নাজমুস সালেহী:
“বাংলাদেশ রেলওয়ের কল সেন্টারে আপনাকে স্বাগতম”। ১৩১ নাম্বারে কল দিলে সুমধুর কণ্ঠে এভাবেই আপনাকে স্বাগত জানানো হবে। এরপর আর কোন সাড়া শব্দ নাই। হঠাৎ করেই বন্ধ হয় কল সেন্টারের সংযোগ। এমনই অবস্থা বাংলাদেশ রেলওয়ের মোবাইল কল সেন্টারের।
যাত্রীদের সমস্যার কথা সরাসরি শোনার জন্য ও সেই অনুযায়ী রেলের সেবা বাড়ানোর লক্ষ্যে ২০১৭ সালে বাংলাদেশ টেলিকমিউনিকেশন্স এন্ড রেগুলেটরি করপোরেশন বিটিআরসি’র কাছ থেকে ১৩১ শর্ট কোডটি সংগ্রহ করে রেলওয়ে।
যেখানে কল দিয়ে রেলযাত্রীরা টিকিট সংগ্রহ থেকে শুরু করে যাবতীয় তথ্য সরাসরি কথা বলে জানতে পারেন। ১৩১ নাম্বারটি চালু আছে, কল দিলে অভিনন্দনও জানানো হবে কিন্তু এরপর আপনি আর কিছুই জানতে পারবেন না।
জানা যায়, রেলপথমন্ত্রণালয় ২০১৭ সালে নিজস্ব কল সেন্টার স্থাপন করার জন্য উদ্যোগ নেয়। এসময় রেলের টেলিকমিউনিকেশন্স ও সিগন্যাল বিভাগকে এ ব্যাপারে দায়িত্ব দেয়া হয়। তারা কার্যক্রম শুরু করে পরে তা রেলের অপারেশন বিভাগের উপর ন্যস্ত করে।
তবে পরে আর কী কারণে রেলওয়ে জাতীয় কল সেন্টার বাস্তবায়িত হয়নি তা জানেন না রেলের চীফ টেলিকমিউনিকেশন্স ও সিগন্যাল বিভাগের প্রধান প্রকৌশলী বেনু রঞ্জন সরকার।
তিনি সময় নিউজকে বলেন, আমরা প্রাথমিকভাবে একটি শর্ট কোড নাম্বার চালু করি। কাজই প্রায় শেষ পর্যায়ে ছিল। বাকি ছিল সেখানে তথ্য অন্তর্ভুক্ত করা। কিন্ত সেখানে যেহেতু অপারেশন বিভাগের তথ্য দেয়া হবে; কেন না যাত্রী সেবার সাথে অপারেশন বিভাগই জড়িত। পরবর্তীতে তাই অপারেশন বিভাগের ওপর ছেড়ে দেয়া হয় কল সেন্টারের দায়িত্ব।
সব কিছুই ঠিকঠাক চলছিল কিন্ত প্রয়োজনীয় সংখ্যক দক্ষ লোকবল আর অর্থের অভাবে রেলের নিজস্ব কল সেন্টার বাস্তবায়ন করা সম্ভব হয়নি। এমনটি জানালেন রেলওয়ের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (অপারেশন) মিয়া জাহান।
তিনি বলেন, রেলপথ মন্ত্রণালয় এই সিদ্ধান্তটি নিয়েছিল কিন্ত প্রয়োজনীয় লোকবল না থাকায় সেটা আর বাস্তবায়ন হয়নি। তবে পরবর্তীতে এক্সপ্রেস টু ইনফরমেশন-এটুআই এর সাথে চুক্তির মাধ্যমে জাতীয় কল সেন্টার ৩৩৩ নাম্বারে রেলের সব তথ্য দেয়া হয় বলে জানান তিনি। আর এ কারণে রেলের নিজস্ব কল সেন্টার স্থাপনের উদ্যোগটি বাতিল করা হয় বলেও জানান মিয়া জাহান।
এসব বিষয় নিয়ে কথা বলতে গেলে রেলপথ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মাহবুব কবির মিলন সময় সংবাদকে বলেন, রেলকে আধুনিক এবং ডিজিটালাইজ করার সাথে সাথে বৃদ্ধি পাবে নানামুখী প্রশ্ন এবং সমস্যা। এ কারণেই যাত্রীসেবা নিশ্চিত এবং সুষ্ঠু করতে হলে কল সেন্টার স্থাপনের কোন বিকল্প নেই। কল সেন্টার স্থাপনের বিষয়ে এটুআই এর সাথে আলোচনা হয়েছে। তাঁরা এ বিষয়ে রেল হতে একটি আনুষ্ঠানিক পত্র বা ইমেইল পেলে প্রয়োজনীয় প্রক্রিয়া শুরু করবে বলে জানিয়েছেন। আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা করছি যাতে রেলের একটা নিজস্ব কল সেন্টার তৈরি করতে পারি।
সূত্র:সময়টিভি.কম , ১৯-০৫-২০২০