শিরোনাম

ভারতের হাওড়ায় মাটি খুঁড়ে পাওয়া গেলো প্রায় ১৫০ বছরের পুরনো রেল লাইন

ভারতের অন্যতম ব্যস্ত রেলস্টেশন হাওড়া(কলকাতা)

।। আন্তর্জাতিক নিউজ ।।

ভারতের পশ্চিমবঙ্গের হাওড়ায় ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রো স্টেশনে পৌঁছনোর রাস্তা তৈরির জন্য খোঁড়াখুঁড়ি করতে গিয়ে শতাধিক বছরের পুরনো রেললাইনের হদিস মিলল। মাটির প্রায় ৪ থেকে ৫ ফুট নীচে ডিআরএম নামক ভবনের সামনে দিয়ে ওই রেললাইন গুগলি নদীর ধার পর্যন্ত গিয়েছে। প্রাথমিকভাবে রেল কর্মকর্তাদের অনুমান, ১৮৫৪ সালে হাওড়া থেকে রানিগঞ্জ পর্যন্ত ট্রেন চলাচল শুরুর সময়ে ওই লাইন ব্যবহৃত হত। সে সময়ে রেললাইন নদীর ধার পর্যন্ত বিস্তৃত ছিল। স্টিমার বা জাহাজে করে আসা পণ্য ক্রেনের মাধ্যমে রেলের ওয়াগনে বোঝাই করে নিয়ে যাওয়া হত।

হাওড়া স্টেশনের পুরনো ভবনের অস্তিত্ব ছিল ১৮৫৪ সাল থেকে ১৯০৫ সাল পর্যন্ত। তার মধ্যেই বর্তমান হাওড়া স্টেশনের নির্মাণকাজ সম্পন্ন হয়। রেল সূত্রের খবর অনুযায়ী, পুরনো রেললাইনটির দৈর্ঘ্য দেড়শো মিটার পর্যন্ত হতে পারে। প্রাথমিকভাবে মনে করা হচ্ছে, ওই রেললাইন ইংল্যান্ড থেকে আমদানি করা হয়েছিল।

পুরনো মানচিত্র থেকে অনুমান, ওই অংশে সেই সময়ের হাওড়া স্টেশনের তিন নম্বর প্ল্যাটফর্ম ছিল। পরে তার কাছাকাছি পার্সেল প্ল্যাটফর্ম তৈরি হয়। তবে এখনও ওই রেললাইনের বয়স সম্পর্কে নিশ্চিত নন রেল কর্তৃপক্ষ। আপাতত অতি সাবধানে খোঁড়াখুঁড়ি করে রেললাইন যতদূর সম্ভব উদ্ধারের চেষ্টা চলছে। এ ক্ষেত্রে প্রত্নতত্ত্ববিদদেরও সাহায্য নেওয়া হচ্ছে। রেললাইন উদ্ধারের পরে তার বয়স নির্ণয় করে ইতিহাসের বিস্তারিত বিবরণ জানার চেষ্টা করা হবে বলে জানা গেছে।

রেল কর্তৃপক্ষ আরও জানায়, হাওড়া ডিআরএম অফিসের সামনে মেট্রো সম্প্রসারণের জন্য লাইন করার কাজ চলছিল। সেখানেই মাটি খুঁড়তে গিয়ে পাওয়া যায় এই ব্রিটিশ আমলের রেল লাইনের হদিস। স্বাভাবিকভাবে এই রেললাইন ঘিরে রেল কর্তৃপক্ষ ও কর্মকর্তারাদের মধ্যে উন্মাদনা দেখা যাচ্ছে।


কর্তৃপক্ষ মারফত খবর পাওয়া যাচ্ছে, এই রেল লাইনের সঠিক বয়স জানার জন্য রেল লাইনে নানা রকম পরীক্ষা-নিরীক্ষা চালানো হবে। তাদের অনুমান, রেল লাইনটি কম করে হলেও ১৫০ বছরের পুরনো হবে।

ভারতে যখন রেল পরিষেবা চালু হয়েছিল সেই সময়ে এই রেল লাইন তৈরি হয়েছিল বলে মনে করেন তারা। এই কারণে, এত পুরোনো একটি রেললাইনকে সংরক্ষণ করার চিন্তা-ভাবনা করেছে রেল কর্তৃপক্ষ। সেক্ষেত্রে হাওড়ার রেল মিউজিয়ামে এই পূরনো রেললাইনটি সংরক্ষণ করা হতে পারে। রেল লাইনটিকে সম্পূর্ণ বের করে তারপরেই পরীক্ষা-নিরীক্ষা চালানো হবে।

তবে যেহেতু এখন মেট্রোর কাজ চলছে, সেই কারণে এই মুহূর্তে এই জায়গায় কোন ট্রেন লাইন রাখা যাবেনা। তাই এই লাইনটিকে দ্রুত সরিয়ে ফেলার সিদ্ধান্ত নিয়েছে মেট্রোরেল কর্তৃপক্ষ।

প্রসঙ্গত, হাওড়া মেট্রো স্টেশনের কাজ চলমান। কাজ সম্পন্ন হয়ে গেলে এই মেট্রো স্টেশনটি হবে ভারতের গভীরতম মেট্রো স্টেশন। এর আগে পর্যন্ত দেশের গভীরতম মেট্রো স্টেশন ছিল দিল্লির হজ খাস রেলস্টেশন। দিল্লির ওই মেট্রো স্টেশনের গভীরতা ছিল ২৯ মিটার। হাওড়া মেট্রো স্টেশন এর কাজ সম্পূর্ণ হলে, স্টেশনটির গভীরতা হবে ৩৩ মিটার। হাওড়ায় মেট্রো স্টেশন তৈরি হয়ে গেলে সেক্টর ফাইভ থেকে হাওড়া পর্যন্ত ছুটবে মেট্রো।

সূত্রঃ আনন্দবাজার পত্রিকা ভারত বার্তা (অনলাইন)


Comments are closed.