শিরোনাম

ফরিদপুরে চলন্ত ট্রেনে পাথর নিক্ষেপ থামছেই না

প্রতীকী ছবি

।। রেল নিউজ ।।
সারাদেশে চলন্ত ট্রেনে পাথর নিক্ষেপের ঘটনা থামছেই না। যাত্রীদের নিরাপত্তার নানাধরনের পদক্ষেপ নেওয়ার পরেও পাথর নিক্ষেপের প্রবণতা থেকে সরানো যাচ্ছে না দুর্বৃত্তদের। সম্প্রতি ফরিদপুরে চলন্ত ট্রেনে পাথর নিক্ষেপের ঘটনা বেড়েছে। কিছুদিন বিরতির পর সাম্প্রতিক সময়ে আবারও এমন ঘটনার খবর পাওয়া যাচ্ছে।

বিশেষ করে রাতের অন্ধকারে বিভিন্নস্থানে বিক্ষিপ্তভাবে চলন্ত রেলগাড়িতে ছোড়া পাথরে মারায় যাত্রীরা আহত হচ্ছেন। এতে যেকোনো সময় গুরুতর দুর্ঘটনা ঘটার শঙ্কা রয়েছে।

অবশ্য সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এসব ঘটনার অধিকাংশই থানা কিংবা রেল পুলিশকে জানানো হয় না। এ কারণে দোষীদের চিহ্নিত করে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়াও হয় না। এ কারণে এই অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড থামানো যাচ্ছে না।

গত শুক্রবার রাতে ফরিদপুর থেকে ভাঙ্গা যাওয়ার পথে পুখুরিয়া স্টেশন ছাড়ার এক মিনিট পরে চলন্ত ট্রেনে পাথর ছুড়ে মারার ফলে গুরুতর আহত হন এক নারী যাত্রী।

ফরিদপুরের ভাঙ্গা প্রেসক্লাবের সভাপতি সাংবাদিক আব্দুল মান্নান মুন্নু জানান, সাম্প্রতিককালে ফরিদপুরের এই রেল রুটে কমপক্ষে ১০ জনের মতো রেলযাত্রী এভাবে পাথর ছুড়ে মারায় আহত হয়েছেন।

সংশ্লিষ্টরা জানান, গত বছর চলন্ত ট্রেনে পাথর ছুড়ে মারার ঘটনা বেড়ে গেলে জেলা প্রশাসন, রেল কর্তৃপক্ষ নানা ধরনের পদক্ষেপ নেয়। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অভিযান, স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের তৎপরতা এবং স্থানীয়দের মধ্যে সচেতনতামুলক প্রচারণা চালানো হয়। ফলে দীর্ঘদিন চলন্ত ট্রেনে পাথর নিক্ষেপ করা বন্ধ ছিল। সম্প্রতি আবার শুরু হয়েছে চলন্ত ট্রেনে পাথর নিক্ষেপের ঘটনা।

রেলওয়ে পুলিশ পাথর ছুঁড়ে মারার সঙ্গে জড়িতদের তথ্য পেতে নগদ অর্থ পুরস্কারেরও ঘোষণা দিয়েছে। এর বিরুদ্ধে নানারকম প্রচার প্রচারণা চালাচ্ছে তবে সেটি কোনোভাবে থামানো যাচ্ছে না।

ফরিদপুরের ভাঙ্গা স্টেশনের মাস্টার মো. শাহজাহান ঢাকা ট্রিবিউনকে বলেন, “সম্প্রতি আবারও পাথর ছুড়ে রেলযাত্রীদের আহত করার কয়েকটি ঘটনার খবর জেনেছি। ফরিদপুরের পুখুরিয়া থেকে তালমার মাঝামাঝি জানদি গ্রাম ছাড়িয়ে এ ঘটনা বেশি ঘটছে। এছাড়া পুখুরিয়া পেরোনোর পরে এবং বাখুন্ডার কাছাকাছি কিছু এলাকায়ও এমন ঘটনা ঘটছে।”

তিনি বলেন, “এসব ঘটনার পরে আহত যাত্রীরা লিখিত অভিযোগ দিতে চান না। ফলে প্রকৃত দুর্ঘটনার হিসেব আসলে নেই। তবে এসব ঘটনা মাঝেমধ্যে ঘটছে। সিআরপি থেকে সংবাদ সম্মেলন করে এসব ঘটনার বিরুদ্ধে জনমত তৈরির অনুরোধ জানানো হয়েছে।”

রেলওয়ে আইনের ১২৭ ধারা অনুযায়ী ট্রেনে পাথর নিক্ষেপ করা হলে সর্বোচ্চ যাবজ্জীবন কারাদণ্ডসহ ১০ হাজার টাকা জরিমানার বিধান আছে। ৩০২ ধারা অনুযায়ী পাথর নিক্ষেপে কারো মৃত্যু হলে মৃত্যুদণ্ডের বিধান রয়েছে। তবে এসব আইনে শাস্তির বিধান থাকলেও বাস্তবে তেমন প্রয়োগ নেই। ফলে জনসচেতনতা বাড়ানোর বিকল্প নেই।

এ ব্যাপারে ফরিদপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোহাম্মদ ইমদাদ হোসাইন বলেন, “রেল কর্তৃপক্ষ সুনির্দিষ্ট অভিযোগ সহকারে পুলিশের সহযোগিতা চাইলে আমরা তাদের আইনগত সহযোগিতা করবো।”

ফরিদপুরের জেলা প্রশাসক অতুল সরকার বলেন, “বিষয়টি খুবই উদ্বেগজনক। রেলযাত্রা নিরাপদ করতে স্থানীয় প্রশাসন ও জনপ্রতিনিধিদের সঙ্গে আলোচনা করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

সূত্রঃ ঢাকাট্রিবিউন


Comments are closed.