শিরোনাম

ট্রেন ওয়াশিং প্লান্ট করছে রেলওয়ে

খবর ট্রেন ওয়াশিং প্লান্ট করছে রেলওয়ে

নিহাল হাসনাইন : বিশ্বের উন্নত দেশগুলোর মতো বাংলাদেশেও এখন থেকে অটোমেটিক (স্বয়ংক্রিয়) পদ্ধতিতে ট্রেন ওয়াশ করা হবে। এজন্য প্রথমবারের মতো দেশে অটোমেটিক ট্রেন ওয়াশিং প্লান্ট স্থাপন করার উদ্যোগ নিয়েছে বাংলাদেশ রেলওয়ে। পরীক্ষামূলকভাবে প্রথমে রাজধানীর কমলাপুরের ঢাকা রেলওয়ে স্টেশন ও রাজশাহী রেলওয়ে স্টেশনে এ দুটি ওয়াশিং প্লান্ট স্থাপন করা হবে। পরবর্তী সময়ে দেশের অন্য স্টেশনগুলোতেও এ প্লান্ট স্থাপন করা হবে। এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের (এডিবি) অর্থায়নে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন হবে।

রেলওয়ে সূত্র জানায়, বর্তমানে প্রতিটি ট্রেন সম্পূর্ণ ম্যানুয়াল পদ্ধতিতে ঢাকা ও রাজশাহীতে অবস্থিত ওয়াশফিল্ডে পরিষ্কার করা হয়। এতে প্রতিটি ট্রেন পরিষ্কারে ন্যূনতম দেড় ঘণ্টা বা অতিরিক্ত বগিসম্পন্ন ট্রেনের ক্ষেত্রে ২ ঘণ্টা সময় ব্যয় হয়। এতে অনেক সময় স্বাভাবিক সময়ে নির্দিষ্ট গন্তব্যে ট্রেন ছেড়ে যেতে বিলম্ব হয়। এছাড়া ম্যানুয়াল পদ্ধতিতে ট্রেন ওয়াশে ব্যয়ও অনেক বেশি হয়। অথচ এর তুলনায় অনেক কম সময় ও খরচে প্রতিটি ট্রেন ওয়াশ করা সম্ভব হবে অটোমেটিক ট্রেন ওয়াশিং প্লান্টে। এতে কোনো প্রকার হাতের ছোঁয়া ছাড়াই প্রতিটি কোচ পরিষ্কারে সময় লাগবে মাত্র ২-৩ মিনিট। তবে ক্ষেত্রেবিশেষ তা সর্বোচ্চ ৫ মিনিটও লাগতে পারে।

রেলওয়ের দায়িত্বশীল এক কর্মকর্তা জানান, বর্তমানে দেশের গুরুত্বপূর্ণ ১৩টি রেলস্টেশনে ওয়াশফিল্ডে প্রতিদিন ট্রেনের ট্রিপ শেষে ম্যানুয়াল পদ্ধতিতে নিয়মিত ট্রেন পরিষ্কারের কাজ করা হয়। তবে এর মধ্যে প্রাথমিকভাবে গুরুত্ব বিবেচনায় ঢাকা ও রাজশাহীতে এ দুটি অটোমেটিক ট্রেন ওয়াশিং প্লান্ট স্থাপন করা হচ্ছে। পরবর্তী সময়ে সব ওয়াশফিল্ডে স্বয়ংক্রিয় প্লান্ট স্থাপনে সরকারের বিশেষ পরিকল্পনা রয়েছে।

এ প্রসঙ্গে ওয়াশিং প্লান্ট প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক হারুনুর রশিদ বলেন, ট্রেনের শিডিউল রক্ষা করা এমনিতেই কষ্টসাধ্য বিষয়। তার ওপর ট্রেন ওয়াশ করতে গিয়ে দেড়-দুই ঘণ্টা সময় ব্যয় হলে শিডিউল রক্ষা করা আরো কঠিন হয়ে পড়ে। তাই চাহিদার কথা বিবেচনা করেই প্লান্ট দুটি স্থাপন করার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। তাছাড়া ট্রিপ শেষে ট্রেন ওয়াশের বাড়তি সময় ব্যয় কমিয়ে আনাও এ প্রকল্পের অন্যতম লক্ষ্য বলে জানান তিনি।

প্রকল্প সূত্রে জানা যায়, রেল মন্ত্রণালয়ের ২৫০টি ব্রড গেজ ও মিটারগেজ কোচ ক্রয় প্রকল্পের অধীনে এসব প্লান্ট স্থাপন করা হবে। যুক্তরাষ্ট্র থেকে ক্রয় করা এসব প্লান্ট স্থাপনে চুক্তিমূল্য ধরা হয়েছে মোট ৩২ কোটি টাকা। এছাড়া সরকারি নিয়মানুযায়ী ১৫ ভাগ ভ্যাট যোগ হবে। প্রকল্প মেয়াদ অনুযায়ী, ২০১৯ সালের মধ্যেই প্লান্ট দুটি স্থাপনের কাজ শেষ হবে।

বাংলাদেশ রেলওয়ের মহাপরিচালক আমজাদ হোসেন বণিক বার্তাকে বলেন, যাত্রীদের সময়মতো গন্তব্যে পৌঁছাতে ও যাত্রীসেবা বৃদ্ধি করতে যানবাহন (ট্রেন) পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে আমরা বদ্ধপরিকর। সেবা বৃদ্ধির অংশ হিসেবে দেশে প্রথমবারের মতো এ দুটি অটোমেটিক ট্রেন ওয়াশিং প্লান্ট স্থাপন করা হচ্ছে।  প্রকল্প মেয়াদ অনুযায়ী ৩২ কোটি টাকা ব্যয়ে ২০১৯ সালের মধ্যে এসব ওয়াশিং প্লান্ট স্থাপনের কথা থাকলেও প্রয়োজন বিবেচনা করে আশা করি চলতি বছরের সেপ্টেম্বরের মধ্যেই ওয়াশিং প্লান্ট দুটি চালু করা সম্ভব হবে।

সুত্র:বণিক বার্তা, জুলাই ০৩, ২০১৮


About the Author

RailNewsBD
রেল নিউজ বিডি (Rail News BD) বাংলাদেশের রেলের উপর একটি তথ্য ও সংবাদ ভিত্তিক ওয়েব পোর্টাল।

Comments are closed.