শিরোনাম

৩০টি সেতুই নড়বড়ে ঝুঁকি নিয়ে চলে ট্রেন!

৩০টি সেতুই নড়বড়ে ঝুঁকি নিয়ে চলে ট্রেন!

জাহাঙ্গীর আলম সরদার:
কুড়িগ্রাম-রমনা ২৮ কিলোমিটার রেলপথের ৩০টি সেতুই এখন ঝুঁকিপূর্ণ। সেতুর ওপর রেললাইনের স্লিপার ঠিক রাখতে কাঠের বদলে লাগানো হয়েছে বাঁশের ফালি। কোথাও লাগানো হয়েছে সাইকেলের টায়ার। লাইনের বেশির ভাগ স্থানে নেই নাট-বোল্টু। হারিয়ে গেছে পিন। পুরো রেলপথ জুড়ে নেই পাথর। ফলে এ পথে প্রতিনিয়ত ঝুঁকি নিয়ে চলছে ট্রেন। রেললাইনের বেহালদশার কারণে মাঝে মধ্যে ট্রেন লাইনচ্যুত হয়ে দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছেন যাত্রীরা। সম্প্রতি ভয়াবহ বন্যায় বেশ কিছু স্থানে রেললাইনের মাটি সরে দীর্ঘদিন ট্রেন চলাচল বন্ধ ছিল। কর্তৃপক্ষ লাইন মেরামতের নামে অর্থ বরাদ্দ করলেও তা কোনো কাজে আসছে না। এ অবস্থায় ট্রেন চলাচল করলেও যে কোনো মুহূর্তে বড় ধরনের দুর্ঘটনার আশঙ্কা করছেন যাত্রীরা।

জানা গেছে, ১৯৬৪ সালে স্থাপিত কুড়িগ্রাম থেকে রমনা ২৮ কিলোমিটার রেলপথে ৩০টি রেলসেতু রয়েছে। কর্তৃপক্ষের উদাসীনতায় দীর্ঘদিন ধরে সংস্কার করা সম্ভব হয়নি রেলপথের এ সেতুগুলো। ফলে যাত্রীদের প্রতিনিয়ত জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ট্রেনে চলাচল করতে হচ্ছে। ৪২১-৪২২ নম্বর লোকাল ট্রেন পার্বতীপুর-কুড়িগ্রাম-পার্বতীপুর ও ৪১৫-৪১৬ নম্বর লোকাল ট্রেন তিস্তা জংশন-কুড়িগ্রাম-তিস্তা জংশন রুটে চলাচল করছে। এ অবস্থায় কুড়িগ্রাম-রমনা কর্তৃপক্ষ রেলপথ পুরোনো ও ব্যবহার অনুপযোগী হওয়ায় ট্রেনের গতি নির্ধারণ করেছেন ঘণ্টায় ১০ কিলোমিটার। ফলে ট্রেনে চলাচল করতে আগ্রহ হারিয়ে ফেলছে যাত্রীরা। চরম ভোগান্তিতে পড়ছে রেলনির্ভর সাধারণ যাত্রী, ফেরিওয়ালা, হকার ও খেটে খাওয়া সাধারণ মানুষ। সম্প্রতি উলিপুর উপজেলার তবকপুর ইউনিয়নের রেল ঘুণ্টিতে ট্রেন লাইনচ্যুত হয়ে ১০ জন আহত হওয়ার ঘটনা ঘটেছে। এ ছাড়া প্রতিনিয়ত ঘটছে ছোটোখাটো দুর্ঘটনা। কুড়িগ্রামবাসী দীর্ঘদিন থেকে রমনা থেকে ঢাকা পর্যন্ত আন্তঃনগর ট্রেন চালুর দাবি করে আসছে। মঙ্গলবার উলিপুর রেল স্টেশনে গিয়ে কথা হয় মোকছেদ আলী (৬৫), মকবুল হোসেন (৬২), আলমাস শেখ (৪২)সহ অনেকের সঙ্গে। তারা বলেন, আন্তঃনগর ট্রেন চালু করলে এ অঞ্চলের মানুষ কম টাকায় ঢাকা যাতায়াত করতে পারত। তারা আরো বলেন, রেললাইনের যে অবস্থা তাতে যে কোনো মুহূর্তে বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। দ্রুত কুড়িগ্রাম থেকে রমনা পর্যন্ত আন্তঃনগর ট্রেন চালুর দাবি করেন এ অঞ্চলের মানুষ।

কুড়িগ্রাম রেলওয়ের নির্বাহী প্রকৌশলী আনোয়ার হোসেন রেললাইনটি ঝুঁকিপূর্ণ স্বীকার করে বলেন, বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত স্থানগুলো আপত্কালীন প্রকল্পের মাধ্যমে মেরামত করে ট্রেন চলাচল চালু করা হয়েছে।

লালমনিরহাট বিভাগীয় রেলওয়ে ব্যবস্থাপক মো. শফিকুর রহমান বলেন, কুড়িগ্রাম থেকে রমনা পর্যন্ত রেললাইন অনেকটাই ঝুঁকিপূর্ণ। স্থায়ীভাবে সংস্কারের পর আন্তঃনগর ট্রেন চালু করার চেষ্টা করা হচ্ছে।

সুত্র:ইত্তেফাক, ২৮ আগস্ট, ২০১৯


About the Author

RailNewsBD
রেল নিউজ বিডি (Rail News BD) বাংলাদেশের রেলের উপর একটি তথ্য ও সংবাদ ভিত্তিক ওয়েব পোর্টাল।

Comments are closed.