শিরোনাম

সৈয়দপুর-চিলাহাটি রেলপথে ২১ লেভেল ক্রসিং অরক্ষিত

সৈয়দপুর-চিলাহাটি রেলপথে ২১ লেভেল ক্রসিং অরক্ষিত

মো. আমিরুজ্জামান:
নীলফামারীর সৈয়দপুর থেকে চিলাহাটি পর্যন্ত রেলপথে ২১টি লেভেল ক্রসিং অরক্ষিত অবস্থায় রয়েছে। প্রতিটি লেভেল ক্রসিংয়ে বাঁশের প্রতিবন্ধকের (ব্যারিয়ার) ওপর ভর করে ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছে ট্রেন।
জনবল সংকট থাকায় এসব লেভেল ক্রসিংয়ে টানা ১২ ঘণ্টা কাজ করতে হচ্ছে গেটম্যানদের। ফলে অরক্ষিত লেভেল ক্রসিংয়ের কারণে ঐ রেলপথে প্রায়ই দুর্ঘটনা ঘটছে। তারপরে সব জেনেও নীরব ভূমিকা পালন করছে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।

রেলওয়ের ঊর্ধ্বতন উপসহকারী প্রকৌশলীর সৈয়দপুর কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, সৈয়দপুর থেকে নীলফামারী জেলার ডোমার উপজেলার চিলাহাটি পর্যন্ত দীর্ঘ ৫৪ কিলোমিটার এ রেলপথে ৩৬টি লেভেল ক্রসিং রয়েছে। এসবের মধ্যে বৈধ লেভেল ক্রসিং ৩৩টি, অবৈধ তিনটি। এসব বৈধ লেভেল ক্রসিংয়ে গেটম্যান আছেন মাত্র ১২ জন। তবে অধিকাংশ লেভেল ক্রসিংয়ে নেই প্রতিবন্ধক। তাই বাধ্য হয়ে গেটম্যানরা নিজ উদ্যোগে প্রতিবন্ধক হিসেবে বাঁশ ব্যবহার করে ঐসব লেভেল ক্রসিংয়ে ট্রেন পার করাচ্ছেন।

সৈয়দপুরের পোড়াহাট এলাকায় ই/১২৮ নম্বর লেভেল ক্রসিংয়ে গিয়ে দেখা যায়, এক কক্ষবিশিষ্ট একটি ঘুমটি ঘরে গেট লাগানোর জন্য লোহার কিছু অবকাঠামো বসানো হয়েছে। কিন্তু গেট ব্যারিয়ার আর লাগানো হয়নি। এসময় জানতে চাইলে গেটম্যান মামুনুর রশীদ করিম বলেন, প্রায় দেড় বছর ধরে এ লেভেল ক্রসিংয়ে দায়িত্ব পালন করছেন। তিনি ছাড়া এখানে আরো একজন গেটম্যান রয়েছেন। তবে তাদের কোনো রকম প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়নি জানিয়ে বলেন লেভেল ক্রসিংয়ে গেট না থাকায় তিনি একটি বাঁশ সংগ্রহ করে সেই বাঁশ দিয়েই সড়কের যানবাহন আটকে ট্রেন পার করছেন। স্টেশন মাস্টারের সঙ্গেও তাদের কোনো যোগাযোগের ব্যবস্থা নেই। তারা আগের লেভেল ক্রসিংয়ের গেটম্যানের সঙ্গে নিজস্ব মুঠোফোনে ট্রেনের খবর নিয়ে গেটে বাঁশ দিয়ে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে ট্রেন পার করেন। অনেক সময় আগের স্টেশনের গেটম্যান মোবাইল ফোন রিসিভ না করলে, তখন লাইনে দাঁড়িয়ে ট্রেনের ইঞ্জিন দেখে লেভেল ক্রসিংয়ে বাঁশ লাগিয়ে যানবাহন চলাচলে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করেন। তবে রাতের বেলা ট্রেনের আলো দেখে কিংবা হুইসেল শুনে দায়িত্ব পালন করেন। এ কাজ করতে গিয়ে মাঝে-মধ্যে ছোটো-বড়ো দুর্ঘটনাও ঘটে।

সূত্র জানায়, গত ২০১৫ সালের ১৪ আগস্ট গভীর রাতে লেভেল ক্রসিংয়ে দুর্ঘটনায় সৈয়দপুর থানার তত্কালীন অফিসার ইনচার্জ মো. ইসমাইল হোসেনসহ কয়েকজন পুলিশ সদস্য আহত হন। গেটম্যান মামুন আরো জানান, স্টেশনের সঙ্গে তাদের সরাসরি যোগাযোগের কোনো ব্যবস্থা না থাকায় প্রায় সময় ট্রেন আসার অনেক আগেই লেভেল ক্রসিং বন্ধ করতে হয়। এ নিয়ে অনেক সময় পথচারী কিংবা যানবাহন চালকদের সঙ্গে তাদের বাকিবতণ্ডার ঘটনাও ঘটে। এ ব্যাপারে কথা হয় বাংলাদেশ রেলওয়ের সৈয়দপুরের ঊর্ধ্বতন উপসহকারী প্রকৌশলী সুলতান মৃধার সাথে। তিনি সৈয়দপুর-চিলাহাটি রেলপথে কয়েকটি লেভেল ক্রসিংয়ে বাঁশ দিয়ে যানবাহন আটকানোর সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, ঐ সব লেভেল ক্রসিংয়ে এরই মধ্যে অবকাঠামো বসানো সম্পন্ন হয়েছে। খুব শিগগির আধুনিক ব্যারিয়ার লাগানো হবে।

সুত্র:ইত্তেফাক, ২৪ জুলাই, ২০১৯


About the Author

RailNewsBD
রেল নিউজ বিডি (Rail News BD) বাংলাদেশের রেলের উপর একটি তথ্য ও সংবাদ ভিত্তিক ওয়েব পোর্টাল।

Comments are closed.