৯ শতাংশ, ভাঙ্গা-যশোর অংশের অগ্রগতি ৪৪ শতাংশ এবং অগ্রাধিকার ভিত্তিতে চলমান মাওয়া-ভাঙ্গা অংশের কাজের অগ্রগতি ৭৬ শতাংশ।

সূত্রঃ কালের কন্ঠ 


About the Author

RailNewsBD
রেল নিউজ বিডি (Rail News BD) বাংলাদেশের রেলের উপর একটি তথ্য ও সংবাদ ভিত্তিক ওয়েব পোর্টাল।

2 Trackbacks & Pingbacks

  1. superkaya88
  2. ดูซีรี่ย์

Comments are closed.