শিরোনাম

২ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে দর্শনা-মেহেরপুর রেল সংযোগ


।। রেল নিউজ ।।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দেওয়া প্রতিশ্রুতির এবার বাস্তবায়ন হতে চলেছে। স্বপ্নের রেল সংযোগের আওতায় আসছে মুজিবনগর ও মেহেরপুর। সম্প্রতি শেষ হওয়া সম্ভাব্যতা যাচাই সমীক্ষার তথ্য অনুযায়ী, ৩৫ কিলোমিটার মূল লাইন ও ১০ কিলোমিটার লুপ লাইন নির্মাণসহ এই কাজে ব্যয় হবে মোট ২ হাজার ৫৮ কোটি টাকা।

এই লাইনে স্টেশন থাকবে ছয়টি। স্টেশন গুলো হলো—দর্শনা, বাস্তোপুর, কানাইডাঙ্গা, মুজিবনগর, মোনাখালি ও মেহেরপুর।
প্রকল্পটির সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের সর্বশেষ সময়সীমা নির্ধারণ করা হয়েছিল চলতি বছরের জুন মাসে। ইতোমধ্যে প্রকল্প প্রতিবেদনটি সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে জমা দেওয়া হয়েছে। নকশা তৈরির কাজও শেষ হয়েছে।


উল্লেখ্য, গত জুনে প্রকল্প সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা রাজধানীর একটি হোটেলে একটি বৈঠক করেন। বৈঠকে বাংলাদেশ রেলওয়ের মহাপরিচালক ধীরেন্দ্র নাথ মজুমদারসহ রেলের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। সেখানে এসব তথ্য উপস্থাপন করা হয়।

দর্শনা-মেহেরপুর রেল সংযোগের স্টেশন গুলো

দর্শনা-মেহেরপুর রেল সংযোগ সম্ভাব্যতা যাচাইয়ে দেখা গেছে, সর্বমোট ৫৬ কিলোমিটার রেললাইন স্থাপন করতে হবে। যার মধ্যে সাড়ে ৩৪ কিলোমিটার প্রধান লাইন, ১০ কিলোমিটার লুপ লাইন ও সাড়ে ৩ কিলোমিটার হবে সাইড লাইন।

এছাড়াও বিদ্যমান ৬ দশমিক ৬ কিলোমিটার লাইনও পুনঃনির্মাণ করতে হবে। পুরো লাইনে থাকবে ৩টি প্রধান সেতু। সেগুলো হলো- মাথাভাঙ্গা নদীর ওপরে একটি এবং ভৈরব নদীর উপরে দুটি। একইসঙ্গে লাইনে ৬৩টি কালভার্টও নির্মাণ করা হবে। প্রকল্পটি বাস্তবায়নের জন্য কর্তৃপক্ষকে প্রায় ৪২১ একর জমি অধিগ্রহণ করতে হবে। ইতোমধ্যে জমির মাপযোগ করা হয়েছে।


মেহেরপুর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন বলেন, ‘১৯৭১ সালে প্রথম বাংলাদেশ সরকার মুজিবনগরে শপথ নিয়েছিল। ফলে ঐতিহাসিকভাবেই মুজিবনগর গুরুত্বপূর্ণ স্থান। প্রধানমন্ত্রীর দেওয়া প্রতিশ্রুতির বাস্তবায়ন হতে চলেছে। ইতোমধ্যে রেললাইনের নকশা তৈরির কাজ শেষ হয়েছে। খুব শিগগিরি কাজ শুরু হবে বলে আশা করছি।’

প্রকল্প পরিচালক আরিফুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা লাইনের সম্ভাব্যতা যাচাই ও বিস্তারিত নকশা শেষ করেছি। আমরা একটি সম্পূর্ণ প্রতিবেদন জমা দিয়েছি। এখন লাইনটি নির্মাণে বিনিয়োগ প্রকল্প নেওয়া হবে কি না, সে বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ সিদ্ধান্ত নেবেন।’

২০১১ সালের এপ্রিলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মেহেরপুরকে দর্শনার সঙ্গে সংযুক্ত করার জন্য একটি রেললাইন নির্মাণের ঘোষণা দেন। ২০১৮ সালের আগস্ট মাস পর্যন্ত এই প্রকল্পের তেমন কোনো দৃশ্যমান অগ্রগতি দেখা যায়নি। ২০১৮ সালের সেপ্টেম্বরে ১২ কোটি ৪৮ লাখ টাকা ব্যয়ে সম্ভাব্যতা যাচাই ও লাইনের বিস্তারিত নকশা তৈরির জন্য একটি প্রকল্প হাতে নেয় বাংলাদেশ রেলওয়ে।
প্রকল্পটির সময়সীমা ২০২০ সালের আগস্টে থাকলেও ২০২০ সালের মার্চে কর্তৃপক্ষ এই কাজের জন্য অস্ট্রেলিয়া-বাংলাদেশ যৌথ উদ্যোগের একটি কোম্পানির সঙ্গে একটি চুক্তি সই করে।

রেলওয়ে সূত্রে জানা গেছে, স্থানীয় প্রতিনিধিরা কিছু বিষয়ে মতবিরোধ করায় লাইনটির অ্যালাইনমেন্ট চূড়ান্ত করতে কর্তৃপক্ষের দীর্ঘ সময় লেগেছে। এছাড়া, মহামারির কারণে প্রস্তুতিমূলক কাজেও দেরি হয়েছে।

সূত্রঃ রাইজিং বিডি, দ্য ডেইলি স্টার (অনলাইন)


Comments are closed.