।। রেল নিউজ ।।
নোয়াখালীতে রেলপথের অবহেলা ও অব্যবস্থাপনা রোধে সচেতন নোয়াখালীবাসীর ব্যানারে ৫ দফা দাবিতে সমাবেশ করা হয়েছে।
সোমবার ( ১০ অক্টোবর) নোয়াখালী প্রেসক্লাবের সামনে এ কর্মসূচি পালন করা হয়। এরপর জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে রেলমন্ত্রী বরাবর স্মারকলিপি জমা দেয়া হয়।
সমাবেশে বক্তারা নোয়াখালীর রেলপথ দেশের সবচেয়ে অবহেলিত রেলপথ দাবি করে বলেন, এ পথে মাত্র দু’টি ট্রেন চলাচল করে। একমাত্র আন্তঃনগর ট্রেন ‘উপকূল এক্সপ্রেস’ প্রতিদিন গড়ে দু’ঘণ্টা বিলম্বে পৌঁছায়। যা সপ্তাহান্তে তিন থেকে সাড়ে তিন ঘণ্টা পর্যন্ত বিলম্বে আসে। মেইল ট্রেন ‘নোয়াখালী এক্সপ্রেস’ মাত্র তিনটি কোচ নিয়ে কার্যক্রম পরিচালনা করে। তবুও বহুবিধ অব্যবস্থাপনার ফলে সাধারণ মানুষ তার সুবিধা বঞ্চিত।
সমাবেশে এ বছরের ১৪ ফেব্রুয়ারি রেলমন্ত্রীকে নতুন আন্তঃনগর ট্রেন ‘নিঝুম এক্সপ্রেস’ দ্রুত চালু করার প্রতিশ্রুতি স্মরণ করিয়ে বক্তারা বলেন, এক সময় নোয়াখালী থেকে চাঁদপুর, সিলেট, চট্টগ্রাম রেলপথে আন্তঃনগর ট্রেন, ডেমু ট্রেন ও মালবাহী ট্রেন চলাচল করতো। সেগুলো বিভিন্ন সময় লোকসানের অজুহাতে বন্ধ করে দেয়া হয়। পুরনো জেলা শহর নদী ভাঙ্গনের কবলে পড়ায় জেলার সাথে লক্ষ্মীপুরের মজু চৌধুরীর ঘাটের রেল যোগাযোগ বন্ধ হয়ে যায়। সেজন্য নানাবিধ সমস্যায় জর্জরিত নোয়াখালীর রেল সেবার মানবৃদ্ধির লক্ষ্যে প্রস্তাবিত ও মন্ত্রী মহোদয়ের প্রতিশ্রুত নিঝুম এক্সপ্রেস দ্রুত চালু করতে হবে।
তারা বলেন, উপসাগর এক্সপ্রেস, ডেমু ও মালবাহী ট্রেনসহ নোয়াখালী-চাঁদপুর, নোয়াখালী-সিলেট, নোয়াখালী-চট্টগ্রাম রেলপথের বন্ধ হওয়া ট্রেনগুলো পুনরায় চালু করতে হবে। উপকূল এক্সপ্রেস-এর বর্তমান সময়সূচি পরিবর্তন করে আগের সময়সূচিতে নিতে হবে। উপকূল এক্সপ্রেসের ট্রেন সংখ্যা বৃদ্ধি করতে হবে। যেন একই সময় ঢাকা ও নোয়াখালী থেকে দু’টি ট্রেন ছাড়তে পারে। এমনিভাবে বন্ধ হওয়া স্টেশনগুলো পুনরায় চালু করতে হবে। লাকসাম থেকে নোয়াখালী পর্যন্ত রেললাইনকে ব্রডগেজে রূপান্তর করতে হবে। নোয়াখালী স্টেশন থেকে চেয়ারম্যানঘাট পর্যন্ত (ইছাখালী স্টেশন ও সাহেবঘাটা ইয়ার্ড স্টেশন) পুনঃনির্মাণ করতে হবে। নির্মাণাধীন নোয়াখালী ইপিজেডের সাথে চট্টগ্রামকে যুক্ত করার লক্ষ্যে নোয়াখালী স্টেশন থেকে জোরালগঞ্জ হয়ে চট্টগ্রামের সাথে নতুন রেললাইন নির্মাণ করতে হবে।
‘সচেতন নোয়াখালীবাসী’র আহ্বায়ক মুনীম ফয়সালের সভাপতিত্বে সমাবেশে বক্তব্য রাখেন- নাগরিক অধিকার আন্দোলন নোয়াখালীর সদস্য সচিব জামাল হোসেন বিষাদ, সার্ভিস ফর হিউম্যান বিয়িং অর্গানাইজেশনের সভাপতি ফাহিদা সুলতানা, নোয়াখালী সাইবার ওয়ারিয়র্সের সভাপতি সাইদুর রহমান রায়হান ও আলোকিত মানবিক অর্গানাইজেশনের সভাপতি পারভেজ মোল্লাসহ বিভিন্ন নাগরিক, পেশাজীবী ও সামাজিক সংগঠনের প্রতিনিধিরা।
সমাবেশ শেষে মৌন র্যালি নিয়ে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে জড়ো হয় সমাবেশে অংশগ্রহণকারীরা। পরে নোয়াখালীর জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে রেলমন্ত্রী বরাবর স্মারকলিপি প্রদান করা হয়।
সূত্রঃ নয়াদিগন্ত