নিউজ ডেস্ক: আসন্ন পবিত্র ঈদুল আজহা উপলক্ষে শিথিল হয়েছে লকডাউন। এরই সঙ্গে ট্রেন চলাচলের বাধাও তুলে দিয়েছে সরকার। তাই ঈদের আগে ট্রেনের টিকিট বিক্রির অ্যাপ ও ওয়েবসাইটে অতিরিক্ত চাপ পড়েছে। এ কারণে ভোগান্তিতে পড়তে হয়েছে ক্রেতাদের।
বিষয়টি স্বীকার করে রেলমন্ত্রী নূরুল ইসলাম সুজন বলেছেন, অনলাইনে যে পরিমাণ টিকিট রয়েছে, তার কয়েকগুণ বেশি হিট পড়ছে; তাই এ সমস্যা।
ঈদ উদ্যাপনে ১৪ জুলাই মধ্যরাত থেকে ২৩ জুলাই সকাল ৬টা পর্যন্ত সব বিধিনিষেধ শিথিল করায় পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী বুধবার সকাল থেকে অনলাইনে টিকিট বিক্রি শুরু করে রেলওয়ে। তবে সকাল থেকেই সোশ্যাল মিডিয়ায় অভিযোগ আসতে থাকে টিকিটের জন্য অ্যাপ বা ওয়েবসাইটে প্রবেশ করা যাচ্ছে না। অনেকে সকাল ১০টার মধ্যে অ্যাপ বা ওয়েবে ঢুকতে পারলেও টিকিট পাননি।
রেলওয়ে মন্ত্রণালয়ের ফেসবুক পেজে রাশেদ রেজা নামের একজন লিখেছেন, সকাল ৮টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত অনলাইনে চেষ্টা করেও টিকিট পাইনি। অনলাইনে টিকিট পাচ্ছেন না এমন অভিযোগ করেছেন ময়মনসিংহ ও শেরপুর যেতে ইচ্ছুক দুজন যাত্রী।
তাদের একজন হাসিব বিল্লাহ বলেন, ‘সকাল থেকে অলাইনে চেষ্টা করছি, টিকিট নাই। পরিচিত একজন টিটিকে টেলিফোন করছিলাম এই অবস্থা কেন, জানার জন্য। তিনি বলেছেন, টিকিট পাওয়া যাবে, বেশি কথা বলার দরকার নাই।’
সাগর হোসেন ঈদের ছুটির দুই দিন আগের রাজশাহীর টিকিটের জন্য চিন্তিত। তিনি বলেন, ‘সকাল থেকে অ্যাপে কত চেষ্টা করলাম, টিকিট নাই। ট্রেন বন্ধ, অফিসও খোলে নাই। তাহলে দুই ঘণ্টায় সব টিকিট গেল কই?’
এ প্রসঙ্গে জানতে রেলমন্ত্রী নূরুল ইসলাম সুজন গতকাল বিকালে বলেন, ‘ঈদের অগ্রিম টিকিট প্রতিদিনের জন্য ১৫ হাজারের বেশি নেই। কারণ অর্ধেক আসন ফাঁকা রেখে ট্রেন পরিচালনা করা হবে। এ টিকিট পাওয়ার জন্য অ্যাপ ও ওয়েবসাইটে ৩০ লাখের বেশি হিট হয়েছে, তাই সার্ভার সমস্যার কথা বলছেন টিকিটপ্রত্যাশীরা। রেলের টিকিটের দাম কম। বাসে গেলে যানজট এবং টিকিটের দাম বেশি তাই সবাই রেল টিকিটের জন্য আগ্রহ বেশি দেখাচ্ছে। রেল টিকিট বিক্রি বা রেল চালানোর সিদ্ধান্ত খুব দ্রুত নিতে হয়েছে, তাই অনেক বিষয়ে প্রস্তুতি ছিল না। যারা টিকিট পাচ্ছেন তারা যেন স্বাস্থ্যবিধি মেনে যাতায়াত করেন, সে বিষয়ে জোর দেয়া হবে।’
মঙ্গলবার রাতে রেলওয়ে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানায়, আন্তঃনগর ট্রেনের ১৫, ১৬, ১৭ ও ১৮ জুলাইয়ের টিকিট বুধবার সকাল ৮টা থেকে অগ্রিম ব্যবস্থাপনায় ইস্যু করা হবে। ১৫ থেকে ২২ জুলাই পর্যন্ত (২১ জুলাই ঈদের দিন ছাড়া) যাত্রীদের সামাজিক ও শারীরিক দূরত্ব নিশ্চিতে আন্তঃনগর ট্রেনগুলোর বিদ্যমান আসন সংখ্যার অর্ধেক (৫০ শতাংশ) টিকিট ইস্যু করা হবে বলেও জানানো হয়।
ঈদের আগে লকডাউন শিথিল হওয়ায় ৩৮টি আন্তঃনগর এবং ১৯টি মেইল ও কমিউটার ট্রেন দিয়ে আজ থেকে শুরু হচ্ছে ট্রেন যাত্রা। কোরবানির ঈদ সামনে রেখে ১৪ জুলাই মধ্যরাত থেকে ২৩ জুলাই সকাল ৬টা পর্যন্ত সব বিধিনিষেধ শিথিল করে মঙ্গলবার প্রজ্ঞাপন জারি করেছে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ।
এ সময় ১৫ জুলাই থেকে ২২ জুলাই স্বাস্থ্যবিধি মেনে অর্ধেক আসন ফাঁকা রেখে যাত্রীবাহী ট্রেন চলাচল শুরু করবে বলে সোমবার রাতে জানিয়েছিল রেলপথ মন্ত্রণালয়। কভিড-১৯ সংক্রমণ বাড়তে থাকায় গত ২২ জুন যাত্রীবাহী ট্রেন চলাচল বন্ধ করে দেয়া হয়েছিল। এরপর ১ জুলাই শুরু হয়েছিল সর্বাত্মক লকডাউন, যার মেয়াদ ১৪ জুলাই মধ্যরাত পর্যন্ত।
ঈদের ছুটির পর ২৩ জুলাই সকাল ৬টা থেকে ৫ আগস্ট মধ্যরাত পর্যন্ত আগের বিধিনিষেধগুলো আবার কার্যকর হবে বলে সরকারি ঘোষণায় জানানো হয়েছে।
রেলপথ মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, রেলওয়ের ৩৬২টি ট্রেনের মধ্যে স্বাভাবিক সময়ে ১০২টি আন্তঃনগর ট্রেন এবং ২৬০টি লোকাল, কমিউটার ট্রেন ও মালবাহী ট্রেন চলাচল করে।
সূত্র:শেয়ার বিজ, জুলাই ১৫, ২০২১