বেনাপোল-যশোর-খুলনা কমিউটার ট্রেনে নিয়মনীতি উপেক্ষা করে চলছে যাতায়াত ব্যবস্থা। সে সঙ্গে টিটিরা দু’হাত ভরে অর্জন করছে সরকারকে ফাঁকি দিয়ে অবৈধ টাকা। যাত্রীদের টাকা দেদার ঢুকছে চেকার পকেটে। এ রেলওয়ে পথে এসব দেখার কেউ নেই। যার যার ইচ্ছামতো সে সে কাজ করে যাচ্ছে তাদের নিজেদের আখের গোছাতে। বেনাপোল থেকে যশোরে ভাড়া ২০ টাকা ও খুলনার ভাড়া ৪৫ টাকা। বেনাপোল থেকে ছেড়ে যাওয়া কমিউটার ট্রেনে দেখা গেছে শতকরা ৪০ ভাগ লোক ট্রেনে টিকিট না কেটে ওঠে। এরা অর্ধেক পয়সায় গন্তব্য পৌঁছে যায় আবার অনেকে ফাঁকি দিয়ে যায় বিভিন্ন ছলচাতুরির মধ্যে দিয়ে। আসার সময়ও একই অবস্থা। খুলনা থেকে ২০ টাকা ও যশোর থেকে ১০ টাকায় চলে আসা হচ্ছে নগদ দিয়ে। আর সে কারণে অনেকে টিকিট কাটতে চায় না। এ ট্রেনে সাধারণ যাত্রীদের চেয়ে মহিলা চোরাচালানিরা উঠে থাকে বেশি। তারা টিকিট কেটে পা তুলে সিটে বসে থাকে। অথচ টিকিট কাটা অনেককে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায়। ট্রেনের বিভিন্ন জায়গা ছিদ্র করে তারা চোরাই মালামাল নিয়ে যায়। ট্রেনের মধ্যে রেলওয়ে পুলিশ (জিআরপি) থাকলেও তারা একটি বগিতে সিট নিয়ে ঘুমাতে ঘুমাতে এলেও যাওয়ার সময় চোরাচালানিদের কাছ থেকে অর্থ আদায় করে থাকে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বেনাপোল থেকে সকাল ১০.১৫টার সময় এবং দুপুর ২টার সময় দুটো ট্রেন যশোর ও খুলনা রুটে চলাচল করে। ট্রেনের চেকাররা প্রতিটি বগিতে গিয়ে টিকিট চেকের সময় টিকিটবিহীন যাত্রীদের কাছে থেকে নগদ টাকা নিয়ে নিচ্ছে বিনা রশিদে। তাদের হাতে কোনো টিকিট বা রশিদ দেয়া হয় না। তাদের টিকিট না কেটে ওঠার অপরাধে কোনো জরিমানাও করছে না। আর এ সুযোগে বেশিরভাগ যাত্রী অর্ধেক টাকা দিয়ে তাদের গন্তব্য পৌঁছে যাচ্ছে। ফলে যাত্রীদের অর্থ সাশ্রয় হচ্ছে আর অপরদিকে লাভবান হচ্ছে ট্রেনের চেকাররা। এ দৃশ্য প্রতিদিনের যাওয়া আসায় চোখে পড়বে সবার। রাষ্ট্রীয় কোষাগারে ঠিকমতো অর্থ জমা না হওয়ায় বাংলাদেশ রেলওয়ে আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে।
এ ব্যাপারে বেনাপোল স্টেশন মাস্টার আজিজুর রহমানের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এরা অনেক টাকা ঘুষ দিয়ে চাকরি নিয়েছে, বদলি (একজনের পরিবর্তে আরেকজন) নিয়েছে যার কারণে এসব করতে তারা বাধ্য হচ্ছে। আইন আছে টিকিট না কাটলে তাদের জরিমানা করে অর্থদণ্ড দেয়া। কিন্তু বাংলাদেশ এর ব্যতিক্রম। এরকম কিছু দেখা যায় না। তাহলে আপনারা ব্যবস্থা নিচ্ছে না কেন এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন টিটিরা আমাদের কাছে রিপোর্টটেবল না। তাদের ইন্সপেক্টর আছে তাদের কাছে এরা জবাবদিহিতা করে। বেনাপোল রেলস্টেশনের একটি সূত্র জানায়, যাত্রীদের টিকিট না কাটার ব্যাপারে টিটিরা উৎসাহিত করে। যাত্রীদের বলে ট্রেনে যান ওখান থেকে টিকিটের টাকা নেয়া হবে। এভাবে দেশের সম্পদ রেলওয়ে প্রতিষ্ঠানকে অসাধু কর্মকর্তা ।
সুত্র : যুগান্তর,১৮ ডিসেম্বর ২০১৬
Be the first to comment on "যাত্রীদের টাকা যাচ্ছে টিটিদের পকেটে"