শিরোনাম

হাতির জন্য দোহাজারী–কক্সবাজার রুটে এলিফ্যান্ট ওভারপাস নির্মাণ


।। নিউজ ডেস্ক ।।
দোহাজারী–কক্সবাজার রুটে ‘এলিফ্যান্ট ওভারপাস’ নির্মাণ করা হয়েছে। ফলে ওভারপাসের উপর দিয়ে হাতি ও নিচ দিয়ে ট্রেন চলাচল করবে। লোহাগাড়া উপজেলার চুনতি বন্যপ্রাণী চলাচলে যেন কোনো বাধা সৃষ্টি না হয়, এজন্য ওই এলাকায় তৈরি করা হয়েছে ‘এলিফ্যান্ট ওভারপাস’।

জানা যায়, চুনতি বন্যপ্রাণী অভয়ারণ্যের মাঝ দিয়ে গেছে রেললাইন। এর প্রায় ১০ কিলোমিটার অংশ অভয়ারণ্যের মধ্যে পড়েছে। এই অংশে বন্যহাতির চলাচলে যাতে সমস্যা না হয় বিষয়টি মাথায় রেখে তিনটি আন্ডারপাস ও একটি ওভারপাস নির্মাণ করা হয়েছে। ‘এলিফ্যান্ট ওভারপাস’ নির্মাণের জায়গা নির্ধারণে জন্য এশিয়ার উন্নয়ন ব্যাংকের (এডিবি) বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ দল প্রায় দুই বছর কাজ করেছেন। ভারত–বাংলাদেশ–মিয়ানমারের মধ্যে যাতায়াত করা এশিয়ান প্রজাতির হাতি সবচেয়ে বেশি চলাচল করে চুনতি বন্যপ্রাণী অভয়ারণ্য এলাকা দিয়ে। ওভারপাস দিয়ে হাতিরা এক পাহাড় থেকে অন্য পাহাড়ে যাতায়াত করতে পারবে। অপরদিকে অভয়ারণ্য এলাকায় বন্যপ্রাণীরা যাতে রেললাইনে আসতে না পারে তার জন্য করা হচ্ছে লবণ পানির লেক। বন্যহাতি লবণ পানি পান করতে পছন্দ করে। এছাড়া বন্যহাতির দল কোথাও পানি দেখলে সেখানে অবস্থান করতেও পছন্দ করে।

দেখা গেছে, ৫০ মিটার দীর্ঘ এলিফ্যান্ট ওভারপাসের কাজ শেষ হয়েছে। ওভারপাসের ওপর রোপণ করা হয়েছে কলা, বাঁশসহ বিভিন্ন প্রজাতির গাছ। তৈরি করা হচ্ছে লবণ পানির লেক। দুই পাশে নির্দিষ্ট এলাকা পর্যন্ত সুরক্ষা দেওয়াল তৈরির কাজ চলমান রয়েছে। পুরো অভয়ারণ্যে নির্মাণ করা হয়েছে তিনটি আন্ডারপাস ও একটি ওভারপাস।

সম্প্রতি বাংলাদেশ রেলপথ মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. মো. হুমায়ুন কবীর চুনতি বন্যপ্রাণী অভয়ারণ্যে নির্মিত এলিফ্যান্ট ওভারপাস পরিদর্শন করেন। এ সময় তিনি জানান, প্রকৃতি ও পরিবেশের কথা বিবেচনা করে এলিফ্যান্ট ওভারপাস নির্মাণ করা হয়েছে। এশিয়ার কোনও দেশে বন্যপ্রাণী চলাচলের জন্য এমন উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। জায়গা নির্ধারণে জন্য এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের (এডিবি) বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ দল প্রায় দুই বছর কাজ করেছে। সব কাজ শেষ হলে ওপর দিয়ে চলাচল করবে হাতিসহ নানান বন্যপ্রাণী, নিচ দিয়ে চলবে ট্রেন।

চুনতি বন্যপ্রাণী অভয়ারণ্য রেঞ্জ কর্মকর্তা মাহমুদ হোসেন জানান, বন্যহাতির দল যে করিডোর দিয়ে বেশি যাতায়াত করে, সেখানেই এলিফ্যান্ট ওভারপাস নির্মাণ করা হয়েছে। তবে বন্যপ্রাণীরা ওভারপাস ও আন্ডারপাস দিয়ে যাতায়াতে অভ্যস্ত নয়। এভাবে চলাচল করতে একটু সময় লাগবে।

চীনের দুটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান চায়না রেলওয়ে ইঞ্জিনিয়ারিং করপোরেশন (সিআরইসি) ও চায়না সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং কনস্ট্রাকশন করপোরেশন (সিসিইসিসি) প্রকল্পের নির্মাণকাজ করছে। এছাড়া বাংলাদেশের তমা কনস্ট্রাকশন কোম্পানি ও ম্যাক্স ইনফ্রাস্ট্রাকচার লিমিটেড এ প্রকল্পের কাজের সঙ্গে যুক্ত রয়েছে।

প্রকল্প পরিচালক মফিজুর রহমান জানান, চুনতি বন্যপ্রাণী অভয়ারণ্যে এলিফ্যান্ট ওভারপাস নির্মাণকাজ শেষ হয়েছে। বর্তমানে রেললাইনের দুইপাশে সুরক্ষা দেওয়াল নির্মাণকাজ চলছে। ১৫ অক্টোবর রেলপথে ট্রায়াল রান হবে। ২৮ অক্টোবর দোহাজারী-কক্সবাজার রেললাইন উদ্বোধন করার কথা রয়েছে।


About the Author

RailNewsBD
রেল নিউজ বিডি (Rail News BD) বাংলাদেশের রেলের উপর একটি তথ্য ও সংবাদ ভিত্তিক ওয়েব পোর্টাল।