রেলওয়ে সূত্র জানায়, পূর্ব ও পশ্চিমাঞ্চলে ৪৫ জোড়া আন্তনগর ট্রেন চলে। এর মধ্যে ঢাকা-চট্টগ্রাম রেলপথে চলাচল করা আন্তনগর সুবর্ণ এক্সপ্রেস ও সোনার বাংলা বিরতিহীন ট্রেন। ‘ফরওয়ার্ডিং টিকিট’ পদ্ধতি এই দুটি ট্রেনের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হবে না। বাকি ৪৩ জোড়া ট্রেনে মাঝপথের যাত্রীরা ‘ফরওয়ার্ডিং টিকিট’ পদ্ধতির সুবিধা পাবেন। এ ছাড়া ঢাকা-কলকাতা রেলপথের মৈত্রী এক্সপ্রেসের যাত্রীরা ‘ফরওয়ার্ডিং টিকিট’ সুবিধা পাবেন না।
টিকিট বিক্রির নতুন এই পদ্ধতির কারণে যাত্রীসেবার মান আরও বাড়বে বলে মনে করেন রেলওয়ের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (অপারেশন) মো. হাবিবুর রহমান।
রেলওয়ের কর্মকর্তারা বলেন, প্রারম্ভিক স্টেশন থেকে নির্ধারিত গন্তব্যে পৌঁছা পর্যন্ত মাঝপথে বিভিন্ন স্টেশনের জন্য টিকিটের কোটা সংরক্ষণ করা থাকে। এই কোটা পূরণ হয়ে গেলে যাত্রীরা ট্রেনে বসে যাওয়ার টিকিট আর পান না। কিন্তু অনেক ক্ষেত্রে দেখা যায়, প্রারম্ভিক স্টেশন থেকে সরাসরি শেষ গন্তব্য (যেমন ঢাকা-চট্টগ্রাম) কিছু টিকিট অবিক্রীত থেকে যায়। আবার মধ্যবর্তী এক স্টেশন থেকে আরেক স্টেশন পর্যন্তও (যেমন ভৈরব থেকে ফেনী বা কুমিল্লা) কিছু টিকিট অবিক্রীত থাকে। কোটার বিন্যাসের কারণে বিভিন্ন স্টেশনের জন্য বরাদ্দ করা টিকিট বিক্রি না হলে তা ফাঁকা পড়ে থাকত। এক স্টেশনের কোটার কিছু টিকিট বিক্রি না হলেও অন্য স্টেশনের কোটায় এসব টিকিট যুক্ত করা যেত না। এখন ফরওয়ার্ডিং টিকিট চালু হওয়ায় ট্রেন ছাড়ার পর এক স্টেশনের কোটার টিকিট আসন ফাঁকা থাকলে অন্য স্টেশনের যাত্রীরা পাবেন। এর নাম দেওয়া হয়েছে ‘স্পেয়ার কোটা’।
উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, ঢাকা-চট্টগ্রাম রুটে চলাচল করা আন্তনগর ট্রেন মহানগর প্রভাতী এক্সপ্রেস প্রতিদিন সকালে ঢাকার কমলাপুর স্টেশন থেকে যাত্রা শুরু করে। ট্রেনটি ভৈরব, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, কুমিল্লা, লাকসাম ও ফেনী স্টেশনে যাত্রাবিরতি করে। ট্রেনটির আসন খালি (সরাসরি ঢাকা-চট্টগ্রামের টিকিট) থাকলেও মধ্যবর্তী স্টেশনের যাত্রীরা ওই ফাঁকা আসনের বিপরীতে টিকিট কেনার সুযোগ পান না। এর কারণ নির্ধারিত কোটার (দাঁড়ানোর টিকিট ছাড়া) বাইরে কোনো স্টেশন অতিরিক্ত টিকিট বিক্রি করতে পারত না। নতুন নিয়মে ট্রেনটি কমলাপুর থেকে যাত্রার এক মিনিটের মধ্যেই মধ্যবর্তী স্টেশনগুলোর জন্য ফাঁকা আসনের টিকিট উন্মুক্ত হয়ে যাবে। প্রথমে ফাঁকা আসনগুলোর তথ্য ভৈরব স্টেশনে টিকিট কাউন্টারে অনলাইনের মাধ্যমে যুক্ত হবে। এভাবে একে একে স্বয়ংক্রিয়ভাবে ফাঁকা আসনের তথ্য অন্য স্টেশনগুলোতে চলে যাবে।
রেলওয়ের কর্মকর্তারা বলেন, ফরওয়ার্ডিং টিকিট পদ্ধতির কারণে আসন খালি থাকা সাপেক্ষে কোনো যাত্রী যদি টিকিট (স্পেয়ার কোটার) পান তাহলে তাঁকে এক বা দুই স্টেশনের বাড়তি বাড়া দিতে হবে। যেমন কোনো যাত্রী প্রভাতী ট্রেনে ভৈরব থেকে কুমিল্লা যেতে চান। কিন্তু ভৈরব স্টেশনে কুমিল্লার জন্য বরাদ্দকৃত সব টিকিট বিক্রি হয়ে গেছে। তখন ফরওয়ার্ডিং টিকিটের মাধ্যমে আসন ফাঁকা পেলে ওই যাত্রীকে কুমিল্লার পরবর্তী স্টেশন লাকসাম বা ফেনীর টিকিট কাটতে হবে। কখনো কখনো চট্টগ্রামের টিকিটও কাটতে হতে পারে।
এ বিষয়ে রেলপথ মন্ত্রণালয়ের সচিব ফিরোজ সালাহ উদ্দিন মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, ফরওয়ার্ডিং টিকিট পদ্ধতির কারণে রেলের আয় ও যাত্রীসেবা দুটোই বাড়বে।
সুত্র:প্রথম আলো, ০৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৭
Be the first to comment on "‘ফরওয়ার্ডিং টিকিট’ পদ্ধতি চালু"