শিরোনাম

মই বেয়ে ট্রেনে যাত্রীদের ওঠানামা

মই বেয়ে ট্রেনে যাত্রীদের ওঠানামা

নিউজ ডেস্ক: বাগাতিপাড়া উপজেলা মালঞ্চি রেলস্টেশন চলছে স্টেশন মাস্টার ছাড়া। স্টেশনে ঝুলছে তালা। প্ল্যাটফর্ম থাকলেও তা ব্যবহারের সুযোগ নেই। মই বেয়ে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ওঠানামা করতে হয় যাত্রীদের। নেই টিকিট, সিগন্যাল ছাড়াই চলছে ট্রেন।

স্টেশনে চারটি ক্রসিং লাইন থাকার পরও মাত্র একটি (সিঙ্গেল) লাইনে ট্রেন চলাচল করায় আবদুলপুর অথবা নাটোর স্টেশনে ট্রেন থামিয়ে ক্রসিংয়ের কারণে ট্রেনের সিডিউল বিপর্যয় ঘটছে। ফলে স্টেশনটিতে ট্রেন যাত্রীদের ভোগান্তি চরমে পৌঁছেছে। এছাড়াও লোকবল না থাকায় নষ্ট হচ্ছে রেলের মূল্যবান সম্পদ। দ্রুত জনবল পদায়নসহ যাত্রীসুুবিধা চালুর দাবি এলাকাবাসীর। সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, মালঞ্চি রেলস্টেশনটি ১৯২৭ সালে ব্রিটিশ সরকারের আমলে স্থাপিত হয়। তখনও পার্শ্ববর্তী লোকমানপুর, আড়ানী রেলস্টেশন ছিল না। উপজেলার বাস যোগাযোগ ব্যবস্থা না থাকায় সহজ যোগাযোগের একমাত্র মাধ্যম ছিল মালঞ্চি রেলস্টেশন। বিশেষ করে উপজেলা সরকারি অফিসগুলো স্টেশনের পার্শ্ববর্তী হওয়ায় সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীরা অধিকাংশই ট্রেনে যাতায়াত করে থাকেন।

সেই সময় মালঞ্চি রেলস্টেশনে কর্মরত ছিলেন তিনজন স্টেশন মাস্টারসহ প্রয়োজনীয় সব কর্মচারী। কিন্তু ২০০৩ সাল থেকে পর্যায়ক্রমে স্টেশন মাস্টার থেকে শুরু করে সব স্টাফ বর্তমানে শূন্য। ২৪ ঘণ্টা স্টেশনে ঝুলছে তালা।

সূত্র আরও জানায়, স্টেশনে চারটি পৃথক রেলক্রসিংয়ের ব্যবস্থা থাকলেও ব্যবহারের উপযোগী মাত্র একটি। সেটাও প্ল্যাটফরম থেকে বেশ দূরে। ফলে যাত্রীদের ট্রেনের হ্যান্ডেল ধরে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ওঠানামা করতে হয়। অসুস্থ, বয়ঃবৃদ্ধ, রোগী এবং নারীদের জন্য স্থানীয়দের উদ্যোগে দেয়া মই বেয়ে উঠতে হয় ট্রেনে। এদিকে স্টেশন মাস্টার না থাকায় ট্রেনের ঘণ্টাও আর বাজে না। ট্রেন পৌঁছানোর পর ছেড়ে যাওয়ার নির্দিষ্ট কোনো সময় নেই। যাত্রীরা তড়িঘড়ি ট্রেনে উঠতে গিয়ে বিশেষ করে নারী যাত্রীরা বিভিন্ন সময়ে হতাহত হয়েছে। যাত্রীরা ট্রেনের সময়সূচি জানতে না পেরে নিরুপায় হয়ে ট্রেনের অপেক্ষায় থাকে ঘণ্টার পর ঘণ্টা। স্টেশন বন্ধের কারণে যাত্রীরা সময়মতো টিকিট কাটতে পারে না। টিকিট ছাড়াই ট্রেনভ্রমণ করার অপরাধে হয়রানিসহ জরিমানা গুনতে হয় অনেক যাত্রীকে।

স্টেশনে ইতিপূর্বে পাঁচটি ট্রেনে যাত্রী ওঠানামা করলেও বর্তমানে পার্বতীপুর থেকে ছেড়ে আসা রাজশাহীগামী উত্তরা ট্রেন ও চিলাহাটি থেকে ছেড়ে আসা খুলনাগামী মেইল ট্রেন দুটিতে যাত্রী ওঠানামা করে। ট্রেনের সিগন্যাল ছাড়াই চলছে ট্রেনগুলো। ট্রেনের সিগন্যালগুলো আর ব্যবহার না হওয়ায় অযত্নে নষ্ট হচ্ছে। এমন কি নষ্ট হচ্ছে সিগন্যালের তার, লোহাসহ মূল্যবান সরকারি সম্পদ। এ বিষয়ে নাটোর স্টেশন মাস্টার অশোক কুমার চক্রবর্তী বলেন, মূলত লোকবল সংকটের কারণে স্টেশনটির এই দুরবস্থা। তবে কয়েকবার স্টেশনটি পুরোদমে চালুর চেষ্টা করা হলেও পরে তা আর করা যায়নি।

স্টেশনের একটি লাইনে ট্রেন চলাচলের কারণে দূরবর্তী আবদুলপুর জংসন স্টেশনে অথবা নাটোর স্টেশনে ট্রেন থামিয়ে ক্রসিং করাতে হচ্ছে। ফলে নির্ধারিত সময়ের ট্রেনের সিডিউল বিপর্যয় ঘটছে। তবে সম্প্রতি এক মিটিংয়ে তিনি মালঞ্চি স্টেশনের এ বিষয় সম্পর্কে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছেন।

সূত্র:যুগান্তর, ১১ অক্টোবর ২০২০


About the Author

RailNewsBD
রেল নিউজ বিডি (Rail News BD) বাংলাদেশের রেলের উপর একটি তথ্য ও সংবাদ ভিত্তিক ওয়েব পোর্টাল।

Comments are closed.