শিরোনাম

বাংলাদেশের রেল ব্যবস্থার উন্নয়নে পাশে থাকবে ভারত: নরেন্দ্র মোদি


।। রেল নিউজ ।।

বাংলাদেশের রেল যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন ও সম্প্রসারণে ভারত সব ধরনের সহযোগিতা দেবে বলে জানিয়েছেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। গতকাল দিল্লির হায়দরাবাদ হাউজে সফররত বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে বৈঠকে তিনি এ কথা বলেন। বৈঠক শেষে দেয়া এক যৌথ প্রেস বিবৃতিতে এ কথা জানানো হয়।

বিবৃতিতে নরেন্দ্র মোদি শেখ হাসিনার সঙ্গে বৈঠকে আলোচিত বিভিন্ন বিষয় নিয়ে কথা বলেন। তিনি বলেন, যোগাযোগ বৃদ্ধির ক্ষেত্রে খুলনার রূপসা নদীর ওপর রেলসেতু নির্মাণকাজের উদ্বোধন খুবই গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। ভারতের লাইন অব ক্রেডিটের আওতায় খুলনা ও মোংলা বন্দরের মধ্যে নির্মিত নতুন এ সেতু গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। বাংলাদেশের রেল যোগাযোগের উন্নয়নে ও রেল ব্যবস্থা সম্প্রসারণে ভারত সব ধরনের সহযোগিতা দিয়ে যাবে।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তার সফরসঙ্গীদের স্বাগত জানিয়ে ভারতের প্রধানমন্ত্রী বলেন, গত বছর আমরা একসঙ্গে বাংলাদেশের ৫০তম স্বাধীনতা দিবস উদযাপন করেছি। এর মাধ্যমে আমাদের সম্পর্কের ৫০ বছরও উদযাপিত হয়েছে। আমি প্রত্যাশা করি, আগামী ২৫ বছরে বাংলাদেশ-ভারতের সম্পর্ক নতুন উচ্চতায় পৌঁছে যাবে।

শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ উল্লেখযোগ্য উন্নতি করেছে উল্লেখ করে মোদি বলেন, আজ আমরা বিভিন্ন দ্বিপক্ষীয়, আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক ইস্যু নিয়ে বিশদ আলোচনা করেছি। আমরা দুজনেই বিশ্বাস করি, কভিড মহামারী ও চলমান বৈশ্বিক পরিস্থিতি থেকে নেয়া শিক্ষা আমাদের অর্থনীতিকে আরো শক্তিশালী করতে সহায়তা করবে।

আরো পড়ূন…ভারতের সঙ্গে ৭টি সমঝোতা স্মারকে সই, এর মধ্যে ২টি রেল মন্ত্রণালয়ের

নরেন্দ্র মোদি আরো বলেন, দুই দেশের মধ্যে যোগাযোগের পরিধি বাড়ানোর বিষয়ে এবং সীমান্তে বাণিজ্য অবকাঠামো উন্নয়নে দেশ দুটির অর্থনীতি একে অন্যের সঙ্গে আরো সংযুক্ত হয়ে কাজ করবে, একে অন্যকে সহায়তা করবে। আমাদের দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ক্রমেই বাড়ছে। বর্তমানে এশিয়ার মধ্যে বাংলাদেশের রফতানির সবচেয়ে বড় বাজার ভারত। এ প্রবৃদ্ধিকে আরো সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যেতে শিগগিরই আমরা দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য অংশীদারত্ব চুক্তির বিষয়ে আলোচনা শুরু করব।

ভবিষ্যতে তথ্যপ্রযুক্তি, মহাকাশ গবেষণা, পারমাণবিক শক্তিসহ বিভিন্ন খাতে অংশীদারত্ব বাড়ানোর বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিয়েছি। এসব খাত তরুণ প্রজন্মের কাছে খুবই জনপ্রিয়। সেই সঙ্গে জলবায়ু পরিবর্তন, সুন্দরবনসহ দুই দেশের মধ্যকার যৌথ ঐতিহ্যগুলো সংরক্ষণে সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে।

মোদি আরো বলেন, বিশ্বজুড়ে অব্যাহতভাবে বাড়তে থাকা জ্বালানির দামের কারণে সব উন্নয়নশীল দেশই চ্যালেঞ্জের মধ্যে পড়েছে। বাংলাদেশে সুলভে বিদ্যুৎ সরবরাহের লক্ষ্য নিয়ে মৈত্রী থার্মাল পাওয়ার প্লান্ট উদ্বোধন করা হচ্ছে। বিদ্যুৎ সঞ্চালনলাইনের সংযোগ বিষয়ে দুই দেশের মধ্যে ফলপ্রসূ আলোচনা চলছে।

ভারতের প্রধানমন্ত্রী বলেন, ভারত-বাংলাদেশ সীমান্ত দিয়ে ৫৪টি অভিন্ন নদ-নদী বয়ে যাচ্ছে। এসব নদ-নদী দুই দেশের ঐতিহ্য আর সংস্কৃতির অংশ। আমরা কুশিয়ারার পানি বণ্টন নিয়ে একটি গুরুত্বপূর্ণ চুক্তি সই করেছি। এর মাধ্যমে ভারতের আসামের দক্ষিণাঞ্চল ও বাংলাদেশের সিলেট অঞ্চল উপকৃত হবে।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে বন্যা প্রশমনের বিষয়ে আমার ফলপ্রসূ আলোচনা হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, বন্যা-সম্পর্কিত যেকোনো তথ্য ভারত সময়মতো বাংলাদেশকে সরবরাহ করবে। আজ আমরা সন্ত্রাসবাদ ও মৌলবাদের বিরুদ্ধে একযোগে লড়াই করার বিষয়েও একমত হয়েছি। দুই দেশের যৌথ বিশ্বাসের জায়গাকে আঘাত করে এমন যেকোনো অপশক্তির বিরুদ্ধে লড়াই করার বিষয়েও আলোচনা হয়েছে।

সবশেষে নরেন্দ্র মোদি বলেন, বঙ্গবন্ধু যে স্থিতিশীল, উন্নত ও সমৃদ্ধ বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখেছিলেন তা অর্জনে বাংলাদেশের পাশে থাকবে ভারত।

সূত্র: বণিক বার্তা


Comments are closed.