শিরোনাম

শায়েস্তাগঞ্জ রেলওয়ে জংশন সমস্যায় জর্জরিত

শায়েস্তাগঞ্জ রেলওয়ে জংশন সমস্যায় জর্জরিত

রাসেল চৌধুরী : অন্তহীন সমস্যার গ্যাঁড়াকলে বন্দি জেলার শায়েস্তাগঞ্জ রেলওয়ে জংশন। টিকিট কালোবাজারি ও ছিনতাইকারীরা খুঁড়ে খুঁড়ে খাচ্ছে যাত্রীসেবা। এ ছাড়া পরিত্যক্ত ভবনে অনৈতিক কার্যকলাপের বিষয়টিও প্রায় ‘ওপেন সিক্রেট’। এ অবস্থায় এলাকার যুবসমাজ বিপথগামী হওয়াসহ প্রতিনিয়ত চরম হয়রানির শিকার হচ্ছেন হাজার হাজার যাত্রী।

শায়েস্তাগঞ্জ জংশন থেকে আন্তঃনগর ও লোকাল ট্রেনে প্রতিদিনি ঢাকা-সিলেট-চট্টগ্রামসহ বিভিন্ন স্থানে যাতায়াত করে থাকেন হাজারো যাত্রী। তাদের অভিযোগ, দীর্ঘদিন ধরে টিকিট সংকটের কারণে চরম ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন তারা। এর মধ্যে আবার মড়ার উপর খাঁড়ার ঘা- এর মতো টিকিট কালোবাজারিদের দৌরাত্ম্যে উঠছে নাভিশ্বাস। কিছু কর্মকর্তার যোগসাজশে ভোরের আলো ফোটার আগেই অতি সুকৌশলে টিকিট পৌঁছে যায় কালোবাজারিদের হাতে। পরে কালোবাজারিদের সিন্ডিকেট যাত্রীদের জিম্মি করে একেকটি টিকিট বিক্রি করে দ্বিগুণ দামে। সেইসঙ্গে টিকিট বরাদ্দের অপ্রতুলতা তো আছেই। অতি গুরুত্বপূর্ণ এ স্টেশনটির জন্য প্রতিদিন মাত্র ২৪৪টি টিকিট বরাদ্দ রয়েছে, যা চাহিদার তুলনায় একেবারেই হাস্যকর। ফলে ঘণ্টার পর ঘণ্টা লাইনে দাঁড়িয়েও গন্তব্য স্থানের টিকিট পান না সাধারণ যাত্রীরা। সেইসঙ্গে যুক্ত হয়েছে ছিনতাইকারীদের কর্মতৎপরতা। যথাযথ নজরদারির অভাবে স্টেশনের প্লাটফর্মটি এখন পরিণত হয়েছে ছিনতাইকারীদের নিরাপদ অভয়ারণ্যে। প্রায় প্রতিদিনই ঘটছে মোবাইল ফোন ও মানিব্যাগ ছিনতাইয়ের ঘটনা। একটি সংঘবদ্ধ ছিনতাইকারী চক্র এখানে দীর্ঘদিন ধরে সক্রিয় থাকলেও রহস্যজনক কারণে নীরব ভূমিকা পালন করছে রেলওয়ে প্রশাসন।

যাত্রীদের অভিযোগ, বিভিন্ন প্রয়োজনে প্রায়ই স্টেশন মাস্টারকে খুঁজে পাওয়া যায় না। স্টেশনটিতে রয়েছে বিশুদ্ধ খাবার পানির তীব্র সংকট। প্রায়ই বন্ধ থাকে ওয়েটিং রুম। পর্যাপ্ত ‘ওয়েটিং সিট’ না থাকায় ঘণ্টার পর ঘণ্টা দাঁড়িয়ে থাকতে হয় শত শত যাত্রীকে। স্টেশনটিতে নেই সরকারি শৌচাগার। এ অবস্থায় পাবলিক টয়লেটে লেগে থাকে উপচেপড়া ভিড়। তাছাড়া স্থানে স্থানে স্তূপ করে রাখা ময়লা-আবর্জনার দুর্গন্ধ ও প্লাটফর্মের ভাঙা শেড দিয়ে পড়া বৃষ্টির পানিতে যাত্রীদের দূর্ভোগ অসহনীয় পর্যায়ে পৌঁছেছে।

স্থানীয়রা জানান, জংশনটির পরিত্যক্ত জমিতে গড়ে উঠেছে অবৈধ স্থাপনা। এসব পরিত্যক্ত ভবনে চলে অনৈতিক কার্যকলাপ। বিষয়টি জানলেও প্রতিরোধে কেন ব্যবস্থাই নিচ্ছে না রেল কর্তৃপক্ষ।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে স্টেশন মাস্টার এবিএম সাইফুল ইসলাম জানান, দায়িত্ব পালনে তার কোনো ত্রুটি নেই। তবে তিনি অনৈতিক কার্যকলাপ ও ছিনতাইকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাস দিলেও টিকিট কালোবাজারির বিষয়টি এড়িয়ে যান। জনবল ও টিকিট সংকটের বিষয়টি ওপর মহলে লিখিতভাবে জানানো হয়েছে বলে জানান তিনি।

সুত্র:সমকাল, ১৭ অক্টোবর ২০১৯


About the Author

RailNewsBD
রেল নিউজ বিডি (Rail News BD) বাংলাদেশের রেলের উপর একটি তথ্য ও সংবাদ ভিত্তিক ওয়েব পোর্টাল।

Comments are closed.