শিরোনাম

পঞ্চগড়ে অরক্ষিত রেলক্রসিং গেট, ঝুঁকি নিয়েই পারাপার


।। রেল নিউজ ।।

দেশের সবচেয়ে বেশি দূরত্বের রেলপথ পঞ্চগড় । ঢাকা-পঞ্চগড় রুটে প্রতিদিন একতা, দূতযান, পঞ্চগড় এক্সপ্রেস ও দোলনচাঁপা, বাংলাবান্ধাসহ ৫টি আন্তঃনগর ট্রেন চলাচল করছে।

স্বাধীনতার ৪০ বছর পর এ জেলার মানুষের দাবির মুখে বর্তমান সরকার আধুনিক রেল ব্যবস্থার আওতায় পঞ্চগড় জেলাকে অন্তর্ভুক্ত করেছে। কিন্তু অধিকাংশ রেল স্টেশনের অবকাঠামোগত উন্নয়ন না করা, লোকবলের অভাব, পানি বিদ্যুৎ নিরাপত্তাসহ রেলক্রসিংগুলো উন্নয়ন কিংবা রেলক্রসিং সমস্যার কোনও উদ্যোগ নেয়া হয়নি। ফলে প্রায় সময় দুর্ঘটনার শিকার হতে হচ্ছে মানুষের। জীবন হারাচ্ছেন অনেকেই ট্রেনে কাটা পড়ে।

দেশের দীর্ঘতম রেলপথ পঞ্চগড় থেকে ঢাকার দূরত্ব ৬৩৯ কিলোমিটার। ১৯৬৮ সালের উত্তরের জেলা পঞ্চগড়ের সাধারণ মানুষের যাতায়াত সুলভ করার জন্য রেল যোগাযোগ ব্যবস্থা চালু করা হয়। সম্প্রতি রেলপথটির আধুনিক মানের উত্তরণ ঘটে। পঞ্চগড়-ঢাকা, পঞ্চগড়-রাজশাহী ও পঞ্চগড়-সান্তাহার রুটে পাঁচ জোড়া আন্তঃনগর ট্রেনে এখন যাত্রীরা স্বচ্ছন্দে গন্তব্যে পৌঁছাছেন। পঞ্চগড় জেলা রেলপথ রয়েছে মোট ১৭ কিলোমিটার ৷ স্টেশন রয়েছে তিনটি। রেল পথের রেল ক্রসিং গেট রয়েছে ৯টি। তবে ৯টি রেলক্রসিং গেটের মধ্যে ৮টি গেটেই নেই গেটম্যান। ফলে অরক্ষিত অবস্থায় রয়েছে ৮টি রেলক্রসিং গেট। ফলে চরম বিপাকে পড়েছেন রেলক্রসিং পারাপার হওয়া স্থানীয় মানুষরা।

সরেজমিনে দেখা যায়, সাধারণ মানুষের যাতায়াতের একটি গুরুত্বপূর্ণ সড়ক ঝলইহাট-আমলারহার সড়ক। এই সড়কটি ব্যবহার করে প্রতিদিনই চলাচল করছে শত শত সাইকেল, মোটরসাইকেল, ইজিবাইক, ভ্যানসহ বিভিন্ন যানবাহন। সড়কটিতে চলাচল করতে আরোহীদের অতিক্রম করতে হয় একটি রেলক্রসিং গেট। কিন্তু গেটে কোনও গেট ম্যান না থাকায় জীবনের ঝুঁকি নিয়ে পারাপার হচ্ছে তারা।

একই চিত্র দেখা যায় সদর উপজেলার মাগুরা ইউনিয়নের নয়নীবুরুজ রেল স্টেশন সংলগ্ন এলাকায়। স্টেশন সংলগ্ন এলাকায় রেলক্রসিং গেট থাকলেও সেখানে নেই কোনও গেটম্যান। ফলে প্রায় সময় এই গেটে ঘটে দুর্ঘটনা। গত ২০১৯ সালে রেলক্রসিংয়ের গেট পার হওয়ার সময় একই সময়ে ট্রেনের ধাক্কায় মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের এক প্রধান শিক্ষকসহ দুজনের মৃত্যু হয়েছে।

স্থানীয়দের অভিযোগ, ক্রসিং গেটের আশপাশে বাড়িসহ নানা স্থাপনা থাকার কারণে অনেক সময় ট্রেন এলেও বুঝতে পারেন না পথচারীরা। এতে যেকোনো সময় দুর্ঘটনা পড়ার আশঙ্কায় থাকেন তারা। দ্রুতই গেটগুলোতে গেটম্যান নিয়োগ করা না গেলে যেকোনো সময় ঘটতে পারে বড় ধরনের দুর্ঘটনা।

এ বিষয়ে কথা হয় নয়নীবুরুজ এলাকার বাসিন্দা নাসির উদ্দিনের সঙ্গে। তিনি বলেন,আমাদের প্রতিদিন রেলক্রসিং গেটের ওপর দিয়ে পার হয়ে যাতায়াত করতে হয়। প্রতিদিন কয়েক শতাধিক পথচারী যাতায়াত করেন। এই গেট পার হওয়ার সময় মানুষের মৃত্যুও হয়েছে, তারপরও গেটম্যান নিয়োগ দেয়া হয়নি। অনেক সময় আমরাই গেটম্যানের দায়িত্ব পালন করি। কিছুদিন আগে একটি বরযাত্রীবাহী মাইক্রোবাস অল্পের জন্য রক্ষা পায়।

একই কথা বলেন টেংগনমারী রেলগেট এলাকার পথচারী রফিকুল ইসলাম। তিনি বলেন, গেটম্যান ও সিগনালের ব্যবস্থা না থাকায় ট্রেন কখন আসে পথচারীরা আমরা বুঝতেই পারি না, ফলে প্রায় সময় দুর্ঘটনার শিকার হতে হয়।

সাইফুল ইসলাম শান্তি নামে আরক পথচারীর বলেন, মানুষের জীবনের নিরাপত্তা ও চলাচল সহজ করতে দ্রুত রেলক্রসিং গেটে গেটম্যান নিয়োগ দেয়ার দাবী জানাই। বিভিন্ন সময় আমরা স্থানীয়রা রেল ক্রসিং গেটে গেটম্যান নিয়োগের দাবী জানালেও এতে কোনও উদ্যোগ নেয়নি রেল বিভাগ।

এ বিষয়ে রেলওয়ে লালমনিরহাট বিভাগের ব্যবস্থাপক শাহ সুফী নুর মোহাম্মদ বলেন, জনবলের অভাবে প্রতিটি রেলক্রসিংয়ের গেটম্যান দেয়া সম্ভব হচ্ছে না। আমরা গেটম্যান বিহীন রেলক্রসিংগুলোকে নিরাপদ করতে রেলপথের পাশে থাকা অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করে সতর্কতামূলক নোটিশ টানিয়ে দেয়া হয়েছে। সমস্যাটি দ্রুত সমাধান হবে বলে জানান তিনি।

সূত্রঃ চ্যানেল২৪


1 Trackbacks & Pingbacks

  1. max muay thai ticket

Comments are closed.