শিরোনাম

যেভাবে কালোবাজারি হয় ট্রেনের টিকিট


।। নিউজ ডেস্ক ।।
ট্রেনের টিকিট কালোবাজারির মূল চক্র উত্তম-সেলিম সিন্ডিকেটের সঙ্গে হাত মিলিয়েছে অনলাইনভিত্তিক টিকিট বিক্রির কোম্পানি সহজ ডটকম। রেলের বেশকিছু কর্মকর্তারা, কর্মচারী, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের সঙ্গে হাত মিলিয়ে এই সিন্ডিকেট টিকিট কালোবাজারির বিশাল সিন্ডিকেট গড়ে তুলেছিলো বলে র‍্যাবের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।

বিভিন্নস্থানে অভিযান চালিয়ে বৃহস্পতিবার কালোবাজারির মূলহোতা উত্তম-সেলিমসহ ১৪ জন সক্রিয় সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে র‍্যাব। তাঁদের কাছে ১ হাজার ২৪৪টি আসনের টিকিট পাওয়া গেছে। শুক্রবার কারওয়ান বাজার র‍্যাব মিডিয়া সেন্টারে এ নিয়ে সংবাদ সম্মেলন করেন র‍্যাবের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন।

খন্দকার মঈন বলেন, ‘কমলাপুর রেলস্টেশনে সেলিম এবং বিমানবন্দর রেলস্টেশনে উত্তমের নেতৃত্বে চক্রটি দীর্ঘদিন ধরে মহানগর প্রভাতী, তূর্ণা নিশিথা, চট্টলা এক্সপ্রেস, উপবন এক্সপ্রেস, মহানগর এক্সপ্রেস, পারাবত এক্সপ্রেস, উপকূল এক্সপ্রেস, জয়ন্তিকা এক্সপ্রেস, কালনী এক্সপ্রেসসহ বিভিন্ন ট্রেনের টিকিট কালোবাজারি করে আসছিল।’

এ র‍্যাব কর্মকর্তা বলেন, ‘সেলিম ৩৫ বছর ধরে টিকিট কালোবাজারির সঙ্গে জড়িত। সেলিম ও উত্তমের নেতৃত্বে সহযোগীরা উপযুক্ত সময় বুঝে সংগ্রহকৃত টিকিট নিয়ে রেলস্টেশনের ভেতরে অবস্থান করে। রেলস্টেশনে এসে টিকিট না পাওয়া যাত্রীদের কাছে তারা বেশি দামে টিকিট বিক্রি করে।’

তিনি জানান, ঈদের ছুটিসহ বিভিন্ন ছুটিকে কেন্দ্র করে প্রতিটি টিকিট তিন-চার গুণ বেশি দামে বিক্রি করে সিন্ডিকেটটি। এই লভ্যাংশের ৫০ শতাংশ নেন সিন্ডিকেট সদস্যরা এবং বাকি ৫০ শতাংশ কাউন্টারে থাকা বুকিং কর্মচারী ও তাঁদের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, সহজ ডটকমের কর্মকর্তা-কর্মচারী ও আইটি বিশেষজ্ঞরা পান।

যেভাবে টিকিট যায় সিন্ডিকেটের হাতে

খন্দকার মঈন জানান, গ্রেপ্তার সেলিম ও উত্তমের নেতৃত্বে সহযোগীরা প্রথমে ট্রেনের কাউন্টারে বিভিন্ন ভ্রাম্যমাণ যাত্রী, রেলস্টেশনের কুলি, স্টেশনের আশপাশের এলাকার টোকাই, রিকশাওয়ালা ও দিনমজুরদের লাইনে দাঁড় করিয়ে টিকিট সংগ্রহ করেন। যেহেতু প্রতি জাতীয় পরিচয়পত্রের (এনআইডি) বিপরীতে চারটি টিকিট দেওয়া হয়, প্রত্যেকে চারটি করে টিকিট সংগ্রহ করার বিনিময়ে পান ১০০ টাকা। এ ছাড়া, কাউন্টারে থাকা কিছু অসাধু টিকিট বুকিং কর্মচারীর যোগসাজশে তাঁরা সাধারণ যাত্রীদের টিকিট কাটার সময় দেওয়া এনআইডি সংগ্রহ করে রাখেন। পরে সেগুলো ব্যবহার করে টিকিট সংগ্রহ করেন। এভাবে প্রতিদিন প্রায় ৫০০ টিকিট সংগ্রহ করেন এঁরা।

র‍্যাব কর্মকর্তা জানান, ঈদ, পূজা, সাপ্তাহিক ছুটিসহ বিশেষ ছুটির দিনে রেলস্টেশনে কর্মরত কিছু অসাধু কর্মচারীকে তাঁরা হাত করেন। পরে অনলাইনে টিকিট কেনার জন্য ব্যবহৃত ভেন্ডর প্রতিষ্ঠান সহজ ডটকমের কয়েকজন কর্মকর্তা ও সার্ভার রুম/আইটির সদস্যদের সহযোগিতা নেন। সার্ভার ডাউন করে তাঁদের কাছে থাকা এনআইডি দিয়ে টিকিট সংগ্রহ করেন। অসাধু এই কর্মকর্তারাও নজরদারিতে রয়েছেন বলে জানিয়েছেন র‍্যাব কর্মকর্তা খন্দকার মঈন।


About the Author

RailNewsBD
রেল নিউজ বিডি (Rail News BD) বাংলাদেশের রেলের উপর একটি তথ্য ও সংবাদ ভিত্তিক ওয়েব পোর্টাল।